“তোমায় দেখলে মনে হয়, হাজার বছর তোমার সাথে ছিলো পরিচয়”
১৯৯৯ সালে “বিয়ের ফুল” সিনেমার একটি গান এটি। শাবনুর আর রিয়াজ অভিনিত এই সিনেমার এই গানটি তুমুল জনপ্রিতা অর্জন করেন। শাবনুরের প্রথম সিনেমা ‘চাঁদনী রাতে’ ততটা সফল না হলেও, পরবর্তিতে জনপ্রিয় নায়ক ‘সালমান শাহ’ এর সাথে অভিনয় করে বেশ জনপ্রিয় হন। ঢাকাই ছবির সর্বকালের অন্যতম সফল অভিনেত্রী শাবনূর। সিনেমা পাড়ায় একটা কথা প্রচলিত আছে, দর্শক শুধু তাকে দেখার জন্যই সিনেমা হলে যেতেন। নব্বই দশকে জনপ্রিয়তার আকাশ ছুঁয়েছিলেন তিনি। "তোমাকে চাই", " স্বপ্নের ঠিকানা", "নারীর মন", " শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ", "সুন্দরী বধূ", " জীবন সংসার", "আনন্দ অশ্রু" সহ আরও বেশ কয়েকটি সিনেমাতে শাবনুরের অনবদ্য অভিনয় তাকে নিয়ে আসে জনপ্রিয়তার শীর্ষে। একজন সফল অভিনেত্রী হিসেবে তিনি ১০ বার তারকা জরিপে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার লাভ করেছেন।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
স্নিগ্ধ চেহারা, মায়াবী হাসি, চিরায়ত বাঙালি নারীর মধুমাখা চাহনি
আর প্রাণবন্ত অভিনয়ের কারণে তার ভক্তকূল তাকে ঢাকাই সিনেমার রাণী বলে আখ্যায়িত করেন।
“প্রেমের তাজমহল” ছবির একটি গান ‘ছোট্ট একটা জীবন নিয়ে কেনো বলো পৃথিবীতে কেনো বলো
আসা’। সম্প্রতি শাবনুর তার ফেসবুক প্রোফাইলে গানটি নিজ গলায় গেয়ে আপলোড করলে গানটি
রীতিমতো ভাইরাল হয়।
বাংলা চলচিত্রের আরেক শ্রেষ্ঠ নায়িকা ‘মৌসুমী’। “কেয়ামত থেকে কেয়ামত” সিনেমায় সালমান শাহ এর সাথে জুটি বেধে বাজিমাত করে। এই ছবির একটি গান ‘ও আমার বন্ধু গো চির সাথি পথ চলার’ গানটি এখনো পর্যন্ত তার জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে। এটিই ছিলো মৌসুমির অভিনিত প্রথম চলচিত্র। “খায়রুন সুন্দরি” চলচিত্রে অভিনয়ের পর অনেকেই তাকে খায়রুন সুন্দরি নামেই চেনে। অভিনয়ের পাশাপাশি মৌসুমি পরিচালক হিসেবেও পরিচিতি পান। “কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি”, “মেহের নিগার” তারই পরিচালিত সিনেমা।
ঢাকাই সিনেমার এই দুই জনপ্রিয় নায়িকা একসময় প্রতিটা সিনেমা হল দাপিয়ে
বেড়াতো। যদিও এখন আর তাদের পর্দায় দেখা যায় না।
প্রশ্ন উঠতেই পারে, এই দুই কিংবদন্তি নায়িকার মধ্যে কে সেরা? দুজন
কি দুজনের প্রতিদ্বন্দী?
দর্শকরা দুজনকেই যেভাবে জনপ্রিয়তা দিয়েছেন, তাতে করে নির্দিষ্ট
করে বলা দায় যে কে সেরা! প্রতিদ্বন্দ্বিতার চেয়ে তাঁদের দুজনের সম্পর্ক বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ।
বাংলা সিনেমায় ‘প্রিয়দর্শিনী’ খ্যাত নায়িকা মৌসুমিকে এক অনুষ্ঠানে জিজ্ঞেস করা হয় এই
প্রশ্নটিই। জবাবে মৌসুমি নির্দিধায় বলেন শাবনুরের কথা।
তবে দর্শকরা জানেন বাংলা সিনেমায় এই দুজনের কারো অবদানই কম না।
দুজনের একসাথে অভিনয়ে আসা, একসাথে কাজ করা, একই সাথে সকলের মন জয় করা। বাংলা সিনেমায়
জনপ্রিয়তার শীর্ষে এদের নামই আছে।
‘দুই বধূ এক স্বামী’, ‘মোল্লাবাড়ির বউ’, ‘বেয়ান সাব’, ‘কিছু আশা
কিছু ভালোবাসা’ এসব ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছেন তাঁরা।
তুমুল জনপ্রিয় এ দুই নায়িকার পুরস্কারের ঝুলিও বেশ সমৃদ্ধ। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে তিনটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, তিনটি মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার এবং তিনটি বাচসাস পুরস্কার জিতেছেন মৌসুমী। অন্যদিকে, শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে একটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ রেকর্ড ১০টি মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার এবং সাতটি বাচসাস পুরস্কার রয়েছে শাবনূরের দখলে। সম্প্রতি তাদেরকে পর্দায় আর দেখা না গেলেও, সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ দেখা যাচ্ছে দুজনকে। হাসিখুশি ছবিতে দুজনকে একসাথে দেখে ভক্ত ও অনুরাগিরা বেশ খুশি।