মেকানিক থেকে নায়ক !! Irrfan Khan

Author
0

 


“ইরফান খান”। ১৯৬৭ সালের ৭ জানুয়ারিতে রাজস্থান জয়পুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা। ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে তিনি তার অতুলনীয় অভিনয়ের জন্য পরিচিত। বলিউড, ব্রিটিশ ভারতীয়, হলিউড এবং একটি তেলুগু চলচ্চিত্রে তিনি কাজ করছেন। ৩৫ বছরের কর্মজীবনে তিনি ৫০টিরও বেশি দেশীয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন, এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও চারটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার-সহ অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন। চলচ্চিত্র সমালোচক, সমসাময়িক অভিনয়শিল্পী ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা তাকে ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনয়শিল্পী বলে গণ্য করে থাকেন। ২০১১ সালে ভারত সরকার তাকে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা “পদ্মশ্রী”তে ভূষিত করেন।


পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন



১৯৮৮ সালে “সালাম বম্বে” চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি অভিনয় জগতে আসেন। এরপর ।“দ্য ফগ”, “বিল্লু”, “লাইফ অব পাই”, “পিকু”, হিন্দি মিডিয়াম”, “ডুব”, “আংরেজি মিডিয়াম” সিনেমায় তিনি অভিনয় করেন। ইরফান খান ভালো একজন অভিনেতার পাশাপাশি ভালো একজন ব্যাক্তি ছিলেন। তার অভিনয় সবাই দেখলেও তার সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্যও আছে। ইরফান ও তার এক বন্ধু সতীশ শর্মা ভালো ক্রিকেট খেলতেন এবং ইরফান পরবর্তীতে ভারতে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের ভিত্তি হিসেবে সুপরিচিত “সিকে নায়ুডু” টুর্নামেন্টে অনূর্ধ্ব ২৩ দলের জন্য নির্বাচিত হন। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থায়নের অভাবে তিনি এই আসরে খেলতে পারেননি।

অভিনেতা হওয়ার আগে ইরফান খান ছিলেন এসি মেকানিক। ডাক পড়লে মুম্বাইয়ের এবাড়ি-ওবাড়ি ঘুরে এয়ার কন্ডিশন মেরামত করতেন। এমনিভাবে একবার ডাক পড়েছিল বলিউড তারকা রাজেশ খান্নার বাড়িতে।

 

বাংলাদেশি নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘ডুব’-এ অভিনয় করেন ইরফান। অনেকে মনে করেন, এটিই অভিনেতার প্রথম বাংলা সিনেমা। আদতে কিন্তু তা নয়, ইরফান প্রথম বাংলা সিনেমা করেন সেই ২০০৪ সালে। ‘শ্যাডোজ অব টাইম’ নামের সিনেমাটির পরিচালক ছিলেন জার্মান নির্মাতা “ফ্লোরিয়ান গ্যালেনবার্গার”। কলকাতায় শুটিং হওয়া সিনেমাটিতে ইরফান ছাড়াও ছিলেন প্রশান্ত নারায়ণ, তন্নিষ্ঠা চ্যাটার্জি। মীরা নায়ারের ‘দ্য নেশমেক’ দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি পান অভিনেতা। একবার অস্কার অনুষ্ঠানের সময় প্রখ্যাত হলিউড অভিনেত্রী “জুলিয়া রবার্টস” ইরফানের কাছে গিয়ে ‘দ্য নেমশেক’-এ তার অভিনয়ের প্রশংসা করেন। মীরা নায়ারের সঙ্গে আরেকটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন ইরফান। যে সিনেমাটির কথা অনেকেরই জানা নেই। ‘কোশার ভেজিটেরিয়ান’ নামের ছবিটি ছিল ২০০৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘নিউইয়র্ক, আই লাভ ইউ’-তে। যেটি ছিল ১১টি স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমার সংকলন। সিনেমাটিতে ইরফানের সঙ্গে অভিনয় করেন অস্কারজয়ী তারকা “নাটালি পোর্টম্যান”।

 


ইরফান খানের আরেকটি বহুল প্রশংসিত সিনেমা ‘দ্য লাঞ্চবক্স’। অনেকেরই জানা নেই, সিনেমাটি মর্যাদাপূর্ণ “টরন্টো ফিল্ম ক্রিটিকস অ্যাসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড” জেতে। যে রেকর্ড নেই আর কোনো ভারতীয় সিনেমার।

‘দ্য লাঞ্চবক্স’ ও ‘ডি-ডে’ সিনেমায় অভিনয়ের কারণে পরবর্তিতে কোনো শিডিউল না থাকায় “ক্রিস্টোফার নোলান”এর মতো পরিচালকের ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন ইরফান। দীর্ঘ একবছর তিনি “নিউরো এন্ডোক্রিন ক্যান্সার”এ ভোগেন। লন্ডনে এক বছর চিকিৎসা গ্রহণের পর তিনি ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতে ফিরে আসেন। ২০২০ সালের ২৮শে এপ্রিল রেক্টাম ক্যান্সারের জন্য তাকে মুম্বাইয়ে অবস্থিত “কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতাল”এ ভর্তি করা হলে, তিনি ২৯শে এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

 

২০০৮ সালে ‘মার্ডার অ্যাট তিসরি মঞ্চিল ৩০২’ নামের একটি সিনেমায় অভিনয় করেন ইরফান। ছবিটির কাজ শেষ হয় পরের বছরই। কিন্তু মুক্তি পেতে পেতে লেগে যায় এক দশকেরও বেশি। শেষ পর্যন্ত ইরফানের মৃত্যুর পর ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সিনেমাটি মুক্তি পায়।

মতামত

0Comments

আপনার মতামত লিখুন (0)

#buttons=(ঠিক আছে!) #days=(20)

এই ওয়েবসাইটি ব্যবহারে আপনার অভিজ্ঞতাকে আরো উন্নত করার জন্য কুকিজ ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু আমরা কখনই আপনার সম্মতি ছাড়া আপনার কোনো ডাটা সংরক্ষণ করব না। আরো জানুন
Ok, Go it!