পৃথিবীর ১০ টি নিষিদ্ধ স্থান, যেখানে ভুলেও যাওয়া যাবে না || 10 Forbidden Places In The World

Author
0

 


বলেন দেখি, বাংলাদেশের কোন জায়গায় যাওয়া যে কোনো মানুষের জন্য নিষিদ্ধ? ভেবে পাচ্ছেন না তো? থাক, আমিই বলে দিচ্ছি। লালবাগ কেল্লার ভেতরে একটি সুরঙ্গ আছে। যেখানে গেইটে তালা মেরে সিল করে রাখা আছে। এর ভেতরে কারো যাওয়ার অনুমতি নেই। তবে পৃথিবীজুড়ে এরথেকেও ভয়ংকর কয়েকটি জায়গা আছে, যেখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশ করা নিষেধ।


নাম্বার টেন - দ্য হন্টেড আইল অফ পোভেগলিয়া, ইতালি

১৪শ শতাব্দীতে ভয়াবহ প্লেগ রোগে আক্রান্ত হয় ইতালির পোভেগলিয়ায় বসবাসকারী লোকজন। আক্রান্তদের জীবিত অবস্থায় কাদার মধ্যে পুতে রাখা হত অথবা জীবিত পুড়িয়ে মেরে ফেলা হত। এরপর ১৭শ শতাব্দীতে আবারো সেখানে ‘ব্ল্যাক ডেথ’ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকেই এই দ্বীপটিকে অভিশপ্ত মনে করা হয়। মানুষজনের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় দ্বীপটি।


পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন



নাম্বার নাইন - স্নেক আইল্যান্ড, ব্রাজিল

উপকূল থেকে ২৫ মাইল দূরে ব্রাজিলের সাও পাওলোতে অবস্থিত এই দ্বীপটির আসল নাম ইলহা দ্য কুইমাদা গ্রান্দে। এই দ্বীপে রয়েছে হাজার হাজার বিষাক্ত সাপ। তাই স্থানীয়রাও এই দ্বীপের কাছে ঘেষতে সাহস পায় না! এই দ্বীপে প্রায় ৫০০০ এরও বেশি প্রজাতির বিষাক্ত সাপ রয়েছে। যার মধ্যে কুখ্যাত ‘ল্যান্সহেড’ সাপের সংখ্যাই ৪০০০ এর মত। ১৯২০ সালের দিকে দ্বীপটিতে কিছু মানুষের আসা যাওয়া থাকলেও আশঙ্কাজনক ভাবে সাপের কামড়ে মৃত্যুর হার বাড়তে থাকে। এরপরেই ব্রাজিল সরকার সাধারণ মানুষের জন্য এই দ্বীপটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে!


নাম্বার এইট - ডুলস ঘাঁটি, অ্যামেরিকা

নিউ মেক্সিকোর কলোরাডো সীমান্তের কাছেই অবস্থিত অদ্ভুত একটি শহর ডুলস। মাত্র ২৬০০ এর মতো নেটিভ আমেরিকান থাকে সেখানে। জিওগ্রাফিকাল সুবিধার কারনে এখানে মাটির নিচে একটি ঘাঁটি আছে বলে বিশ্বাস করা হয়! এই আন্ডারগ্রাউন্ড বেইজে অত্যাধুনিক এবং অকল্পনীয় প্রযুক্তির ব্যবহার করে বিশেষ এক রিসার্চ ফ্যাসিলিটি তৈরি করা আছে। যেখানে অবিশ্বাস্য সব জিনিসপত্র নিয়ে রিসার্চ করা হয়! এখানে গবেষনার অন্যতম বিষয় হচ্ছে এলিয়েন! এই ঘাঁটিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে নিষিদ্ধ জায়গাগুলোর মধ্যে একটি। এর আশেপাশে আছে খুবই কড়া সুরক্ষা ব্যবস্থা।


নাম্বার সেভেন - ভ্যাটিকান সিক্রেট আর্কাইভ, ভ্যাটিকান সিটি

যুগযুগ ধরেই ভ্যাটিকান সিটি নিয়ে মানুষের রয়েছে প্রচুর কৌতুহল। সেই যীশু খ্রিষ্টের আমলের আগে থেকেই পৃথিবীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাসের সাক্ষী এই ভ্যাটিকান। এই ভ্যাটিকান সিটিরই একটি সিক্রেট আর্কাইভ আছে যেখানে ক্যাথোলিক চার্চের বিভিন্ন গোপন ডকুমেন্ট স্টোর করে রাখা হয়। ২০১৯ সাল থেকে এই জায়গাটিকে ভ্যাটিকাল অ্যাপোস্টোলিক আর্কাইভ বলে ডাকা হয়। এটি “স্টোর হাউজ অব সিক্রেট” নামেও পরিচিত। খুব অল্প সংখ্যক স্কলারই এই জায়গায় ঢুকতে পারেন। তাও পোপের বিশেষ অনুমতি নিয়ে। ৮৫ কিমি দীর্ঘ এই জায়গাটিতে প্রায় ৮৪,০০০ বই আছে। বেশিরভাগ ডকুমেন্টই রাখা হয়েছে মাটির নিচে। ড্যান ব্রাউন তার বিখ্যাত রবার্ট ল্যাংডন সিরিজের ‘অ্যাঞ্জেলস অ্যান্ড ডেমন্স’ ও ‘দ্য ডা ভিঞ্চি কোড’ নামক কন্সপিরেসি থ্রিলার বই দুটোতে ভ্যাটিকান সিটি ও ইলুমিনাটি নিয়ে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন।


নাম্বার সিক্স – ভানগড় ফোর্ট, ভারত

টেকনিকালি রাজস্থানের ভানগড় ফোর্ট পুরোপুরি নিষিদ্ধ না। দিনের বেলায় ট্যুরিস্টরা এই এলাকাটি ঘুরে দেখতে পারে। তবে রাতের বেলা এই এরিয়ার ভেতরে ঢোকা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। ভারতের সবথেকে ভূতুড়ে জায়গাগুলোর মধ্যে একটি মানা হয় ভানগড় ফোর্টকে। লোকাল মানুষজন বলে যারাই বাহাদুরি করে নিয়ম ভেঙ্গে সেখানে রাত কাটাতে যায়, তাদেরকেই নাকি আর খুঁজে পাওয়া যায় না। রহস্যজনকভাবে গুম হয়ে যায়, অথবা অ্যাক্সিডেন্টে মারা যায়।


নাম্বার ফাইভ – লাসৌ কেইভ, ফ্রান্স

ইউনেস্কোর সবগুলো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট কিন্তু পাবলিকের জন্যে খোলা না। যেমন, ফ্রান্সের লাসৌ কেইভ। যেখানে ১৭ হাজার বছর আগের অমূল্য কিছু কেইভ আর্ট আছে। ১৯৬৩ সাল থেকে এখানে সাধারণ মানুষের ঢোকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ সেই সময়ে বেশ বড় সংখ্যক ট্যুরিস্টদের মধ্যে ফাঙ্গাল ইনফেকশন দেখা দিয়েছিল। তবে ট্যুরিস্টরা ভেতরে ঢুকতে না পারলেও, তাদের দেখার জন্য রেপ্লিকা আর্ট তৈরি করা হয়েছে।


নাম্বার ফোর – দ্য ডুমসডে ভল্ট, নরওয়ে

‘দ্য ডুমসডে ভল্ট’ হচ্ছে নরওয়ের Svalbard আইল্যান্ডের মাঝে অবস্থিত একটি সিড ব্যাংক। এই ভল্টের ভেতরে বিভিন্ন রকম গাছের বীজ রাখা আছে। এর পেছনের মোটিভটা বেশ ইন্টারেস্টিং। পৃথিবীতে যদি কোন অ্যাপোকালিপ্স ঘটে বা কোন ওয়ার্ল্ডওয়াইড এমার্জেন্সি সিচুয়েশন তৈরি হয়, তাহলে যেন প্রকৃতিকে রক্ষা করা যায় সেই উদ্দেশ্যেই এই ভল্ট বানানো হয়েছিল। পৃথিবীর বিভিন্ন কোণা থেকে বক্সে করে বিভিন্ন উদ্ভিদের বীজ পাঠানো হয়েছে এই ডুমসডে ভল্টে রাখার জন্য। সাধারণ কোন মানুষের এই ভল্টের ভেতরে প্রবেশ নিষিদ্ধ। তবে স্পেশাল গেস্টরা নির্দিষ্ট কিছু দিনে এর ভেতরে ঢুকতে পারে।


নাম্বার থ্রি – সার্টসি আইল্যান্ড, আইসল্যান্ড

সার্টসি আইল্যান্ড আইসল্যান্ডের সাউথ কোস্টে অবস্থিত একটি দ্বীপ। এটি তৈরি হয়েছিল একটি ভলকানোর বিস্ফোরণের ফলে। যা চলেছিল টানা চার বছর ধরে। সার্টসির আরেকটি পরিচয়ও আছে। এটি পৃথিবীর সবথেকে নতুন দ্বীপ। বর্তমানে, শুধুমাত্র গুটিকয়েক সায়েন্টিস্ট ও জিওলজিস্ট ছাড়া কেউ এই দ্বীপের ভেতরে ঢুকতে পারে না।




নাম্বার টু – চেরনোবিল, ইউক্রেন

এপ্রিল ২৬, ১৯৮৬। ইউক্রেনের চেরনোবিলের কাছে নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টে একটি ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। সেই সময় এটি ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ। চেরনোবিলের এই ঘটনাকে পৃথিবীর ইতিহাসের সবথেকে ভয়ানক নিউক্লিয়ার অ্যাক্সিডেন্ট বলা হয়। পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে রেডিয়েশন। যার ফলে পরবর্তী সময়ে প্রায় ১ মিলিয়ন মানুষ ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। ঘটনার প্রায় ৩৭ বছর কেটে গেলেও, এখনও ক্লিন আপ প্রজেক্ট শেষ হয় নি! সেই পাওয়ার প্ল্যান্টের ডিরেক্টর ধারণা করেছিল, চেরনোবিল আগামী ২০ হাজার বছরেও মানুষের বসবাসের যোগ্য হবে না! এক্সপ্লোশনের ফলে এতটাই ভয়াবহ হয়ে গিয়েছে পরিবেশে থাকা রেডিয়েশনের মাত্রা। সবথেকে ভয়াবহ ব্যাপার হচ্ছে, এই এলাকার আশেপাশে বাই চান্স কখনো আগুন লাগলে ১৯৮৬ এর থেকেও বেশি পরিমাণ রেডিওঅ্যাকটিভ ম্যাটেরিয়াল ছড়িয়ে পড়বে পৃথিবীতে। যার কারণে দেখা দেবে গ্লোবাল এক ডিজাস্টারের।


নাম্বার ওয়ান - এরিয়া ফিফটি ওয়ান, অ্যামেরিকা

নিষিদ্ধ জায়গাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিচিত এরিয়া ফিফটি ওয়ান। নেভাদা মরুভূমির মাঝখানে লুকানো এই এলাকাটি একটি গোপন মার্কিন সামরিক ঘাটি। যার উদ্দেশ্য কেউই জানে না! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাবি এই সামরিক ঘাটিতে তারা অস্ত্রশস্ত্র ও যুদ্ধ বিমান নিয়ে রিসার্চ করে। তবে লোকজন এই কথায় বিশ্বাস করতে নারাজ। রিসার্চের কাজে নিশ্চয়ই এত গোপনীয়তা ও সিকিউরিটি থাকার কথা না। তাই এরিয়া ফিফটি ওয়ানকে নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন রকমের কন্সপিরেসি থিওরি। অনেকে মনে করে এর ভেতরে এলিয়েনদের নিয়ে গবেষনা করা হয়। এমনকি অনেকে এ-ও ভাবে এলিয়েনরা নাকি মার্কিনিদের সাথে এখানে এসেই যোগাযোগ করে! এই অঞ্চলের আশেপাশে অনেকেই এলিয়েন ও ইউএফও ওঠানামা করতে দেখেছে বলে দাবিও করেছে!

মতামত

0Comments

আপনার মতামত লিখুন (0)

#buttons=(ঠিক আছে!) #days=(20)

এই ওয়েবসাইটি ব্যবহারে আপনার অভিজ্ঞতাকে আরো উন্নত করার জন্য কুকিজ ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু আমরা কখনই আপনার সম্মতি ছাড়া আপনার কোনো ডাটা সংরক্ষণ করব না। আরো জানুন
Ok, Go it!