মাছ এতো অদ্ভুত হয় কিভাবে? মাথা নষ্ট অবস্থা || Most Unique Fish In The Ocean

Author
0



বলেন তো, এই পৃথিবীর কোন অংশটি আধুনিক যুগে এসেও সবথেকে রহস্যজনক? ইটস দি ওয়াটার। আরো ক্লিয়ারলি বললে সমুদ্র। সমুদ্রের মাত্র ৫% জায়গা মানুষ এক্সপ্লোর করতে পেরেছে, ভাবা যায়! সমুদ্রের মাছ বলতে আমরা কি কি চিনি? কোরাল ফিশ, টুনা ফিশ, রেড স্ল্যাপার, স্যামন তাই তো? কিন্তু সমুদ্রের নীচে এমন অদ্ভুত অদ্ভুত সব মাছের বসবাস, যেগুলো সম্পর্কে জানলে আপনার মাথা ঘুরে যাবে!

নাম্বার সেভেন - ব্লোব ফিশ

খুব সহজ ভাবে বলতে গেলে এটি দেখতে অনেকটা পুডিং এর মতো। এর উদ্ভট গঠন এর কারনে এটি সবার নজরে আসে। পাখনা দিয়ে ভর করে চলা এই মাছটি বিশ্বের সবথেকে অদ্ভুত দর্শন প্রাণীগুলোর মধ্যে একটি। এরা সমুদ্রের একদম তলদেশে থাকে, যেখানে পানির প্রেশার থাকে প্রচণ্ড পরিমাণে বেশি। তাই এই মাছের স্কিনের ঘনত্ব এমন হয় যেন সে পানির এই ট্রিমেন্ডাস প্রেশার সহ্য করে টিকে থাকতে পারে। এদের বেঁচে থাকার জন্য পানির সাথে যুদ্ধ করতে হয় না। শুধুমাত্র খাওয়ার সময় হলে মুখটা হাঁ করে ভেসে থাকলেই হয়। ভাসমান জলজ খাদ্য আপনাআপনি তার মুখে চলে আসে। এই কারণে একে সমুদ্রের অলস মাছও বলা হয়।


পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন



নাম্বার সিক্স - হ্যাচেটফিশ

বিজ্ঞানীরা হ্যাচেটফিশ নামক এই ভয়ঙ্কর মাছটি খুজে পায় সমুদ্রের অত্যন্ত গভীরে। দেখতে বিষণ্ণ এই মাছটির নাম দেওয়া হয়েছে এর পাতলা গঠনের কারণে। দেখতে অনেকটা কুঠারের মত এবং গায়ের রঙে জ্বলজ্বলে রুপালি একটা ভাব আছে। দেখতে খুবই ভয়ানক হলেও এরা অনেকটাই নিরীহ।

নাম্বার ফাইভ – ফ্যাংটুথ

দেখতে মনে হয় প্রচণ্ড খ্যাপা একটি মাছ। এই বুঝি তেড়ে আসলো। দেখতে অত্যন্ত ভয়ানক হলেও, ফ্যাংটুথের দৃষ্টিশক্তি খুবই দুর্বল। এদের দাতগুলোও দেখতে ডেঞ্জারাস। সমুদ্রের মাছগুলোর মধ্যে সবথেকে বড় দাঁতের রেকর্ড এদেরই দখলে। ফ্যাংটুথের বিচরণ সমুদ্রের প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার ফুট নিচে।

নাম্বার ফোর - ফ্রিল্ড শার্ক

ভয়ংকর এ প্রাণীটির বসবাস সাগরের টোয়াইলাইট জোনে। সাগরের মাঝের স্তরকে বলা হয় টোয়াইলাইট জোন। সমুদ্রপৃষ্ঠের ৬শ থেকে ৩৩শ ফুট পর্যন্ত এ অংশে খুবই কম সূর্যের আলো পৌঁছাতে পারে। ফ্রিল্ড সার্কের দেহ কিছুটা বাইম মাছের মতো। এরা পৃথিবীতে এখনও পর্যন্ত টিকে থাকা সবচেয়ে প্রাচীন হাঙর প্রজাতিগুলোর একটি। ধারণা করা হয় ডায়নোসরদের আমল থেকে আর্কটিকের গভীরে এরা রাজত্ব করে আসছে। এদের চোয়ালে দাঁতের সংখ্যা প্রায় তিনশ।

উত্তর রাশিয়ার রোমান ফেডোর্টসভ আর্কটিক মহাসাগরের দক্ষিণে অবস্থিত ব্যারেন্টস সাগরে মাছ ধরার সময় জালে ধরা পড়ে এই অদ্ভুত মাছটি।

নাম্বার থ্রি – দ্য গবলিন শার্ক

বিজ্ঞানীরা একে বলে জীবন্ত জীবাশ্ম। গভীর সমুদ্রের এক রহস্য এই মাছ। ১২৫ মিলিয়ন বছর ধরে সমুদ্রে টিকে আছে এরা। দেখতে বিশ্রী হওয়ার কারণে একে অনেকে সমুদ্রের অপদেবতাও বলে। এরা কিছুটা অলস প্রকৃতির হলেও খুবই হিংস্র। যেমনটা আমরা হাঙ্গর থেকে এক্সপেক্ট করি আরকি। গবলিন শার্ক খুবই রেয়ার। জাপানে একবার একটি পাওয়া গিয়েছিল, তারা ধরে সেটিকে মিউজিয়ামে রেখে দেয়। কিন্তু আনফর্চুনেটলি সেটি কিছুদিন পরেই মারা যায়।

নাম্বার টু – দি অ্যাংলার ফিশ

চেহারা-সুরতের দিক থেকে অ্যাংলার ফিশের থেকে অদ্ভুত কোন মাছ সম্ভবত আরেকটি নেই। এরা কূটবুদ্ধির জন্যেও বিখ্যাত। শিকারিদের বিভিন্ন রকমের ফাঁদে ফেলতে ওস্তাদ এই মাছটি।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, বিজ্ঞানিরা যখন প্রথম এই অ্যাংলার ফিশ আবিষ্কার করে, তখন দেখতে পায় প্রায় সবগুলো মাছই মেয়ে। এই ব্যাপারটা তাদেরকে খুবই অবাক করে। পরে এর রহস্যভেদ করতে পারে তারা। অ্যাংলার ফিশ খুবই রেয়ার হওয়ায় সেক্স পার্টনার খুঁজে বের করা খুবই টাফ। অ্যাংলার ফিশের রিপ্রোডাকশন প্রসেসটাও খুবই অদ্ভুত। এরা সেক্সুয়াল প্যারাসাইটিজম টেকনিকে কাজ সাড়ে। অর্থাৎ, কাজ শেষে মেয়ে মাছটি ছেলে মাছটিকে প্যারাসাইট বানিয়ে রেখে দেয় দেহের সাথে। বেশিরভাগ পুরুষ অ্যাংলার ফিশরা তাই প্যারাসাইট হয়েই বেঁচে থাকে। একারণেই ইন্ডিভিজুয়াল পুরুষ অ্যাংলার ফিশের সংখ্যা এত কম।

নাম্বার ওয়ান - পিংক হ্যান্ডফিশ

পিংক হ্যান্ডফিশের সবথেকে অদ্ভুত ফিচার হচ্ছে, এরা পাখনা নয়, হাত দিয়ে চলাফেরা করে। অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা ২২ বছর পর তাসমানিয়ার উপকূলে এই রেয়ার মাছটি খুঁজে পেয়েছে। পিংক হ্যান্ডফিশ মাছটি এর আগে শেষবার দেখা গিয়েছিল ১৯৯৯ সালে। এপর্যন্ত মাত্র চার বার এই মাছের দেখা পেয়েছে মানুষ। সমুদ্রের ৩৯০ ফুট গভীরে এদের বসবাস। মাছটি এক সময় হারিয়ে যাবে এই আশঙ্কায় অস্ট্রেলিয়ার কর্তৃপক্ষ এই মাছটিকে বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় যোগ করেছেন।

মতামত

0Comments

আপনার মতামত লিখুন (0)

#buttons=(ঠিক আছে!) #days=(20)

এই ওয়েবসাইটি ব্যবহারে আপনার অভিজ্ঞতাকে আরো উন্নত করার জন্য কুকিজ ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু আমরা কখনই আপনার সম্মতি ছাড়া আপনার কোনো ডাটা সংরক্ষণ করব না। আরো জানুন
Ok, Go it!