বর্তমান সময়ে ইন্ডিয়ার তরুণ অভিনেতাদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় দুলকার সালমান। মেইনলি মালায়ালাম ইন্ডাস্ট্রি থেকে বিলং করেন তিনি। কেরালার কিংবদন্তি অভিনেতা মামুট্টির ছেলে তিনি। সিনেমাপ্রেমী তরুণীদের মধ্যে ব্যাপক ক্রেজ তার। বেঁছে বেঁছে দারুণ সব কাজ এবং বৈচিত্র্যময় সব চরিত্রে অভিনয় করার সুনাম আছে তার। তার মধ্য থেকে সেরা পাঁচটি সিনেমা নিয়েই কথা বলবো আজ।
উস্তাদ হোটেল
সেকেন্ড শো সিনেমাটি দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও দুলকার পরিচিতি লাভ করেন তার দ্বিতীয় সিনেমা উস্তাদ হোটেল দিয়ে। ২০১২ সালে মুক্তি পাওয়া আনওয়ার রশীদের এই সিনেমায় একজন শেফের চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। তার বাবার স্বপ্ন থাকে একটি ফাইভ স্টার হোটেল দেওয়ার। এবং সেটির দায়িত্ব দিতে চান তার দুলকারের ওপর। কিন্তু সে হতে চায় একজন শেফ। তার বাবার সাথে বোঝাপড়া না হওয়ায় সে তার দাদার জনপ্রিয় লোকাল রেস্তোরা উস্তাদ হোটেলে অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে যোগ দেয়। সেখানে থেকে মানুষের প্রতি তার পার্সপেক্টিভ বদলে যায়। সিনেমাটি বক্স অফিসে দারুণ সাফল্য পাওয়ার পাশাপাশি সমালোচকদেরও প্রশংসা কুড়ায়। জিতে নেয় তিনটি ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড। দুলকার জেতেন ফিল্মফেয়ারে বেস্ট মেল ডেব্যুর পুরষ্কার।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
এনপিসিবি
এই সিনেমাটির নাম অনেক বড়। নিলাকাশাম পাচাকাদাল চুভান্না ভূমি। অর্থ নীল আকাশ, সবুজ পানি, লাল পৃথিবী। সংক্ষেপে এনপিসিবি। এটি ইন্ডিয়ার অন্যতম সেরা রোড অ্যাডভেঞ্চার মুভি। দুলকারের ক্যারিয়ারেরও অন্যতম সেরা সিনেমা ধরা হয় একে। পরিচালক সামীর তাহির বিখ্যাত আর্জেন্টাইন ফিল্ম ‘দ্য মোটরসাইকেল ডাইরিজ’ থেকে ইন্সপায়ার্ড হয়ে তৈরি করেছিলেন এটি।
মুভিটিতে
দেখা যায় দুলকার তার প্রেমিকার খোঁজে তার বন্ধুকে নিয়ে কেরালা টু নাগাল্যান্ড রোড ট্রিপে
বের হয়। মোটরসাইকেলের এই জার্নিতে বৈচিত্র্যময় কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করে তারা। সিনেমাটি
রোড অ্যাডভেঞ্চার ও লাভ স্টোরি দেখানোর পাশাপাশি অনেক গুরুত্বপূর্ণ মেসেজও তুলে ধরেছে।
মুভিটি বক্স অফিসে সাফল্য পাওয়ার পাশাপাশি দর্শকদের কাছেও কাল্ট ক্লাসিকের মর্যাদা
পায়।
ব্যাঙ্গালোর ডেইজ
অঞ্জলি মেননের এই সিনেমাটি দুলকারের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা হিসেবে বিবেচিত হয়। মাল্টিস্টারার এই মুভিতে দুলকার ছাড়াও অভিনয় করেছেন নিভিন পাওলি, নাজরিয়া নাজিম, ফাহাদ ফাসিল, পার্বতী, ইশা তালওয়ার ও নিথিয়া মেননের মতো তারকারা। সম্পূর্ণ আলাদা পার্সোনালিটির তিন কাজিনের গল্প বলা হয় এই মুভিতে। যারা তাদের স্বপ্নপূরণের উদ্দেশ্যে কেরালা থেকে ব্যাঙ্গালোরে পাড়ি জমায়। কিন্তু তাদের জীবনে কিছু আনএক্সপেক্টেড টুইস্ট অ্যান্ড টার্ন চলে আসে। মুভিটি বক্স অফিসে সুপার ডুপার হিট হয়। মালায়ালাম ইন্ডাস্ট্রির নিউ জেন সিনেমা মুভমেন্টের সময়কার অন্যতম সেরা সিনেমা হিসেবে বিবেচনা করা হয় ব্যাঙ্গালোর ডেইজকে।
চার্লি
দুলকারের ক্যারিয়ারের ব্রেকআউট সিনেমা ধরা হয় চার্লিকে। এই সিনেমায় তার করা ইউনিক চরিত্রটি তাকে তুমুলভাবে জনপ্রিয় করে তোলে। আমাদের দেশেও চার্লি চরিত্রটি দিয়েই তাকে ব্যাপকভাবে চিনতে শুরু করে সিনেমাপ্রেমীরা। অনেকে তার এই চরিত্রটিকে হিমুর সাথেও তুলনা করে।
মুভিতে
দেখা যায় এক তরুণী তার অ্যাপার্টমেন্টে আগের ভাড়াটিয়ার একটি ডায়েরি পায়। সেই ডায়েরি
পড়ে সে তার প্রতি প্রচুর পরিমাণে আগ্রহী হয়ে ওঠে। তার খোঁজে চষে বেড়াতে থাকে কেরালার
বিভিন্ন জায়গা। চার্লি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য কেরালা স্টেট অ্যাওয়ার্ড জেতেন দুলকার
সালমান। দিনে দিনে তার করা অন্যতম আইকনিক চরিত্র হয়ে ওঠে এটি।
সীতা রামাম
২০২২
এ মুক্তি পাওয়া এই সিনেমাটি থিয়েটার ও ওটিটি দুই জায়গাতেই তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। স্নিগ্ধ
এই প্রেম কাহিনীতে দুলকার ও মৃনাল ঠাকুরের কেমিস্ট্রি দর্শকরা খুবই পছন্দ করে। দুলকার
এখানে অভিনয় করেন মেজর রামের চরিত্রে এবং মৃনাল রাজকুমারী নূরজাহানের চরিত্রে। একটি
বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেন রাশ্মিকা মান্ডানাও। নন লিনিয়ার এই পিরিয়ড ড্রামাটি এর ট্র্যাজেডিক
এন্ডিং এর কারণে আরো বেশি প্রশংসিত হয়।
এই
পাঁচটি মুভির বাইরেও আরো বেশ কিছু চমৎকার সিনেমায় অভিনয় করেছেন দুলকার সালমান। যেগুলোর
নাম উল্লেখ না করলেই নয়। ইরফান খানের সাথে করা হিন্দি সিনেমা কারওয়ান, সাই পল্লবীর
সাথে করা সাইকোলজিকাল থ্রিলার কালি, মনিরত্নমের রোমান্টিক ড্রামা ওকে কানমানি এবং অ্যাকশন
সিনেমা কাম্মাতি পাদামেও তার অভিনয় মুগ্ধতা ছড়ায় অডিয়েন্স ও ক্রিটিক্সদের মাঝে।