পুরোনো বাড়ি। দেয়ালের চুনকাম খসে গেছে।
জমেছে সবুজ কালো শ্যাওলা। ভাঙা দরজা। কিছু জানালার কাচও ভাঙা। ভেতরে অন্ধকার। কাছে
গিয়ে দাড়ালেই গা ছমছম করে উঠে। ভূতের বাড়ির কথা শুনলে তো ঠিক এমনটাই চোখের সামনে ভেসে
ওঠে। কখনো কি শুনেছেন! এমনই এক ভূতের বাড়ি, যে বাড়ির দামই ২০০ কোটি টাকা। শুনে অবাক
হবেন যে, বাড়িটি তৈরির পরে কেউই থাকেনি। অনেকে বলে, ভূতেদের থাকার জন্যই তৈরি করা হয়েছে
বাড়িটি। এতো সব শোনার পর হয়তো বাড়িটা দেখতে আপনার ইচ্ছে করছে। জানতে ইচ্ছে করছে বাড়ির
ঠিকানা। ২০০ কোটি টাকার এই বাড়িটি আছে বাংলাদেশেই।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
প্রথম দেখাতে যে কারো মনে হবে এটি কোনো
রাজকীয় বাড়ি। ব্যতিক্রমধর্মী এই ডিজাইনই মূলত সকলকে বাড়িটির প্রতি আকৃষ্ট করে। তবে
বাড়িটির কাজ এখনো অব্দি শেষ হয়নি। ৫ তলা এই বাড়িটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিলো ২০০২
সালে। রামপুরার বনশ্রী বি ব্লকের ১৫ নম্বর এই বাড়িটির মালিক এক যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী।
বাড়ির মালিক যখন ঢাকা আসেন তখনই বাড়িটির নির্মাণকাজ চলে, তিনি না থাকলে কাজ বন্ধ থাকে।
দিনের পর দিন নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় স্থানীয় জনসাধারানের মনে নানা জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি
হয়েছে। সবাই এই বাড়িটিকে ‘ভূতের বাড়ি’ বলেই চেনে। তবে বাড়ির সামনের সাইবোর্ডে স্পষ্ট
করে লেখা রয়েছে, ‘এ বাড়ি প্রকৃতির সৌন্দর্যকে দেখে ও দেখায়। সুন্দরের গুণগান গায়। এ
বাড়ি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অফুরান প্রকাশ’। প্রকৃতি থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই বাড়ির নকশা
করা হয়েছে বলে দাবি বাড়ির মালিকের। তবে যা রটে, তার কিছু তো ঘটে। রাতের বেলায় বাড়িটির
সামনে দিয়ে চলাচল করে না অনেকেই। এলাকাবাসীদের থেকে জানা যায়, বাড়ির মালিক বিয়ে করেছিলেন
এক খ্রীষ্টান মেয়েকে। আরও জানা যায়, বাড়ির কেয়ারটেকার নাকি একবার অদ্ভুদভাবে সিড়ি থেকে
পড়ে গিয়েছিলেন। এরপর থেকে সেই কেয়ারটেকারও থাকে না বাড়িটিতে। বাড়ির ভেতরটা ঘুটঘুটে
অন্ধকার। ভেতরে কি আছে সেটাও বোঝা যায় না বাইরে থেকে। ভেতরে ঢোকার সাহসও করে না কেউ।
বর্তমানে বাড়িটি দেখা শোনার জন্য “আবুল কালাম ভূইয়া” নামে এক বৃদ্ধ থাকেন। তার দাবী
কেউ কেউ হিংসে করে ভূতের বাড়ি নামে এসব বদনাম ছড়াচ্ছে। আবুল কালাম থাকে বাড়িটির চার
তলায়। সংবাদ মাধ্যম কর্মীরা কৌতুহলবসত সেখানে যেতে চাইলেও বাড়ির ভিতরে ঢুকতে দিতে রাজি
হননি আবুল কালাম। কি আছে ভেতরে? কি রহস্য আগলে আছে বাড়িটি? বাড়ির মালিকেরই বা কি উদ্দেশ্য
ছিলো বাড়িটি তৈরির পেছনে? আবুল কালামই বা কেনো ভেতরে ঢুকতে দিতে রাজি হয় না? ফাঁকা
বাড়ি? ভেতরের অন্ধকার যেন বলতে চায় কিছু একটা। স্থানীয়রা অনেকে বলেন, বাড়িটি আসলে পুরোটাই
ভোগাস। মানুষের কৌতুহল তৈরির জন্যই বাড়িটি এভাবে তৈরি করা। আবার কেউ কেউ বলেন, বাড়িটির
ভেতরে অনেকেই যাওয়ার চেষ্টা করেছে, তবে কোনোনা কোনোভাবে তারা সফল হয়নি।
এতো এতো প্রশ্নের জাল ছড়িয়ে বাড়িটি ঠায়
দাঁড়িয়ে আছে। আজ পর্যন্তও ভেদ করা যায়নি এর রহস্য। চাইলে যেতে পারেন আপনিও। দেখে আসতে
পারেন এই রহস্যময় বাড়িটিকে। হয়তো কিছু একটার স্বাদ আপনি অনুভব করবেন।