সুলতান’স ডাইন কুকুরের কাচ্চি খাওয়ায়। এই ইনসিডেন্টে মাস খানেক আগে সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় হয়ে গিয়েছিলো। নিশ্চয়ই মনে আছে? পরে দেখা গেলো আসলে সবই ভুয়া কথা-বার্তা। দুজন সাধারণ ক্রেতার অভিযোগ থেকেই ঘটনা ডালপালা মেলেছিল। কন্সপিরেসি থিওরিস্টদের মতে, এই পুরো ঘটনাটাই ছিল আসলে একটি প্রোপাগাণ্ডা। এর পেছনে মূল হাত ছিল সুলতান’স ডাইনের রাইভাল রেস্টুরেন্টগুলোর। সেটি হতে পারে কাচ্চি ভাই, গ্র্যান্ড নবাব অথবা পাগলা বাবুর্চির মতো কোন ব্র্যান্ড। এই প্রোপাগাণ্ডা জিনিসটা আসলে কি? প্রোপাগাণ্ডা ব্যবহারের পেছনে মূল উদ্দেশ্যই বা কি থাকে?
প্রোপাগাণ্ডা হচ্ছে গুজবের এক্সটেন্ডেড ভার্সন। নির্দিষ্ট
কোন পার্সোনাল, বিজনেস অথবা পলিটিকাল স্বার্থের জন্য ইচ্ছে করে বড় আকারে কোন ভুল
বা মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেওয়াই হচ্ছে প্রোপাগাণ্ডা। প্রিন্ট মিডিয়া, সিনেমা, ব্লগ,
সাহিত্য, আর্ট, সোশ্যাল মিডিয়া যে কোনো কিছুই হতে পারে প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানোর
মাধ্যম।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
সুলতান’স ডাইনের কেসে যেমন বেঁছে নেওয়া হয়েছিলো সোশ্যাল
মিডিয়া। মার্কেটিং কিংবা প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়াই এখন সবথেকে
পারফেক্ট মাধ্যম।
আবার মানুষের মুখে মুখেও ছড়ানো হতে পারে প্রোপাগাণ্ডা।
ধরুন, কোন একভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হলো লবণের দাম তরতর করে বেঁড়ে যাবে। কিন্তু আসলে তা
মিথ্যা। মানুষ আগে ভাগে লবণ কেনার জন্য ভীর করতে থাকবে বাজারে। মুখে মুখে ছড়িয়ে
পড়বে এই কথা। এতে করে আলটিমেটলি লাভটা হবে লবণ ব্যবসায়ীদের। তাদের প্রোপাগাণ্ডা
ছড়ানোও সফল হবে।
বিভিন্ন সময়ে কোল্ড ওয়ার বা স্নায়ুযুদ্ধগুলোতেও প্রোপাগাণ্ডার
ব্যবহার দেখা গেছে। যখন দুই পক্ষ সরাসরি লড়াইয়ে না গিয়ে ইনডিরেক্টলি বা মেন্টালি
লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে তখন সেই অবস্থাকে বলে কোল্ড ওয়ার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে
বিভিন্ন দেশের মধ্যে ব্যাপক আকারে কোল্ড ওয়ার চলতে দেখা গিয়েছিলো।
সেই সময় ব্রিটিশ সরকার প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানোর জন্য নকল
প্রমাণ তৈরি করেছিল। ১৯৬৩ সালে একবার খবরের শিরোনাম হয়েছিলো যে বুলগেরিয়ায় থাকা
আফ্রিকান ছাত্ররা এক্সট্রিমিস্টদের আক্রমণের শিকার হয়ে একসাথে দেশ ছেড়ে
পালাচ্ছে। সেসময় আইআরডি ভাবল এই ঘটনাকে ঐ অঞ্চলের মানুষের ক্ষোভ বাড়াতে কিভাবে
কাজে লাগানো যায়। সরকারী সংস্থার ভুয়া লেটারমার্ক দেওয়া কাগজে আইআরডি শত শত
সংবাদপত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রেস রিলিজ পাঠায়। ব্রিটিশ
কূটনীতিকরা ব্যবহার করে এমন ব্যাগে করে পাঠানো হয়েছিল সেই প্রেস রিলিজ। সংবাদ
বিজ্ঞপ্তির একটি লাইন ছিল এমন, "আফ্রিকানরা আধার থেকে বের
হয়ে আসছে, যেখানে থাকার সময় তারা জানতোই না যে খাদ্য,
জ্বালানি কিংবা কাপড় ফ্রিতে পাওয়া যায় না।"
এ খবর প্রকাশিত হবার পর আফ্রিকান ছাত্রদের মনে আগুন জ্বলে
উঠে। এর ফলে বিরাট উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। যদিও পরে জানা গিয়েছিল, খবরটি ছিল একেবারেই ভুয়া।