বলিউডের নেপোটিজম নিয়ে লোকজন যতই গালমন্দ করুক না কেন, উপমহাদেশের অলি-গলি পর্যন্ত নেপোটিজমের আখড়া। পলিটিক্সও তার বাইরে না। নেতার উত্তরসূরী হন তার ভাই, বোন, ছেলে কিংবা স্ত্রী। এই সিনারিও রেগুলারলিই দেখা যায়। যেমন ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-৪ ও টাঙ্গাইল-৩ আসনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন আব্দুর রহমান বদির স্ত্রী ও আমানুর রহমান রানার বাবা। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে এমপি হতে হলে কি কোন যোগ্যতা লাগে না? কোনো নেতা বা নেত্রীর আত্মীয় হলেই এমপি হওয়া যাবে? যাই হোক, ইনফরমাল আলাপের দিকে যেয়ে আর লাভ নেই। আমরা বরং দেখে আসি, খাতায়-কলমে এমপি নমিনেশন পাওয়ার ক্রাইটেরিয়াগুলো আসলে কি কি।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
এমপি নমিনেশন পাওয়ার ক্রাইটেরিয়া
প্রথমত বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে এবং বয়স অন্তত ২৫ বছর হতে হবে। অবশ্যই ভোটার হতে হবে। মেন্টালি স্টেবল মানুষ হতে হবে। এছাড়াও ক্যান্ডিডেট অতীতে কোন ক্রাইম করে থাকলে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে তাকে অন্তত পাঁচ বছর স্বাভাবিক জীবন কাটাতে হবে। তবে যুদ্ধাপরাধী হলে সে ক্যান্ডিডেট হতে পারবে না। সবথেকে ইন্টারেস্টিং ক্রাইটেরিয়া হচ্ছে ডুয়েল সিটিজেনশিপ থাকা যাবে না। এতে করে নাকি দেশের প্রতি লয়াল্টির একটি প্রশ্ন চলে আসে।
নমিনেশন বাতিল হওয়ার কারণ
তবে বাস্তবতা হচ্ছে এমপি হতে তেমন কোন যোগ্যতা লাগে না। পলিটিকাল এক্সপেরিয়েন্স, শিক্ষাগত যোগ্যতা, লিডারশিপ কোয়ালিটি – এগুলোর কিছুই দরকার পড়ে না। তবে মামা-চাচা থাকাটা খুব জরুরী। অথচ এই পদটি ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অনুযায়ী সচিবেরও উপরে।
নমিনেশন পাওয়ার জন্য তেমন আহামরি কোন ক্রাইটেরিয়া না থাকলেও বাতিল হয়ে যাওয়ার কারণ ঠিকই আছে।
নমিনেশন পেপার বাছাইয়ের পরে সেটি এক্সেপ্ট করা হবে নাকি বাতিল হয়ে যাবে সেই সিদ্ধান্ত নেন রিটার্নিং অফিসার। এর আগে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের প্যানেল যাচাই করে যে, মনোনয়ন পত্রে চাওয়া তথ্যগুলো ক্যান্ডিডেটরা ঠিকঠাকভাবে দিয়েছে কিনা। সেই সময় দেখা হয় তার নামে কোনো ক্রিমিনাল কেস আছে কিনা। অথবা তিনি কোন তথ্য গোপন করছেন কিনা। এমনকি ক্যান্ডিডেট যদি নমিনেশন পেপারে সিগনেচার করতে ভুলে যায়, তাহলেও তার বাদ পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
তবে নমিনেশন পেপার বাতিল হলেও ইলেকশনে অংশগ্রহণ করার কিছু উপায় থাকে। বাতিল পড়া ক্যান্ডিডেট ইনিশিয়াল স্টেজে নির্বাচন কমিশনের কাছে আপিল করতে পারে। তাতেও যদি ডিসিশনে কোন চেঞ্জ না আসে, তখন ক্যান্ডিডেট চাইলে হাইকোর্টে আবেদন করতে পারবেন। তখন হাইকোর্ট তাকে পারমিশন দিলে সে ইলেকশনে দাঁড়াতে পারবে। যদিও এই প্রসেসে রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচন কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তৈরি হয়।