শাহরুখ খান (Shah Rukh Khan), বলা হয় দুনিয়ার সবথেকে জনপ্রিয় ফিল্মস্টার তিনি। তিন দশকের ক্যারিয়ারে অভিনয় করেছেন প্রচুর সুপারহিট সিনেমায়। তবে প্রস্তাব পেয়েও ফিরিয়ে দিয়েছেন অনেক সিনেমার কাজ, যেগুলো পরবর্তীতে হয়েছে সুপারহিট। চলুন দেখে নেওয়া যাক কোন কোন সিনেমা ছেড়ে দিয়েছিলেন কিং খান।
লাগান
শাহরুখ খানের প্রতি
আমির খানের চিরকৃতজ্ঞ থাকা উচিত! শাহরুখ যদি এ ছবির প্রস্তাব ফিরিয়ে না দিতেন, তাহলে আমিরের
ক্যারিয়ারে একটি বিশাল অর্জন মিস হয়ে যেত! শাহরুখ পিছিয়ে যাওয়ায় ভুবন চরিত্রের
জন্য যুতসই অভিনেতা পেতে হিমশিম খাচ্ছিলেন পরিচালক আশুতোষ গোয়াড়িকর। শাহরুখই
পরামর্শ দেন আমিরকে নিতে। আমিরকে আশুতোষ নিয়েও নেন, কিন্তু
প্রডিউসার খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না কোনোভাবেই। শেষমেষ আমির নিজেই সেই দায়িত্ব নেন।
ক্রিকেট ও বিনোদনের মিশেলে বানানো ছবিটি দেখতে দর্শকরা হলে হুমড়ি খেয়ে পড়তে থাকে।
অস্কারে বেস্ট ফরেইন ফিল্ম ক্যাটাগরিতে নমিনেশন পাওয়া মাত্র তৃতীয় ভারতীয় সিনেমা
এই ‘লাগান’।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
রাঙ দে বাসান্তী
আমির খানকে ‘লাগান’
ছেড়ে দেওয়ার ছয় বছর পর রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরার ‘রাঙ দে বাসান্তী’ ফিরিয়ে দিয়ে আবারও
একই ভুল করে বসেন শাহরুখ খান। সুযোগটি পেয়ে হাতছাড়া করেননি আমির। ছবিটি
বাফটা অ্যাওয়ার্ডেও মনোনয়ন পায়। এছাড়াও জিতে নেয় ফিল্মফেয়ার ও ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডও। এমন
ছবিতে
কাজ করার সুযোগ হারিয়ে নিশ্চয়ই আফসোস করেন শাহরুখ!
থ্রি ইডিয়টস
‘লাগান’ এবং ‘রঙ দে বাসন্তী’র পর ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর মাধ্যমে তৃতীয়বারের মতো প্রমাণিত হয়েছে, শাহরুখ খানের মিস মানেই আমির খানের লাভ! প্রডিউসার বিধু বিনোদ চোপড়া পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, এই সিনেমার জন্য প্রথম পছন্দ ছিলেন শাহরুখ। কিন্তু হাতে সময় না থাকায় আবারও আমিরের দিকে ঠেলে দিয়েছেন তিনি। মুক্তির পরে প্রায় ৪০০ কোটির ব্যবসা করে ব্লকবাস্টার হিট হয় সিনেমাটি। রাতারাতি পরিণত হয় কাল্ট ক্লাসিকে। আজও বলিউডের ইতিহাসের অন্যতম সেরা সিনেমা বিবেচনা করা হয় থ্রি ইডিয়টসকে। তবে আমার মতে লাগান, রাঙ্গ দে বাসান্তী কিংবা থ্রি ইডিয়টসে শাহরুখ অভিনয় করলেও আমির খানের মতো এতো চমৎকার করে ক্যারেক্টারকে মেলে ধরতে পারতেন না।
মুন্নাভাই এমবিবিএস
পরপর ফ্লপ ছবি। ডুবে
যেতে বসেছিল সঞ্জয় দত্তের ক্যারিয়ার। ‘মুন্নাভাই’ হয়ে ফিরে আসেন তিনি। বক্স অফিসে
ঝড় তোলেন দীর্ঘদিন পর। অথচ আসলে তার জন্য রাখা হয়েছিল জিমি শেরগিল অভিনীত
চরিত্রটি। ‘মুন্নাভাই’ হিসেবে নির্মাতারা চেয়েছিলেন শাহরুখকে। তিনি রাজি না হওয়ায়
সঞ্জয়ের ঝুলিতে গিয়ে পড়ে তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই চরিত্রটি।
এক থা টাইগার
সালমান খান নয়, ‘টাইগার’
হিসেবে পরিচালক কবীর খানের প্রথম পছন্দ ছিলেন শাহরুখ। চিত্রনাট্য পছন্দ হলেও ২০১২
সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন কিং খান।
কারণ তখন যশ চোপড়ার ‘যাব তাক হ্যা জান’ ছবির শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। পরিবর্তে
আসেন সালমান। বক্স অফিসে তিনশো কোটিরও বেশি ব্যবসা করেছিল এই ছবি। পরবর্তীতে বের
হওয়া সিক্যুয়েল ব্যবসা করে প্রায় পাঁচশো কোটিরও বেশি।
যোধা আকবর
স্বদেশের পরে এই
ছবিতেও শাহরুখকেই লিড রোলে চেয়েছিলেন আশুতোষ গোয়ারিকর। তখন অন্য একটি ছবির কাজে
ব্যস্ত ছিলেন বাদশা। এরপরেই আবার যান পরিবার নিয়ে বিদেশ ভ্রমণে। তাই
শেষমেশ আর পর্দার আকবর হতে পারেননি শাহরুখ। পরিবর্তে হৃতিককে বেঁছে নেন পরিচালক। ১২০ কোটির
ব্যবসা করে সিনেমাটি।
কাহো না পেয়ার হ্যা
আমির খানের মতো হৃতিক
রোশানও শাহরুখ খানকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাতে পারেন ‘কহো না পেয়ার হ্যায়’ ফিরিয়ে
দেওয়ার কারণে। ছবিটির চিত্রনাট্য নিয়ে পরিচালক রাকেশ রোশান প্রস্তাব দিয়েছিলেন
শাহরুখকে। কিন্তু তার পছন্দ হয়নি। এরপর নিয়ে নেন নিজের ছেলে হৃতিককেই। বাকিটা
ইতিহাস। হৃতিক হয়ে যান বলিউডের নতুন হার্টথ্রব। তিনিই একমাত্র অভিনেতা যিনি প্রথম
ছবির সুবাদে ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডে সেরা নবাগত ও সেরা অভিনেতা দুটি পুরস্কারেই
জিতেছেন। বলিউডের ছবির মাধ্যমে রেকর্ডসংখ্যক পুরস্কার জেতায় ‘কহো না পেয়ার হ্যায়’
জায়গা করে নেয় লিমকা বুক অব রেকর্ডসে।