২০১৩ সালে বিটিএস (BTS) তাদের প্রথম অ্যালবাম রিলিজ করে। ২০১০ সাল থেকে গানের জগতে তাদের যাত্রা শুরু হলেও, এই ব্যান্ড দলটি ওয়ার্ল্ডওয়াইড জনপ্রিয়তা পায় ২০১৭ সালে। বিটিএসের মেম্বাররা অনেকটাই মেয়েদের মতো মেকআপ ও সাজ নিলেও তাদের ভক্তের তালিকায় মেয়েদের সংখ্যাই বেশি। মেকআপ, দাড়ি-গোঁফছাড়া টানটান ফর্সা স্কিন ও লিপস্টিক – তবুও মেয়ে ভক্তরা একেকজন আইডলের নামে পাগলপ্রায়! ইভেন ওয়ার্ল্ডের মোস্ট হ্যান্ডসাম স্টারদের তালিকাতেও সবার উপরে থাকে বিটিএস তারকাদের নাম।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
নরমালি প্রতিটি সেলিব্রেটি-ই তাদের ফ্যানডমের একটি করে নাম
দিয়ে থাকে। যেমন আমেরিকান সিঙ্গার সেলিনা গোমেজের ভক্তদের ডাকা হয় 'সেলেনাটরস', কেটি প্যারির ভক্তদের ডাকা হয় 'কেটিক্যাট', ব্রিটিশ বয়ব্যান্ড ওয়ান ডিরেকশনের
ভক্তদের ডাকা হয় 'ডিরেকশনারস'
নামে। তেমনি বিটিএস তার ভক্তদের নাম দিয়েছে 'আর্মি' (BTS Army)। এই আর্মিকে অনেকে সেনাবাহিনী আর্মির সাথে গুলিয়ে ফেলে। কিন্তু এই
আর্মির ফুল মিনিং হচ্ছে, অ্যাডোরেবল রিপ্রেজেন্টেটিভ এমসি
ফর ইয়ুথ। প্রতি বছর ইয়ারলি রিক্রুটমেন্টও হয় বিটিএস আর্মিতে। নতুন নতুন আর্মিরা
অফিশিয়াল ক্লাব জয়েন করে। ধারণা করা হয়, এখনো পর্যন্ত রেজিস্টার্ড বিটিএস আর্মি
আছে প্রায় ৫০ মিলিয়নেরও বেশি।
এই বিটিএস আর্মিরা যে শুধুই বিটিএস মেম্বারদের নাচ ও গান
নিয়ে লাফালাফি করেই দিন পার করে দেয় তা-ই না। এরা সামাজিক বিভিন্ন ক্যাম্পেইনও করে
বেড়ায়। যেমন, ২০১৮ সালে বিটিএস ও ইউনিসেফ মিলে লাভ মাই সেলফ ক্যাম্পেইনটি শুরু
করে। ক্যাম্পেইনটির মূল উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বজুড়ে শিশুদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ করা। বিটিএস
ও বিটিএস আর্মিরা এই ক্যাম্পেইনের ফান্ডে প্রায় ২.৮ মিলিয়ন ডলার দান করে।
ক্যাম্পেইনটি ২০১৮ সালে ইউনিসেফের বেস্ট ইন্সপিরেশন অ্যাওয়ার্ডও পায়। এছাড়াও ওয়ান
ইন অ্যান আর্মি নামক একটি অর্গানাইজেশন কোরিয়াতে এডুকেশন স্কলারশিপ ও এতিম শিশুদের
নিয়ে কাজ করে থাকে। বিটিএস আর্মি ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার ক্যাম্পেইনেও পার্টিসিপেট
করেছিলো। এই ক্যাম্পেইনে তারা প্রায় আড়াই মিলিয়ন ডলার ডোনেট করেছে। বিটিএস আর্মি
বরাবরই বিভিন্ন সোশ্যাল ইস্যুতে অ্যাকটিভ থাকে।
বাংলাদেশেও বিটিএস ভক্তের সংখ্যাটা নেহায়েত কম না। ভক্তদের এক করতে এবং বিটিএস ব্যান্ড নিয়ে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করতে সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশ কয়েকটি গ্রুপও আছে। গ্রুপগুলোর মধ্যে সিগনিফিকেন্ট কয়েকটি গ্রুপ হচ্ছে বাংলাদেশ বিটিএস আর্মি অফিসিয়াল ফ্যান ক্লাব, বিটিএসে যা যা দেখেছি ও শুনেছি, বোরাহে বিডি আর্মি, বাংলাদেশ বিটিএস আর্মি অফিসিয়াল স্ট্রিমিং অ্যান্ড ভোটিং আপডেট ক্লাব, ওয়েভার্সবিডি। প্রতিটি গ্রুপ এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ভক্তদের মিলিয়ে হিসাব করলে বলা যায়, বাংলাদেশে প্রায় ১ লাখ বিটিএস আর্মি আছে।