এই ব্রিটিশ রাজকন্যা কি আসলেই অ্যাক্সিডেন্টে মারা গেছেন? || Was Princess Diana's Death an Accident?

Author
0

 


১৯৯৭ সালের ৩০ আগস্ট। বিখ্যাত দুজন ব্যক্তির পা পড়ে প্যারিসে। স্বাভাবিকভাবেই পাপারাজ্জিরা উঠেপড়ে লাগে তাদের পেছনে। তারা দিনভর বিভিন্ন উপায়ে চেষ্টা করেন তাদের পিছু ছাড়ানোর। পরদিন ৩১ আগস্ট ডিনার শেষে রাত ১২ টা ২০ মিনিটে রিটজ হোটেলের পেছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যান তারা। একটি কালো মার্সেডিস অপেক্ষা করছিল তাদের জন্য। পাপারাজ্জিদের পিছু ছাড়ানোর জন্য গাড়িটি প্রচণ্ড বেগে চালাতে শুরু করেন ড্রাইভার। তখনই ঘটে যায় এক অনাকাঙ্খিত ঘটনা। একটি টানেলের মধ্যে কংক্রিট পিলারের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় গাড়িটির। দুমড়ে-মুচড়ে যায় মার্সেডিসটি। ঘটনাস্থলেই মারা যায় সেই দুই বিখ্যাত ব্যক্তি। তারা আর কেউ নন, প্রিন্সেস ডায়ানা (Princess Diana) ও তার সেসময়কার প্রেমিক দোদি ফায়েদ। প্রিন্স চার্লসের সাথে ডিভোর্সের পরের বছরেই প্যারিসের রাস্তায় এরকম একটি অ্যাক্সিডেন্ট! এটি কি আসলেই দুর্ঘটনাই ছিল, নাকি এর পেছনে লুকিয়ে ছিল কোনো গভীর ষড়যন্ত্র?


পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন



সৌন্দর্য আর ফ্যাশনে অদ্বিতীয় এক নাম ছিলেন প্রিন্সেস ডায়ানা। ছিলেন লন্ডনের রাজ পরিবারের পুত্রবধূ। ডায়ানার বিয়ে হয়েছিলো ১৯৮১ সালের ২৯ জুলাই। সম্ভবত বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে আলোচিত বিবাহ অনুষ্ঠান ছিলো প্রিন্স চার্লস ও লেডি ডায়ানার বিয়ের অনুষ্ঠানটি। বিবাহের মাধ্যমে প্রিন্স ও প্রিন্সেস অব ওয়েলস পদে ভূষিত হন এই দম্পতি।

ডায়ানার পিতামহী ছিলেন রাণী এলিজাবেথের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী।সে সময় থেকেই হয়তো তাকে রাজপরিবারের বধূ করার পরিকল্পনা ছিলো রাণীর।সম্ভবত, সে কারণেই ১৯৭৫ সালে স্পেন্সার পরিবারকে আর্ল অব স্পেন্সার পদবিতে ভূষিত করা হয় এবং ১৯৮১ সালে ডায়ানাকে পরিবারের বধূ হিসেবে বরণ করে নেওয়া হয়।

মাত্র ২০ বছর বয়সে রাজপরিবারের বধূ হয়ে অভিজাত পরিবারের নিয়মকানুন শিখে নেন তিনি। সৌন্দর্য, স্টাইল ও মধুর স্বভাবের জন্যই শুধু নয়, বিশ্বমানবতার জন্য কাজ করেও তিনি জায়গা করে নেন পুরো পৃথিবীর মানুষের মনে। অসহায় মানুষের কল্যাণে বিশ্বের নানা প্রান্তে ছুটেছেন। ডায়ানা মানুষকে ভালোবাসতেন। সাধারণের সঙ্গে মিশতে পছন্দ করতেন। মানুষও তাঁকে ভালোবাসার প্রতিদান দিয়েছিল। তাই তো তিনি হয়ে উঠেছিলেন ‘জনমানুষের রাজকন্যা’।



এই রাজকীয় দম্পতির প্রথম সন্তান প্রিন্স উইলিয়াম জন্ম নেন ১৯৮২ সালের ২১ জুন, এর দুই বছর পর জন্ম নেন প্রিন্স হ্যারি, ১৯৮৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর। দুই সন্তানের মমতাময়ী মায়ের ভূমিকা নিয়ে নেন তরুণী ডায়ানা, চেষ্টা করেন সুখী একটি পরিবার গড়ে তুলতে। কিন্তু এই রাজকীয় বিয়ে ভেঙ্গে যায় ১৫ বছরের মাথায়, ১৯৯৬ সালে।

এরপর তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে মিশরীয় শিল্পপতি মোহাম্মদ আল ফায়েদের ছেলে দোদি আল ফায়েদের সাথে। তবে ১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট তার মৃত্যুতেও হতভম্ব হয়ে যায় বিশ্ববাসী। দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরে হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ডায়ানা। গাড়ির চালক ও দোদি ঘটনাস্থলেই মারা যান। তবে পোস্ট মর্টেম রিপোর্টে গাড়ির চালকের পেটে অস্বাভাবিক পরিমাণ অ্যালকোহল পাওয়া যায়।



তবে ডায়ানার মৃত্যুকে দুর্ঘটনা হিসেবে মেনে নেননি অনেকেই। এই ইস্যুতে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন অ্যাজাম্পশন ও কন্সপিরেসি থিওরি। মারসিডিস গাড়িটি কেন পরীক্ষা করা হয়নি? কেন হাসপাতালে নিতে ৭৫ মিনিট লেগেছিলো? যেখানে ঘটনাস্থল থেকে সেই হাসপাতালে নিতে সময় লাগে মাত্র ১১ মিনিট! এসব প্রশ্নের পাশাপাশি অনেকেরই ধারণা মার্সিডিজ গাড়িটির চালক হেনরি পল আসলে ছিলেন ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআইসিক্সের লোক। এমনকি অনেকের মতে রাজপরিবারের সাবেক বউ ভিন্নধর্মী কাউকে বিয়ে করবেন সেটিও মেনে নিতে পারেনি ব্রিটিশ রাজপরিবার। তাই নিজেদের আভিজাত্য ও সম্মান বাঁচাতেই হয়তো ডায়ানাকে হত্যা করার ছক সাজিয়েছে তারা। এমনকি অনেকে এমনও মনে করেন প্রিন্স ফিলিপের সঙ্গে এই কন্সপিরেসির পার্ট ছিলেন ডায়ানার আপন বোন লেডি সারাহ-ও।

মতামত

0Comments

আপনার মতামত লিখুন (0)

#buttons=(ঠিক আছে!) #days=(20)

এই ওয়েবসাইটি ব্যবহারে আপনার অভিজ্ঞতাকে আরো উন্নত করার জন্য কুকিজ ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু আমরা কখনই আপনার সম্মতি ছাড়া আপনার কোনো ডাটা সংরক্ষণ করব না। আরো জানুন
Ok, Go it!