১৮ বছরে সেই সুমনের
মাঝে তফাতটা কি চোখে পড়ছে?
‘প্রেমিক নাম্বার
ওয়ান’ খ্যাত এই ‘ডেয়ারিং লাভার’ কখনো হয়েছেন ‘বীর’, কখনোবা ‘শাহেনশাহ’। আবার ‘বিদ্রোহী’
করে হয়েছেন লিডার। এভাবেই চলছে তার ‘রাজত্ব’।
ঢাকাই সিনেমার কিং শাকিব খান। বর্তমান সময়ে বাংলা সিনেমা মানেই শাকিব খানের সিনেমা। তার সিনেমা রিলিজ হওয়া মানেই সিনেমা হলগুলো হাউজফুল। বাংলা সিনেমায় যেন তার একচ্ছত্র অধিপতি। বাংলাদেশের সিনেমা হলগুলো যখন দর্শকশূণ্যতায় ভোগে, তখন সেই হাল ধরে এগিয়ে নিয়ে যায় এই “হিরো দ্যা সুপারস্টার”। তবে এই এতদূর আসার পথটা কিন্তু অতটাও সোজা ছিলো না। কঠোর পরিশ্রম, সমালোচনা এসবকিছুই হজম করে আজ তিনি সুপারস্টার। সফলতার গল্পটা না হয় শুনবো আরেকদিন। আজ কথা বলবো, শাকিব খানের এখনো পর্যন্ত সেরা ৫টি ব্যবসাসফল সিনেমা নিয়ে।
শাকিব খানের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা একটি সিনেমা হলো ২০০৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হাসিবুল ইসলাম পরিচালিত “আমার স্বপ্ন তুমি” সিনেমাটি। সিনেমায় উঠে এসেছে এক মাস্তানের গল্প। যে কিনা তার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবেসেছেন তার গ্রামের এক মেয়েকে। কিন্তু হঠতই সেই ভালোবাসায় পড়ে এক ভয়াল থাবা। শহরের এক ধনী এসে তার নায়িকাকে বিয়ে করে নিয়ে যায়। সেই মাস্তান নায়ক ছোটে তার প্রেমিকাকে ফিরে পাওয়ার আশায়। এভাবেই চলতে থাকে এই ত্রিভুজ প্রেমের গল্পটি। সিনেমাটিতে শাকিব খানের পাশাপাশি ছিলেন- শাবনূর, ফেরদৌস, অভিনয় করেছেন আরও অনেকে।
সিনেমাটি মুক্তির
সেবছরই প্রচুর জনপ্রিয়তা পায়, সাথে ব্যবসাসফল সিনেমার মধ্যে হয়ে ওঠে অন্যতম। এই সিনেমার
বেশ কয়েকটি গান এখনো বেশ জনপ্রিয়।
এফআই মানিক পরিচালিত ‘কোটি টাকার কাবিন’ সিনেমাটির মাধ্যমে শাকিব খানের ক্যারিয়ার নেয় নতুন এক মোড়। ২০০৬ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটির সাড়া জাগানো সফলতা ইন্ডাস্ট্রিতে যেন শাকিব খানকে এক মজবুত আসনে বসায়। সিনেমাটির মাধ্যমে শাকিবের সঙ্গে প্রথমবারের মতো জুটি বাঁধেন অপু বিশ্বাস। সিনেমার গল্পে দেখা যায় দুই পরিবারের বিরোধ থাকার পরেও, প্রেম জমে ‘ফাহিম’ আর ‘সিমরান’-এর। তাঁদের এই প্রেমের মাধ্যমে দুই পরিবারের শত্রুতা রূপ নেয় বন্ধুত্বে। এ সিনেমায় শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস ছাড়াও অভিনয় করেছেন—ডিপজল, রাজ্জাক, সুচরিতা, মিশা সওদাগর সহ আরো অনেকে।
“প্রিয়া আমার প্রিয়া”
গানটা শোনেনি এমন মানুষ হয়তো পাওয়া যাবে না। সেসময় এলাকার গলিতে দোকানে সাউন্ডবক্সে
দখল করে রাখতো এই গান।
২০০৮ সালে বদিউল
আলম খোকন পরিচালিত সাড়া জাগানো সিনেমা ‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’ মুক্তি পায়। সিনেমায় অভিনয়
করেন— শাকিব খান, সাহারা, মিশা সওদাগর, প্রবীর মিত্র, আফজাল শরীফ সহ আরো অনেকে। শাকিব
খানের ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ ব্যবসাসফল সিনেমা এটি। মাসের পর মাস সিনেমাহল দখল করে রেখেছিলো
‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’। এই সিনেমার সফলতার সাথে সাথে শাকিব খানের পারিশ্রমিক দেড় লাখ
টাকা থেকে এক লাফে হয়ে যায় ২৫ লাখ টাকা!
২০১০ সালে জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত “ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না” সিনেমাটির মাধ্যমেই প্রথমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান শাকিব খান। ত্রিভূজ প্রেমের এই গল্পটিতে শাকিবের বিপরীতে অভিনয় করেন অপু বিশ্বাস ও রুমানা। সিনেমাটিতে আরও অভিনয় করেছেন—প্রবীর মিত্র, কাজী হায়াৎ, আলী রাজ, মিশা সওদাগর সহ আরো অনেকে। এই সিনেমাটি ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১০’–এ মোট সাতটি বিভাগে পুরস্কার পায়। দর্শক জরিপে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেতা হন শাকিব খান, এবং পার্শ্ব চরিত্রে সেরা অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেন অভিনেত্রী রুমানা।
২০১২ সালে শাহিন সুমন পরিচালিত “খোদার পরে মা” সিনেমাতেও শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান শাকিব খান। সিনেমাটিতে শাকিবের সাথে অভিনয় করেন সাহারা। আরও অভিনয় করেছেন- ববিতা, সাদেক বাচ্চু, মিশা সওদাগর ও কাজী হায়াৎ সহ আরো অনেকে। সিনেমাটি ২০১২ সালে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মুক্তি পায়। মুক্তির সেবছর সিনেমাটি সবচেয়ে বেশি ব্যবসা করে। এই সিনেমার গানগুলোও বেশ জনপ্রিয়তা পায় এবং সেই সাথে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারও পায়।
২০২৩ সালের ঈদুল আজহায় মুক্তি পায় শাকিব খানের “প্রিয়তমা” সিনেমাটি। হিমেল আশরাফ পরিচালিত এই সিনেমায় শাকিব খানের সাথে অভিনয় করেন ওপার বাংলার নায়িকা “ইধিকা পাউল”। সিনেমাটি এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছে যে, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে সিনেমাটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।