খেতে পছন্দ করে না, এই ধরণের অদ্ভুতুড়ে মানুষ খুব কমই
এক্সিস্ট করে। সারাদিনের কর্মব্যস্ততা কিংবা খাওয়া-দাওয়ার মাঝে কখনো কি ভেবে
দেখেছেন আপনি আসলে কোন টাইপের খাদক? খাদকদেরও যে বেশ ইন্টারেস্টিং একটা ক্যাটাগরি
আছে সেটা কি জানেন? না জানলেও সমস্যা নেই। চলুন আজ জেনে ফেলা যাক।
নাম্বার ওয়ান – ভেজিটেরিয়ান
অ্যান্ড ভিগান
ভেজিটেরিয়ান টার্মটি নতুন করে শেখানোর কিছুই নেই। ভেজিটেরিয়ানদের আমরা বাংলায় নিরামিষভোজী বলে থাকি। এরা সকল ধরণের আমিষ অর্থাৎ রেড মিট, পোল্ট্রি, সিফুড কিংবা অন্য কোনো প্রাণীর মাংস খাওয়া থেকে দূরে থাকে। মোট কথা, এদের খাদ্য তালিকায় কোনো প্রকার প্রাণীর মাংস থাকে না। ভেজিটেরিয়ান মানুষ এখন অহরহ দেখা যায়। এটি এখন অনেকটাই ট্রেন্ডের মতো। স্পেশালি সেলিব্রেটিদের মধ্যে ভেজিটেরিয়ান বেশি দেখা যায়।
তবে ভেজিটেরিয়ানদের থেকেও এক কাঠি সরেস হলো ভিগানরা।
ভেজিটেরিয়ানদের কট্টর ভার্সনকে বলা হয় ভিগান। এরা শুধু মাংসই না, দুধজাতীয় খাদ্য,
ডিম ও মধুও খান না। এমনকি এরা প্রাণী হত্যা করে তৈরি করা যেকোনো কিছুকেই ঘৃণা
করেন। এক্সাম্পল হিসেবে বলা যায়, এরা পশুর চামড়া দিয়ে তৈরি জুতাও ব্যবহার করেন না।
ওল বোনা কিংবা মুক্তার ব্যবহারও এদের দুই চোখের বিষ। তাদের খাদ্য তালিকায়
শুধুমাত্র শাক-সবজি ও ফল-মূলই থাকে। ভেগানিজম এখন খুবই ট্রেন্ডি একটি প্রথা। ভেগান
সোসাইটির তথ্য মতে, গত এক দশকে যুক্তরাজ্যে ভেগানিজমের
চর্চা বেড়েছে ৪০০%। কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই গত তিন বছরে ভেগানিজম ছড়িয়ে পড়েছে ৬০০%
এর বেশি। আপনার আমার মতো তুখোড় রেড মিট খাদকের কাছে যতই অদ্ভুত লাগুক না কেন,
ভেগানিজম এখন পৃথিবীর সবথেকে বড় ফুড ট্রেন্ড।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
নাম্বার টু – পেস্কেটারিয়ান
এরা সাধারণত মাছ এবং সিফুডের উপরেই থাকে। পাশাপাশি সবজিও
এদের খাদ্য। তবে এরা নরমালি রেড মিট থেকে দূরে থাকে। পেস্ক মূলত ইতালিয়ান শব্দ। এর
অর্থ মাছ। কাতালান ও স্প্যানিশে পেস্কা বলতে বোঝায় ফিশিংকে। পেস্কেটারিয়ানদের
মধ্যেও একটি স্পেশাল ক্যাটাগরি আছে, যাদেরকে বলা হয় পোলো-পেস্কেটারিয়ান। এরা
মাঝেমধ্যে পোল্ট্রি আইটেমও খেয়ে থাকে। যেমন লেন্ট কিংবা ক্যাথোলিক উপোসের সময়
ক্যাথোলিকদের মধ্যে অনেকেই সীমিত সময়ের জন্য পেস্কেটারিয়ান হয়ে যায়। যাই হোক, আপনি
কি সাধারণত রেড কিংবা হোয়াইট মিট অ্যাভয়েড করে চলেন? মাছ, সিফুড কিংবা সুশি খেতে
ভালোবাসেন? তাহলে আপনি নিশ্চিতভাবেই একজন পেস্কেটারিয়ান।
নাম্বার থ্রি – পোলোটারিয়ান
যারা রেড মিট খুব একটা খায় না। এরচেয়ে বরং পোল্ট্রি খাদ্য
খেতে পছন্দ করে তাদেরকে বলা হয় পোলোটারিয়ান। চিকেন কিংবা মুরগীকে স্প্যানিশে পোলো
বলা হয়। পোলোটারিয়ানরা মেইনলি মুরগি, টার্কি, হাঁস, কোয়েলের মাংস খেতে পছন্দ করে।
তবে পোলোটারিয়ানদের মধ্যে একটা স্পেশাল ক্যাটাগরি আছে। যাদেরকে বলা হয় পেস্ক-পোলোটারিয়ান।
এরা মাঝেমধ্যে মাছ ও সিফুডও খায়।
নাম্বার ফোর
অ্যান্ড ফাইভ – অমনিভোর
বাকি ক্যাটাগরির মতো অমনিভোররা এত জটিল না। এদের হিসাব
খুবই সোজা। খাওয়ার উপযোগী সবই খায় এরা। খাবার হলেই হলো, এদের চলে যায়। অর্থাৎ এরা
সর্বভুকের দল। খাবারের প্রতি কোনো প্রকার ডিসক্রিমিনেশনে এরা বিশ্বাসী না। আপনিও
কি একজন সর্বভুক? হলে কমেন্ট করে জানান।
নাম্বার সিক্স –
কার্নিভোর
যাদের খাবারে রেড মিট প্রাধান্য পায়, তাদেরকে বলা হয় কার্নিভোর। অর্থাৎ মাংসাশী। গরু, ছাগল, ভেড়া, শূকর ইত্যাদির মাংসকে সাধারণত রেড মিটের আন্ডারে ধরা হয়। প্যালিও ডায়েট নামে একটি জনপ্রিয় ডায়েট আছে। যে ডায়েটে মূলত প্রস্তর বা পাথর যুগের লোকজনের খাদ্যরীতি ফলো করা হয়। এই প্যালিও ডায়েট করা লোকজনও নিজেদেরকে কার্নিভোর দাবী করতে পারে। আপনি যদি অলওয়েজ বার্গার, স্টেক, মিটবলসের উপরেই থাকেন, তাহলে আপনি ডেফিনেটলি একজন কার্নিভোর।
নাম্বার সেভেন –
ক্যানিবাল
খাদকদের মধ্যে সবথেকে ডেঞ্জারাস প্রজাতি হলো এই
ক্যানিবালরা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, হলিউড সিনেমা কিংবা নেটফ্লিক্স-অ্যামাজনের সিরিজ
দেখে অনেকেই মনে করে যেসব মানুষ নিজ প্রজাতির অর্থাৎ মানুষেরই মাংস খায় তাদেরই
শুধু ক্যানিবাল বলা হয়। যেমন, হ্যানিবাল লেক্টার কিংবা জেফ্রি ডাহমার। আসলে
ব্যাপারটা এমন না। যে কোনো প্রাণীই যদি নিজ প্রজাতির প্রাণীর মাংস খায়, তাহলে তাকে
ক্যানিবাল বলা হয়। শিম্পাঞ্জি, সিংহ, হিপ্পো, হ্যামস্টার, ক্র্যাব স্পাইডার,
সিসিলিয়ান, ব্যাঙ, এমনকি ঘাসফড়িং দের মধ্যেও ক্যানিবালিজমের প্রচলন আছে।