শাহরুখ কিংবা সালমান খানের মতো বিশাল ক্রেজ ও স্টারডম না থাকলেও সাধারণ দর্শকদের কাছে আমির খান সবসময় এক ভরসার নাম। তিনি যখন সিনেমা নিয়ে আসেন, তখন সকলেই নতুন কিছুর দেখার আশায় বুক বাধে। ২০০৯ সালে থ্রি ইডিয়টস দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টির পর পিকে সিনেমার মাধ্যমে আবারও জুটি বেঁধেছিলেন আমির খান ও পরিচালক রাজকুমার হিরানি।
ধর্মকে ব্যবহার করে যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে, সেসব ভণ্ডদের মুখোশ খুলে দেয় এক ভিনগ্রহের প্রাণী। এরকমই এক গল্প তুলে ধরেছেন হিরানি তার মুভিতে। কমেডি, ইমোশন, ড্রামা ও রোমান্সের মিশেলে তৈরি বলিউডের অন্যতম কাল্ট ক্লাসিক সিনেমা “পিকে”-র অজানা কিছু দিকগুলো আজ জেনে নেওয়া যাক।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
‘পিকে’ সিনেমাতে আমির খানকে স্থানীয় অনেক ধরনের পোশাকে দেখা গিয়েছিলো। কিন্তু মজার বিষয় হলো, এই পোশাকগুলো আসলে স্থানীয় বিভিন্ন মানুষদের থেকে ধার করে আনা হয়েছিলো। এবং শ্যুটিং শেষে আবার পোশাকগুলো ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। পুরো সিনেমায় আমির খান মোট নয়টি ভিন্ন চরিত্রে নিজেকে তুলে ধরেছেন। সিনেমা জুড়ে খেয়েছেন প্রায় দশ হাজারের মতো পান। এক ইন্টার্ভিউতে আমির খান জানান, “আমার পান খাওয়ার অভ্যাস নেই। কিন্তু ফিল্মের প্রতি দৃশ্যের জন্যই আমাকে পান চিবোতে হতো। মাঝেমধ্যে দিনে একশ’ পান খাওয়া পড়ত। এজন্য শুটিং সেটে পানওয়ালাও রেখে দেওয়া হয়েছিল”। ঠোঁটে-মুখে পানের আসল রঙ ফুটিয়ে তোলার জন্যই প্রতিদিন শ্যুটিং-এ ১০-১৫ টা পান খাওয়া লাগত তার। এখন আপনার মনে হতে পারে, সিনেমায় পানের কেনো দরকার ছিলো? আসলে “পিকে” নামের ফুলফর্ম হলো, “পানমিয়া কুশল”।
২০১১ সালে, এই সিনেমার স্ক্রিপ্ট যখন লিখা হয়, তখন সিনেমার নাম দেওয়া হয়েছিল “তালি”। কিন্তু পরে তা পরিবর্তন করে রাখা হয় “এক থা তালি”। তবে ২০১২ সালে “এক থা টাইগার” নামে সালমান খানের এক সিনেমা রিলিজ হয়। দুই সিনেমার টাইটেলে অনেকটা মিল থাকার কারণে দ্বিতীয় নামটাও বাদ দিয়ে দেন পরিচালক হিরানি। সবশেষে বেছে নেওয়া হয় ‘পিকে’ নামটি।
পান খাওয়ার পাশাপাশি আমিরকে ভোজপুরি ভাষা নিয়েও অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। দীর্ঘ ২ বছর অক্লান্ত পরিশ্রমের পর ভোজপুরি ভাষা নিজের আয়ত্বে আনেন বলিউডের মিস্টার পারফেকশনিস্ট।
মিষ্টি কন্ঠের গায়িকা “মোনালি ঠাকুরের গানের প্রেমে পড়েননি এমন মানুষ খুব কম আছে। তবে আপনি কি জানেন, পিকে সিনেমার এক দৃশ্যে মোনালি ঠাকুরকেও দেখা গিয়েছিলো। সিনেমায় একজন মুসলিম মেয়েকে স্কুলের স্টুডেন্টদের সাথে কথা বলতে দেখা যায়। ওই মুসলিম মেয়ে চরিত্রেই অল্প সময়ের জন্য মোনালিকে পর্দায় দেখা যায়। পিকে সিনেমায় আমির খানের পাশাপাশি আরো একজন নায়ক অভিনয় করেছিলেন। তিনি হলেন প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত। তিনি এই সিনেমায় ‘সরফরাজ’ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। কিন্তু পুরো সিনেমায় পিকে আর সরফরাজের একবারের জন্যও দেখা হয়নি।
পিকে সিনেমার গল্প লেখার সময় রাইটার এমন এক চরিত্র এখানে রাখার চিন্তা করেন, যে কিনা মানুষের মাইন্ডরীড করতে পারবে। সাথে সাথে সেই মানুষটাকে বদলে দিতে পারবে ভালো মানুষে। ২০১০ সালে ক্রিস্টোফার নোলানের সিনেমা “ইনসেপশন” রিলিজ হলে দেখা যায় কাকতালীয়ভাবে তাদের চিন্তা করা গল্পের সাথে এটা অনেকাংশে মিলে গেছে। পরবর্তিতে রাজকুমার হিরানী গল্পটাকে পুরোপুরি চেঞ্জ করে ফেলেন। নিয়ে আসেন এক ভিন্ন গল্প।