সভ্য সমাজে এইসব ভাবাই যায় না!!! | Secrets Of Amazon Explained | Odvut Weird

Author
0

 


পৃথিবীর সবথেকে ডেঞ্জারাস জায়গা বলা হয় অ্যামাজনকে। যেখানে টিকে থাকতে হলে করতে হয় প্রতিনিয়ত লড়াই। এটি পৃথিবীর সাতটি প্রাকৃতিক আশ্চর্যের একটি। এই জঙ্গল সম্পর্কে এমন কিছু তথ্য আছে যা জানলে চমকে উঠতে বাধ্য আপনারা।

‘অ্যামাজন’ (Amazon) রেইনফরেস্টটির নাম দিয়েছে মূলত স্প্যানিশ পর্যটক ফ্রান্সিসকো ওরেলানা। অ্যামাজনে ঘুরতে গিয়ে তিনি সেখানকার ‘ইকামিয়াবাস’ নামক মহিলা যোদ্ধাদের আক্রমণের শিকার হন। এরপরেই তিনি সেখানকার নাম দেন অ্যামাজন। তিনি মূলত সেই মহিলা যোদ্ধাদের গ্রিক মিথলজির অ্যামাজনদের সাথে তুলনা করতেই এই নামটি দিয়েছিলেন।

ধারণা করা হয় শুধুমাত্র অ্যামাজন জঙ্গলটি যদি একটি আলাদা দেশ হত, তাহলে এটি আকৃতির দিক দিয়ে পৃথিবীর ১৪তম দেশ হত। যা কিনা মেক্সিকোর থেকেও বড় এবং সৌদি আরবের থেকে কিছুটা ছোট। আরেকটু স্পষ্ট করে বললে, বৃটেন ও আয়ারল্যান্ডকে ১৭ বার এই ফরেস্টে রাখার মতো জায়গা আছে।


পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন



মোট ৯ টি দেশজুড়ে এই জঙ্গল বিস্তৃত। দেশগুলো হচ্ছে – ব্রাজিল, পেরু, কলম্বিয়া, ভেনিজুয়েলা, ইকুয়েডর, বলিভিয়া, গায়ানা, সুরিনাম ও ফ্রেঞ্চ গায়ানা। তবে এর ৬০% অবস্থিত ব্রাজিলেই।

অ্যামাজনকে বলা হয় পৃথিবীর ফুসফুস। পৃথিবীর টোটাল অক্সিজেনের ২০% এই জঙ্গল একাই উৎপাদন করে।

নিউইয়র্ক শহরে ১২ বছরে যত পানি ব্যবহৃত হয় আমাজন নদীতে তার চেয়েও বেশি পানি প্রবাহিত হয় একদিনে এবং গোটা পৃথিবীর পরিচ্ছন্ন পানির ২০ ভাগ বয়ে চলে এই নদীতে।


পৃথিবীর ফার্মাসিউটিকাল কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৫% এর কাঁচামালই আসে অ্যামাজন থেকে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এখনো পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা অ্যামাজনের ১% এরও কম ঔষধি গাছ নিয়ে কাজ করেছে! এই ১% এরও কম ঔষধি গাছের মধ্যেই রয়েছে ৪০০ টি প্রজাতি! অ্যামাজনে গড়ে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ৭৫,০০০ ধরনের গাছ পাওয়া যায়।

গাছপালাগুলো একটা আরেকটার সাথে এমন ঘন ভাবে লাগানো যে এক ফোঁটা বৃষ্টির পানি সবচেয়ে বড় গাছের উপর থেকে মাটিতে পৌঁছাতে প্রায় ১০ মিনিট সময় লেগে যায়! অ্যামাজনে এমনও জায়গা আছে যেখানে সূর্যের আলোর মাত্র ১% পৌঁছায় মাটিতে!

একসময় হেনরি ফোর্ড নামক এক ব্যক্তি আমাজন জঙ্গলে রাবার চাষের জন্যে একটি ওয়ার্ক হাউজ তৈরি করেছিলেন। যা এখন হন্টেড হাউজে পরিণত হয়েছে। এটি ফোরলান্ডিয়ার পরিত্যক্ত ভুতের বাড়ি হিসেবে পরিচিত।


পৃথিবীর প্রাণিদের ৩০% বাস করে এই জঙ্গলে। ধারণা করা হয় প্রতি তিন দিনে একটি করে নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করা হয় এখানে। এখানে রয়েছে ৩০০০ এরও বেশি প্রজাতির মাছ। আড়াই মিলিয়ন প্রজাতির পোকামাকড়। সমগ্র বৃটিশ আইলে যত পিঁপড়া রয়েছে, তার থেকে বেশি পিঁপড়ার বাস অ্যামাজনের একটি ঝাড়েই!

অনেকেই মনে করে অ্যামাজনে শুধুমাত্র বন্যপ্রাণিদেরই বসবাসতা সত্য নয়। অ্যামাজনের ৫০ টি গোত্রের মোট ২ কোটি ১০ লাখ নেটিভ মানুষের বসবাস। আধুনিক সভ্যতার সঙ্গে এদের কোনো যোগাযোগ নেই।



বিশ্বের সবচেয়ে বড় নদী হিসেবে নীল নদকে ধরা হলেও কয়েকজন বিজ্ঞানী জটিল এক জরিপের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন আমাজনের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত আমাজন নদীটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় নদী। এর দৈর্ঘ্য ৬ হাজার ৮০০ কিলোমিটার, যা নীল নদের চেয়ে ১০৫ কিলোমিটার বড়। এছাড়া আয়তনের দিক থেকেও আমাজন সবচেয়ে বড়। প্রতি সেকেন্ডে ৫৫ মিলিয়ন গ্যালন পানি আটলান্টিক মহাসাগরে প্রবাহিত করে এই নদী। প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা সাঁতরে ২০০৭ সালে ৬৬ দিনে মার্টিন স্ট্রেল নামের এক বৃটিশ নাগরিক আমাজন নদী পাড়ি দেন।

আমাজন জঙ্গলের গহিনে এমন জায়গাও রয়েছে যেখানে আজ পর্যন্ত মানুষের পা পড়েনি একটিবারের জন্যও এবং রয়েছে রহস্যময় এক ফুটন্ত নদী। এই রহস্যময় নদীর পানির তাপমাত্রা ৮৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা যে কোন প্রাণীর জন্য এক মৃত্যু ফাদ।

তবে দুঃখের ব্যাপার হচ্ছে, খনি খননের কাজ ও গাছ কাঁটার কারণে ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এই জঙ্গল। এভাবে চলতে থাকলে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে পুরোপুরি শেষ হয়ে যেতে পারে বৈচিত্র্যময় এই জঙল।

মতামত

0Comments

আপনার মতামত লিখুন (0)

#buttons=(ঠিক আছে!) #days=(20)

এই ওয়েবসাইটি ব্যবহারে আপনার অভিজ্ঞতাকে আরো উন্নত করার জন্য কুকিজ ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু আমরা কখনই আপনার সম্মতি ছাড়া আপনার কোনো ডাটা সংরক্ষণ করব না। আরো জানুন
Ok, Go it!