২০১৯ এর ক্রাইস্টচার্চ মসজিদ হামলার কথা মনে আছে? যার পাশেই সেই সময় উপস্থিত ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আরেকটু এদিক সেদিক হলেই সেদিন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রায় অর্ধেক গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার মারা যেতে পারতেন। ২০১৯ সালের ১৫ই মার্চ নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় সময় দুপুর ১:৪০ এর দিকে ক্রাইস্টচার্চের রিকার্ক্টনের আল নূর মসজিদে ব্রেন্টন ট্যারেন্ট নামক এক অস্ট্রেলিয়ান অ্যান্টি-ইসলামিক সন্ত্রাসী হামলা করে। তিনি মুসলিমদের হেইট করতেন। একারণেই এরকম একটি নৃশংস হেইট ক্রাইম ঘটান। পরবর্তীতে সে লিনউড ইসলামিক সেন্টারেও হামলা করে। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হচ্ছে, হামলা করার সময় সে ফেইসবুকে লাইভে ছিলেন। এই ঘটনায় প্রায় ৫৭ জন মুসলিম মারা যান এবং আরো ৫০ জনের মতো আহত হন।
হেইট স্পিচ বলতে আমরা বুঝি গালাগালি অথবা একজন আরেকজনকে
নিয়ে বাজে মন্তব্য করা। পশ্চিমা সমাজে এই ব্যাপারটা ঘটে আরো বড় আকারে। যার নাম
হেইট ক্রাইম। গায়ের রং, ভাষা, ন্যাশনালিটি, শারীরিক অক্ষমতা, সেক্স, জেন্ডার, ধর্মসহ বিভিন্ন বিষয়ের সাথে হেইট ক্রাইম রিলেটেড। এই ব্যাপারগুলো নিয়ে
কেউ অ্যাটাকিং ও বায়াসড আচরণ করলে সেটাকেই হেইট ক্রাইম বলা হয়। বিশেষ করে এশিয়ান
এবং আফ্রিকানরা প্রায়ই বুলিং ও শারীরিক নির্যাতনের স্বীকার হন ওয়েস্টার্ন
দেশগুলোতে।
হেইট ক্রাইম শব্দটি চালু হয় ১৯৮০ সালের দিকে, অ্যামেরিকায়। সোশিওলজিস্ট জ্যাক ম্যাকডেভিট ও জ্যাক লেভিন এই ধরণের
অপরাধের পেছনের উদ্দেশ্য খুঁজে বের করতে একটি গবেষণা চালিয়েছিল। সেই গবেষণায় তারা
চারটি কারণ খুঁজে পায়। সেগুলো হচ্ছে পৈশাচিক আনন্দ, প্রোটেকটিভ নেচার বা নিজ
সম্প্রদায়কে রক্ষা করার ভুল ধারণা, রিভেঞ্জ বা প্রতিশোধ এবং মিশন অফেন্ডার্স বা
আইডিয়ালিস্টিক সন্ত্রাসবাদ। হেইট ক্রাইমের মধ্যে ৭০% ই দেখা যায় ক্রিমিনাল পৈশাচিক
আনন্দ পাওয়ার জন্য করে থাকে। তবে এক্সপার্টদের মতে হেইট ক্রাইমের সবথেকে এক্সট্রিম
রূপ হচ্ছে মিশন অফেন্ডার্স।
জেমস বার্ড জুনিয়র নামক আফ্রিকান অ্যামেরিকান মধ্যবয়সী এক
লোককে ১৯৯৮ সালে ব্রুটালি মার্ডার করা হয়। হত্যাকারী ছিলেন টেক্সাসের তিনজন হোয়াইট
সুপ্রিমেসিস্ট। তারা তাকে বেধরক পেটায়। এরপর ট্রাকের পেছনে বেঁধে মারা যাওয়ার আগ
পর্যন্ত টেনে-হিচরে কয়েক মাইল পর্যন্ত নিয়ে যায়। এটি ছিল সেই সময় হেইট ক্রাইমের
সবথেকে বড় ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি।