১৯৮৮ সালের ২৮ অক্টোবর। এনবিসি চ্যানেলে জেরাল্ডো রিভেরা ‘ডেভিল ওয়ারশিপঃ এক্সপোজিং স্যাটান’স আন্ডারগ্রাউন্ড’ নামে একটি শো করে। সেখানে সে নিজেকেই স্যাটানিজম এক্সপার্ট হিসেবে দাবী করে। মিসলিডিং এবং ভুলে ভরা সব স্ট্যাটিসটিক্স দেখানো হয় সেই শোতে। মিডিয়া রিপোর্টগুলোকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে দেখানো হয় ব্ল্যাক ম্যাজিক ব্যবহার করে করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের অপরাধ। সেই শোয়ের এক জায়গায় সে দাবী করে, এই দেশে প্রায় এক মিলিয়ন স্যাটানিস্ট আছে। এবার ভেবে দেখেন আপনার এলাকায় কয়জন থাকতে পারে? তাঁর এই শোটি ছিল টেলিভিশন হিস্টোরির সবথেকে বেশি ভিউ হওয়ার ডকুমেন্টারি শো। এটি প্রচারের পরে রীতিমত ভয়ের স্রোত বয়ে যায় অ্যামেরিকার বিভিন্ন এলাকাজুড়ে। তাঁর এই দাবীগুলো কি আসলেই সত্যি ছিল? নাকি ছিল নিতান্তই এক কন্সপিরেসি থিওরি? চলুন আরেকটু গভীরে অনুসন্ধান করে দেখা যাক।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
জেরাল্ডো রিভেরার সেই শোয়ের পরে
এইটিজ এবং নাইন্টিজে সম্পূর্ণ অ্যামেরিকা কনভিন্সড হয়ে যায় যে, স্যাটানিস্টদের
বিশাল কোনো আন্ডারগ্রাউন্ড নেটওয়ার্ক একত্র হয়ে কাজ করছে। তারা বাচ্চাদের কিডন্যাপ
করে এবং ধরে নিয়ে গিয়ে টর্চার এবং অ্যাবিউজ করে। সেই সময়ে প্রচুর মানুষের জীবন নষ্ট
হয়ে যায় এই প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর কারণে।
অ্যাবিউজের শিকার হওয়া মানুষজন
রীতিমত ট্রমায় ভুগতে শুরু করে। এতটাই ভয় পেয়ে গিয়েছিলো তারা। হিপনোসিস এবং
থেরাপিস্টদের লাইন লেগে গিয়েছিলো সাহায্য নেওয়ার জন্যে। রিভেরার হাত ধরে ব্যাপারটি
জনপ্রিয় হলেও, শুরুটা হয়েছিল ১৯৮০ সালে। একজন কানাডিয়ান সাইকিয়াট্রিস্ট ‘মিশেল
রিমেম্বারস’ নামে একটি বই লিখেন। যেখানে তিনি তাঁর একজন পেশেন্টের ব্যাপারে
লিখেছেন, যাকে তিনি পরবর্তীতে বিয়ে করেছেন। মিশেল নামক সেই মহিলা ছোটবেলা থেকেই
ট্রমায় ভুগছিলো। তাঁর নিজের মা তাঁর উপরে স্যাটানিক রিচুয়াল করেছিলো।
১৯৮৩ সালে স্যাটানিক প্যানিকটির
রীতিমত বিস্ফোরণ ঘটে ম্যাকমার্টিন প্রিস্কুল ট্রায়ালে। ক্যালিফোর্নিয়ার
ক্যাম্পাসের একটি ডে-কেয়ার মালিকের বিরুদ্ধে একটি ছেলের বাবা-মা সেক্সুয়াল
অ্যাবিউজের অভিযোগ তোলে। পুলিশ সেখানে গিয়ে অন্যান্য বাচ্চাদের থেকে জবানবন্দি
নেওয়ার সময়ে তারা এমন কিছু কথা বলে যা পুলিশদের চোখ কপালে তুলতে বাধ্য করে। বাচ্চারা
জানায় তারা ডে-কেয়ারের পাশে একটি অদ্ভুত টানেল দেখেছে। সেখানে আশেপাশে ডাইনিদের
উড়ে বেড়াতে দেখেছে তারা!