বিনোদন কিংবা ক্রীড়াজগতের তারকাদের সাধারণত সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশি অ্যাক্টিভ থাকতে দেখা যায়। এর কারণ যে শুধুমাত্র সোশ্যালাইজিং অথবা ভক্তদের সাথে ইন্টার্যাকশন তা নয়। সোশ্যাল মিডিয়াতে তাদের অ্যাক্টিভ থাকার বড় একটি কারণ হচ্ছে ইনকাম। সোশ্যাল মিডিয়া সেলেব্রিটিদের সাধারণত বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কন্টেন্ট তৈরির মাধ্যমে রোজগার করতে দেখা যায়। কিন্তু বিনোদন কিংবা ক্রীড়াজগতের তারকারা সোশ্যাল মিডিয়াতে শুধুমাত্র নিয়মিত পোস্ট করেই প্রচুর টাকা রোজগার করে থাকেন। যদিও তারা নিজ নিজ সেক্টরে হার্ডওয়ার্ক ঠিকই করেন। যার ফলশ্রুতিতেই এই লাক্সারি উপভোগ করতে পারেন।
তেমনি এক সেলেব্রিটি হচ্ছেন
জান্নাত জুবায়ের রহমানি। তিনি
হিন্দি ধারাবাহিকের পরিচিত মুখ। ছোটপর্দায় অনেক ছোট বয়স থেকেই তিনি অভিনয় করছেন।
কিশোরী জান্নাতের অভিনয় অনেকেই মনে রেখেছেন। বর্তমানে তিনি ২১ বছরের লাস্যময়ী
নায়িকা।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
২০০১ সালে
মুম্বাইয়ের মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারে জান্নাতের জন্ম। লেখাপড়ায় তিনি যথেষ্ট ভাল
ছিলেন। মেধাবী জান্নাত অভিনয়ের পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন সমানতালে। দ্বাদশ
শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় ৮১ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেন তিনি।
হিন্দি
ধারাবাহিকের ব্যস্ত রুটিনের মাঝেও পড়াশোনাকে থমকে যেতে দেননি জান্নাত। বর্তমানে মুম্বাইয়ের একটি বেসরকারি কলেজ থেকে তিনি
ব্যাচেলর পর্যায়ের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে অভিনয়কেই পেশা হিসাবে বেছে
নিয়েছেন।
মাত্র ৯
বছর বয়সে বিনোদন জগতে পা রেখেছিলেন জান্নাত। তার প্রথম
কাজ ২০১০ সালে ‘দিল মিল গায়ে’ নামের একটি ধারাবাহিকে। সেখানে ক্যামিও চরিত্রে দেখা
গিয়েছিল তাকে। তার প্রথম অভিনীত সেই
চরিত্রের নাম ছিল ‘তামান্না’।
২০১০-এই
‘কাশি আব না রাহে তেরা কাগাজ কোরা’ ধারাবাহিকে কাজ করেন জান্নাত। ২০১১ সালে তাকে দেখা যায় ‘ফুলওয়া’-তে। এই
দুই ধারাবাহিকে শিশুশিল্পী হিসাবে তার অভিনয় নজর কেড়েছিল সকলের। এছাড়া ডিজনি
ইন্ডিয়ার জনপ্রিয় শো ‘বেস্ট অফ লাক নিকি’তেও তাকে দেখা গেছে।
২০১৪ সালে
জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ভারাত কা বীর পুত্র- মহারানা প্রতাপ’-এ ফুল কানওয়ারের ছোটবেলার
দৃশ্যে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। তার পর
থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক ধারাবাহিকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে কাজ করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
নায়িকা
হিসাবে তার প্রথম ব্রেক কালার্স টিভিতে। জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘তু আশিকি’তে তিনি প্রধান
চরিত্রে অভিনয় করেন। তার বিপরীতে কাজ করেছেন ঋত্বিক আরোরা ও রাহিল আজম।
২০২২ সালে
‘খাতরো কে খিলাড়ি’-তে অন্যতম প্রতিযোগী ছিলেন হিন্দি টেলিভিশনের এই তরুণ তুর্কি। তিনি চতুর্থ স্থানে ওই প্রতিযোগিতা
শেষ করেন। রিয়েলিটি
শো-এর মাধ্যমে তার জনপ্রিয়তা আরো বৃদ্ধি পায়।
এছাড়াও
বিভিন্ন মিউজিক ভিডিওতে মডেলিং এর পাশাপাশি গাইতেও দেখা গেছে তাকে। নিজের ইউটিউব
চ্যানেলে নিয়মিত ভ্লগও আপলোড করেন তিনি।
অভিনয়েই
মেতে থাকেন জান্নাত। তবে তার উপরি পাওনা সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয়তা। নিয়মিত ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে পোস্ট
করে বাড়তি রোজগার করেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে তার অনুরাগীর সংখ্যা ৪ কোটি ৭০ লাখেরও
বেশি।
জনপ্রিয়তার
ভিত্তিতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে তার চুক্তি রয়েছে। কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে দাবি করা
হয়, ইনস্টাগ্রামে
এক একটি পোস্ট থেকে তিনি প্রায় দেড় লাখ রুপি করে পেয়ে থাকেন। কোনো কোনো পোস্টে
আয়ের পরিমাণ আরো বেশি।
মাত্র ২১
বছর বয়সে সাফল্যের শিখর ছুঁয়ে ফেলেছেন জান্নাত। বলিউডের সঙ্গে তার তেমন ওঠাবসা নেই।
বাজিমাত করেছেন ছোটপর্দাতেই। প্রায় ১৩ বছর ধরে হিন্দি টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে দাপিয়ে কাজ
করছেন।
এই ১৩ বছরে
জান্নাত নিজের পরিশ্রমে সম্পত্তির পরিমাণ অনেক বাড়িয়ে ফেলেছেন। বর্তমানে তিনি
প্রায় ২৫ কোটি রুপির সম্পত্তির মালিক। প্রতি মাসে সব মিলিয়ে তার আয় হয় প্রায় ২৫
লাখ রুপি।