Gyat, NPC, Rizz, GRWM – শব্দগুলো কি চেনা চেনা লাগছে? না চিনলে বা না জানলে আপনি জেন জি কিড না। নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা, যাদেরকে আমরা জেন-জি বলে থাকি, তারা এই শব্দগুলো আসলে কি অর্থে ইউজ করে সেটাও আপনাদের অজানা-ই থাকার কথা! তবে শব্দগুলোর অর্থ জানার কৌতুহল নিশ্চয়ই আছে?
সময় বদলায়। পালটে যায় প্রজন্মও। সেই সাথে পরিবর্তন আসে সেই
প্রজন্মের ভাষাতেও। আগের প্রজন্মগুলোর বেশিরভাগের কাছেই তা রীতিমতো হায়ারোগ্লিফিক!
অর্থাৎ রীতিমত দুর্বোধ্য। এজন্যই নতুন প্রজন্মের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারেন না একটু
বয়স হয়ে যাওয়া লোকজন। এই ব্যাপারটিকেই বলা হয় জেনারেশন গ্যাপ। জেনারেশন গ্যাপের
সাথে আরো অনেক কিছুই রিলেটেড। তবে, নতুন প্রজন্মের ভাষা
বুঝলে সেই দূরত্ব অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব।
সোশ্যাল মিডিয়া বা মাইক্রো ব্লগিং সাইটগুলোর কারণে যোগাযোগের
ধরন এমনিতেই বদলে গেছে। তার ইনফ্লুয়েন্স এসে পড়েছে ভাষার মধ্যেও। শর্ট ফরম্যাট ও সাংকেতিক
স্টাইলের কথাবার্তায় অভ্যস্ত হয়ে গেছে জেন-জি প্রজন্ম। একইসাথে একেকটি শব্দের
কনভেনশনাল মিনিংও অনেকখানি বদলে যাচ্ছে। যেমন, ধরা যাক ‘ফ্লেক্স’
শব্দটি। ডিফ্রেন্ট সময়ে এই শব্দটির অর্থও ডিফ্রেন্ট। জেন-জি লোকজন শব্দটিকে ইউজ
করে শো-অফ বা লোক দেখানো হিসেবে। কারও কোনও স্পেশাল গুণ বা ক্ষমতা তুলে ধরার
ক্ষেত্রে এই শব্দটির ব্যবহার এখন অনেকটাই প্রচলিত। অর্থাৎ, তারা যদি বলে ‘ফ্লেক্স করা’, তার মানে,
নিজের বিশেষ কোনো দিক শো অফ করছে কেউ।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
‘ভাইব চেক’ কথাটিও বেশ শোনা যায়।
অনলাইন-কালচারে বহুল ব্যবহৃত এই শব্দটির মানে হল, কারও মুড বা আবেগ টেস্ট করে দেখা।
অর্থাৎ কে কেমন মেন্টাল স্টেটে আছে। অথবা কোনো জায়গার লুক অ্যান্ড ফিল কেমন,
সেটা বোঝাতেও অনেক সময় ব্যবহার করা হয় এই শব্দটি।
আবার ‘উওক’ শব্দটি এই প্রজন্ম ব্যবহার করে একেবারেই
অন্যরকম একটি অর্থে। শব্দটি কনভার্সেশনে আসে সোশ্যাল বা পলিটিকাল অ্যাওয়ারনেস
বোঝাতে। সমাজ বা দেশে চলমান অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ নিয়ে কে কতটা অ্যাক্টিভ, সামাজিক ন্যায়-বিচার নিয়ে কে কতখানি সচেতন, এসব
বোঝাতে এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়।
ঠিক যেমনটা, গরীব-দুঃখী ও শোষিত
মানুষের পাশে দাঁড়ানো বোঝাতে নতুন প্রজন্মের ডিকশোনারিতে জায়গা করে নিয়েছে ‘অ্যালিশিপ’
শব্দটি। ইন্টারেস্টিংলি, ‘টি’ শব্দটিকে তারা আর শুধুই চা হিসাবে ব্যবহার করছে না,
বরং গল্পগুজব করা বা আড্ডা দেওয়া অর্থেই ধীরে ধীরে এটি প্রচলিত
হয়ে উঠছে।
আরেকটি ইম্পর্টেন্ট জেন-জি টার্ম হচ্ছে ক্যানসেল কালচার। প্রায়ই
তাদের কথাবার্তা বা সোশ্যাল মিডিয়াতে উঠে আসে এই টার্মটি। যার অর্থ এবং ইম্প্যাক্ট
বেশ গভীর। কোনো পপুলার ব্যক্তি বা কোনো অর্গানাইজেশনের কেউ যদি খারাপ কিছু করে, যা
অনেকক্ষেত্রেই আর ক্ষমার যোগ্য থাকে না, তখন সোশ্যাল মিডিয়াতে তার বিরুদ্ধের লোকজন
একটি প্রোটেস্টের ডাক দেয়। যেন বাকিরাও সেই ব্যক্তি বা অর্গানাইজেশনকে একদম
ক্যানসেল আউট করে দেয়। তখন দেখা যায় সেই ব্যক্তির মধ্যে বিরাট এক ইমপ্যাক্ট পড়ে।
তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে সে নিজের ভুল বুঝতে পারে। আবার এই ক্যান্সেল কালচারের এক
বিশাল সমস্যাও আছে। দেখা যায় অনেক সময়ে ভালো মানুষও এতে ফেঁসে যায়। তখন শুধু শুধু
তার হয়রানি হতে হয়।
যাই হোক, অন্যদিকে এই সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করেই, চলমান কোনও ট্রেন্ডে গা ভাসানো বা মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টাকে বলা হয় ‘ক্লাউট
চেজিং’। আরেকটি ইন্টারেস্টিং জেন জি টার্ম আছে। কোনও
কিছুতে ভীষণ অবাক হওয়া কিংবা একটু খোঁচা দিয়ে যদি বলতে হয় ‘ও মা, তাই নাকি!’, জেন জি-দের ভাষাতে সেই ব্যাপারটিকে
বলতে হয়, ‘আই উওপ’।
আরও বেশ কিছু ইন্টারেস্টিং জেন-জি টার্ম আছে। যেমন, তারা
তাদের বেস্টফ্রেন্ড বা খুবই পছন্দের কাওকে ডাকে ‘পুকি’ নামে। আবার গড ড্যাম বুঝাতে
‘গিয়াট’ নামক একটি অদ্ভুট টার্ম ইউজ করে। আবার কারিশমা শব্দটিকে সংক্ষেপে রিজ বলে
জেন-জি পোলাপান। আবার ফান লাভিং, বাবলি পার্সোনালিটির কোনো মেয়েকে অ্যাস্থেটিক
অর্থে কৌকেট বলে ডাকা হয় জেন-জি ওয়ার্ল্ডে। এছাড়াও আরও কিছু প্রচলিত শর্ট ফর্ম
আছে। যেমন নন-প্লেয়েবল ক্যারেক্টার বা খেলানোর অনুপোযোগি চরিত্রকে সংক্ষেপে বলে
এনপিসি। মিউচুয়ালসকে বলা হয় মুটস! আবার অথেন্টিসিটি বা খাটি কথা বোঝাতে শব্দের আগে
‘নো ক্যাপ’ ব্যবহার করা খুবই পপুলার কালচারে পরিণত হয়েছে এখন। গেট রেডি উইথ মি
থেকে জিআরডাব্লিউএম, ডিলিউশনালকে ডেলুলু, সাসপেক্টকে সাস, ওয়ান অফ মাই ফলোয়ারসকে
ওওএমএফ বলার মাধ্যমেই কাজ সেড়ে ফেলে জেন-জি কুল ডুডরা।