বাংলা চলচিত্রে ডাগর চোখের সুন্দরি হিসেবে সবাই চিনতো নায়িকা ‘ববিতা’কে।
আরেক দিকে মিষ্টি হাসির মেয়ে মানেই ছিলো নায়িকা ‘কবরি’। এদের সাথে আরো একজন ছিলেন।
‘সাবানা’। তার নাম শুনলেই হয়তো চোখের সামনে ভেসে উঠে স্নিগ্ধ কোমল একটি চেহারা।
এক সময় বাংলা সিনেমার নায়িকা মানেই ছিলো সাবানা, ববিতা, কবরি। সেই সাদাকালো পর্দায় তাদের অভিনয় দেখে দর্শক হাসতো, কাঁদতো। সিনেমাহলে যেন শুধু তাদেরই রাজত্ব। সাবানার “ভাত দে”, কবরির “সারেং বউ”, ববিতার “দহন”। সেসময় থেকে এই সময়ে এসেও যেন এগুলো তাদের জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে। কিভাবে পর্দায় আগমন এই তিন নক্ষত্রের?
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
১৯৬৪ সালে “সুতরাং” সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে পর্দায় আসেন ‘মীনা পাল ওরফে কবরি’। প্রথম সিনেমাতেই তিনি বেশ প্রশংসা পান। পরিচালক ‘সুভাষ দত্ত’ তাকে ‘কবরি’ নামটি দেন। এর পর একে একে জনপ্রিয় সব সিনেমা করে দর্শকদের মনে জায়গা করে নেন এই অভিনেত্রি।
পরিচালক ‘এহতেশাম’ তার সিনেমার জন্য একজন লাজুক মেয়ে খুঁজছিলেন।
খুঁজতে খুঁজতে তিনি এমন একজনের দেখা পান যে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো দূরে থাক, কারো
সামনে আসতেও লজ্জা পায়। তবে এহতেশাম তার সিনেমার জন্য একেই বেছে নেন। ১৯৬২ সালে “নতুন
সুর” সিনেমার মাধ্যমে নায়িকা সাবানার আগমন হয়।
“গোলাপি এখন ট্রেনে” বা “ওরা এগারো জন” এর মাধ্যমেই ববিতাকে জনে জনে সকলে চেনে। তবে পর্দায় তার প্রথম সিনেমা ছিলো “সংসার”। নুরুল হক বাচ্চু ও মুস্তাফা মেহমুদ এর পরিচালিত এই সিনেমাটি নির্মিত হয় ১৯৬৮ সালে।
আশির দশকের জনপ্রিয় এই নায়িকাদের এখন আর পর্দায় দেখা যায় না। বয়সের
ভাড়ে হয়তো তারা পর্দার আড়ালে চলে গেছেন। যদিও কিছুদিন আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা
গেছেন নায়িকা ‘কবরী’। পরিবার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে বাস করছেন সাবানা। দেশে
থাকলেও সিনেমায় নেই নায়িকা ববিতা।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিত্র নায়ক ওমরসানির একটা পোষ্ট নিয়ে বিতর্ক ওঠে। পোষ্টটিতে ওমরসানি লেখেন, ‘প্রিয়তমা বলতে আমি এইভাবে বুঝি- যেমন বাংলায় সুচিত্রা সেন, কবরী, শাবানা, ববিতা, মৌসুমী, শাবনুর, পূর্ণিমা। আমি এভাবেই ভাবছি। আর এখন কী দেখছি এই হচ্ছে প্রিয়তমা? এত মধুর নামের সঙ্গে মধুর ভাবনা দরকার।’
পোষ্টি দেখার পর আরেক অভিনেত্রী ‘অঞ্জণা’ তার ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, “আমাদের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি শুধু কবরী, শাবানা, ববিতার ওপরেই ডিপেন্ডেন্ট
ছিল না। ৮০ এর দশকে কবরী আপা কয়টা কাজই বা করেছে। আশির দশকে অসংখ্য সুপারহিট ব্যবসাসফল
চলচ্চিত্র আমি, রোজিনা, সুচরিতা, নূতন, অঞ্জু উপহার দিয়েছি। ইতিহাস কখনও মুছে ফেলা
যায় না।“
মূলত নিজের না উল্লেখ না থাকাতেই অঞ্জণার এই ক্ষোভ, বলে মনে করেন
সকলে।