অনন্যা পান্ডে, সারা আলি খান, অর্জুন কাপুর – এদেরকে
হরহামেশাই দেখায় যায় সোশ্যাল মিডিয়াতে ট্রল হতে। কারণ বলিউডে এদের এন্ট্রি হয়েছে
নেপোটিজমের মাধ্যমে। বাজে অভিনয় সেই আগুনে আরো ঘি ঢালে। বলিউড আর নেপোটিজম
বর্তমানে একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এই নেপোটিজম জিনিসটা আসলে কি? এটি কি শুধু
বলিউডেই সীমাবদ্ধ? আজকের ভিডিওতে কথা বলবো এসব নিয়েই। তো চলুন শুরু করা যাক।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
নেপোটিজম কথাটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ নেপোস থেকে। যার অর্থ
ভাইপো অথবা ভাগ্নে। সোজা বাংলায় নেপোটিজম হচ্ছে স্বজনপ্রীতি। অর্থাৎ ক্লোজ কোনো
রিলেটিভসের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা নিয়ে ওয়ার্ক প্লেসে সুবিধা ভোগ করা।
নেপোটিজম শব্দটি শুনলেই আমাদের মাথায় চলে আসে বলিউডের কথা।
বলিউডের বেশিরভাগ নায়ক-নায়িকারাই নেপোটিজমের মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখে। তাদের
নিয়ে সমালোচনাটা বেশি হয় মূলত বাজে অভিনয়ের কারণে। যেমন – ইয়াশ চোপড়ার ছেলে উদয়
চোপড়া, জিতেন্দ্রর ছেলে তুষার কাপুর, সাইফ আলি খানের মেয়ে সারা আলি খান, আদিত্য
পাঞ্চোলির ছেলে সুরাজ পাঞ্চোলি, বনি কাপুরের ছেলে অর্জুন কাপুর, সালমান খানের ভাই
আরবাজ খান ও সোহেল খান, প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার বোন পরিণীতি চোপড়া। এছাড়াও নেপোকিডদের
প্রোমোট করার ক্ষেত্রে গডফাদারের ভূমিকা পালন করেন কারান জোহার।
এখন কথা হচ্ছে, নেপোটিজমের কথা উঠলেই যে সবাই শুধু বলিউড
বলিউড করে, নেপোটিজম কি শুধু বলিউডেই সীমাবদ্ধ?
আসলে নেপোটিজম আমাদের সমাজের সর্বত্রই। স্পেশালি আমাদের
ভারতীয় উপমহাদেশে। বাংলাদেশেই যেমন চাকরীর বাজারে ‘মামা-চাচার জোড়’ টার্মটি
সার্কাস্টিকালি খুবই জনপ্রিয়। মামা-চাচার জোড় থাকলে সহজেই চাকরী পাওয়া যায়। চাকরীর
বাজারে এক্সট্রা সুবিধাও ভোগ করা যায়। এছাড়াও ভালোভাবে দেখলে রাজনীতিসহ সমাজের
বিভিন্ন ক্ষেত্রেই নেপোটিজমের এক্সাম্পল দেখতে পাওয়া যায়।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, বলিউডের নেপোটিজম নিয়ে সোশ্যাল
মিডিয়াতে যারা হাউকাউ করে, তারা নিজেরাও জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেপোটিজমের
সুবিধা ভোগ করে বেড়ায়। মোট কথা, নেপোটিজমের পাশাপাশি হিপোক্রিসিও আমাদের একটা
জাতীয় রোগে পরিণত হয়েছে।
যে কালচারে যত বেশি নেপোটিজম, সেখানে রিয়েল ট্যালেন্টরা তত
বেশি বঞ্চিত হয়। ধরেন, কোন একটি চাকরীর ইন্টার্ভিউতে লাস্ট স্টেজের ভাইভা রাউন্ড
চলছে। টিকে আছে দুজন। একজনের সিভি, পোর্টফোলিও থেকে শুরু করে সবকিছুই দুর্দান্ত।
অন্যদিকে যোগ্যতার দিক দিয়ে আরেকজন তার থেকেও অনেকটা পিছিয়ে। কিন্তু কোম্পানিটা
তার আপন মামার। অ্যাজ আ রেজাল্ট, যোগ্যতায় পিছিয়ে থেকেও চাকরীটা জুটে গেলো তার
কপালে। লং টার্মে চিন্তা করলে তাই নেপোটিজম সমাজের জন্য ভাইরাসের মতো।