পত্রিকা কিংবা ম্যাগাজিনের পলিটিকাল পাতায় কিছু কিছু স্কেচ কিংবা আর্ট থাকে, সেগুলো কখনো খেয়াল করে দেখেছেন? অথবা সিম্পসন, রিক অ্যান্ড মর্টি, বোজ্যাক হর্সম্যান কার্টুনগুলো কখনো খেয়াল করে দেখেছেন? এগুলো নিছক কমেডি মনে হলেও, স্যাটায়ারের পারফেক্ট এক্সাম্পল। এখন কথা হচ্ছে এই স্যাটায়ার জিনিসটা আসলে কি?
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
সোজা বাংলায় স্যাটায়ার হচ্ছে
কমেডির আদলে গভীর কোন মেসেজ দেওয়া। একে একটি মুভমেন্ট হিসেবেও চিন্তা করা যায়। পত্রিকা কিংবা
ম্যাগাজিনে কার্টুনিস্টরা যেমন পলিটিকাল অথবা সোশ্যাল স্যাটায়ার কার্টুন আকে।
দেখতে নিছক ফানি আর্ট মনে হলেও সেগুলোর ভেতরে গভীর কোন মেসেজ থাকে। বেসিক্যালি যেই
কথাটা সহজভাবে বললে আপনি কেইস খেয়ে যেতে পারেন সেটাকেই সার্কাস্টিক ওয়েটে
প্রেজেন্ট করে বেঁচে যেতে পারেন। সেটা হতে পারে সমাজে চলমান কোন সমস্যা অথবা
রাজনৈতিক কোন ক্রিটিসিজম। স্যাটায়ারকে এক দিক দিয়ে সেন্সরিং-ও বলা যায়। মারাত্মক
লেভেলের সমালোচনা করে ফেলা যায় কার্টুন কিংবা কমেডি লেখা-কথার মাধ্যমে।
উদাহরণ হিসেবে জর্জ অরওয়েলের
অ্যানিমেল ফার্ম বইটির কথা বলা যায়। একটি অ্যানিমেল ফার্মের ভেতরকার
এনভায়রনমেন্টের মাধ্যমে লেখক মানবজাতির বিভিন্ন বৈষম্যকে তুলে ধরেছেন।
কার্টুনের কথা চিন্তা করলে জেমস গিলরের দ্য প্লাম্ব পুডিং ইন ডেঞ্জারের কথা চলে আসে। এখানে দেখা যায় নেপোলিয়ন ও ব্রিটিশ প্রাইম মিনিস্টার উইলিয়াম পিট পৃথিবীর মতো দেখতে একটি ফল কেটে কেটে খাচ্ছে। আর্টিস্ট মূলত জিওপলিটিকাল পাওয়ারকে ব্যঙ্গ করেছেন এখানে। এছাড়াও স্যাটায়ার এলিমেন্ট ব্যবহার করার আরো একটি পরিচিত প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে সিনেমা। যুগ যুগ ধরে স্যাটায়ার জনরার বহু গুরুত্বপূর্ণ সিনেমা দেখা গেছে। যেমন - দ্য ট্রুম্যান শো, ডোন্ট লুক আপ, বার্ডম্যান, গেট আউট, বিয়িং জন মালকোভিচ, দ্য ডেথ অফ স্ট্যালিন, ডক্টর স্ট্রেঞ্জলাভ, দ্য ডিক্টেটর। এগুলোর কোনোটিতে যুদ্ধ, কোনোটিতে ওয়ার্ল্ড পলিটিক্স আবার কোনোটিতে ধর্মকে কমেডির মোড়কে ব্যঙ্গ করা হয়েছে। এখন কথা হচ্ছে স্যাটায়ার কেন দরকারি? স্যাটায়ার আসলে এমন একটি মাধ্যম যার দ্বারা প্রতিপক্ষকে ইনডিরেক্টলি অ্যাটাক করা যায়, কিন্তু তার গভীরতা হয় অনেক। এতে করে সমাজে বিশৃঙ্খলা এড়ানো যায়। অনেক মাথামোটা পলিটিশিয়ান অথবা বিভিন্ন সেক্টরের পাওয়ারফুল লোকজনের মাথায় স্যাটায়ার জিনিসটা ঠিক ঢোকে না। সেক্ষেত্রে প্রতিপক্ষও বুঝলো না, কিন্তু জনসাধারণের সামনে তার কাজের সমালোচনা ঠিকই করা হলো। অর্থাৎ, সাপও মরলো, লাঠিও ভাঙলো না। বর্তমান দুনিয়ার পার্সপেক্টিভে পাওয়ারফুল কোনো কিছুর সমালোচনা করা বলতে গেলে অসম্ভবের পর্যায়েই পড়ে। এজন্যই স্যাটায়ার খুবই দরকারি একটি মুভমেন্ট।