সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষ দাবী করে আসছে তারা মহাকাশ থেকে নেমে আসা বিভিন্ন ধরনের অদ্ভুত বস্তু দেখেছে। প্রাচীন গুহা থেকে শুরু করে মিশরের পিরামিডের গায়েও বিভিন্ন ধরনের এলিয়েন এবং অদ্ভুত স্পেসশিপের চিত্র পাওয়া যায়। কিন্তু এর কতটা সত্য আর কতটা কল্পনা। চলুন দেখে নেওয়া যাক এলিয়েন নিয়ে বিশ্বের নেতাদের লুকোচুরির খেলা।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
ইউএফও মানে আন আইডেন্টিফাইড ফ্লাইং অবজেক্টস বা অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু। পৃথিবিতে বহু সময় বহুখানে এরকম বস্তু উড়তে দেখা গেছে। অনেক সময় কেবল সেই উড়ন্ত বস্তুর গতির শব্দ পাওয়া যায়। মাঝে মধ্যে আকাশে অদ্ভুত আলোর ঝলকানিও দেখতে পাওয়া যায়, যা মানুষের মনে গভীর রহস্যের সৃষ্টি করে।
সাধারণ মানুষ এলিয়েন বা এলিয়েনশিপ দেখার দাবী কিছুদিন পর পর করলেও দায়িত্বশীল বিজ্ঞানিরা এ বিষয়ে একদম চুপ। তারা যেনো এলিয়েন এর নামও শোনেননি কখনো। কিন্তু কেনো তারা চুপ? এর পেছনের কারনটা কী? বিচিত্র আকারের নভীযানের মতো দেখতে বস্তুগুলো তাহলে কী?
বিচিত্র আকারের নভোযানের মতো দেখতে এই রহস্যময় জিনিসগুলো খুব দ্রুত গতিতে উড়ে এবং আকাশেই হঠাত করে উদিত হয়ে হঠাত করে গায়েব হয়ে যায়। অনেক দেশের বিমানের পাইলট থেকে শুরু করে খুব সাধারণ কৃষক পর্যন্ত অনেকেই এদের উড়তে দেখেছে। কেউ হয়তো তাদের বর্ননা বিশ্বাসই করে নি।
এলিয়েন নিয়ে কিন্তু নাটক, সিরিজ কিংবা সিনেমার কোনো শেষ নেই। এই যেমন মারভেল পুরো সিরিজেই এলিয়েনের সাথে মারামারি করে কিংবা এলিয়েনদের সাথে নিয়ে মারা মারি করে কাটিয়ে দিলো। আসলে যদি এলিয়েন বলে কিছু নাই থাকে তাহলে মানুষ এতো এতো দূর পর্যন্ত কীভাবে কল্পনা করে নিচ্ছে।
কথায় আছে যা রটে তা কিছুটা হলেও ঘটে। এলিয়েন শিপের ওড়াউড়ি নিয়ে অনেকেই বলেন যে ওগুলো আসলে এলিয়েন শীপ নয়। ওগুলো মূলত সামরিক বাহিনীর সিক্রেট হাইটেক বিমানের পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন। আবার অনেকেই এই তথ্য মানতে নারাজ। তাদের মনে ওগুলো ভিনগ্রহ থেকে আসা বুদ্ধিমান প্রানীরই নভোযান। তবে খুব শীঘ্রই এই নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ন তথ্য প্রকাশ করতে যাচ্ছে আমেরিকার সরকার। তথ্যটি কী সেই ব্যাপারে এখনো কিছুই জানানো হয়নি। তবে তা এলিয়েন গবেষনা সম্পর্কিত সেটা জানা গেছে। এই রিপোর্টটি এতো দিন খুবই ক্লাসিফাইড বা অতি গোপন একটা খবর ছিলো। কিন্তু আমেরিকার সামরিক বাহিনী থেকেই এলিয়েনশিপ দেখতে পাবার এতো রিপোর্ট এসেছে যে আমেরিকার সরকার বাধ্য হচ্ছে এই কনফিডেনশিয়াল তথ্য প্রকাশ করতে।
কী এমন আছে এই রিপোর্টে? কেউ কী আন্দাজ করতে পারেন?
আমেরিকার সরকারের হাবভাব দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভিনগ্রহের এলিয়েন সম্পর্কেই তারা কিছু একটা বলতে যাচ্ছে। এবং তারা এলিয়েনের প্রমান অস্বীকারও করবেনা। কিন্তু অনেকের মতে তারা এলিয়েন মতবাদের পক্ষে রিপোর্ট প্রকাশ করলেও সাধারণ অনেক মানুষকে বিশ্বাস করানো খুবই জটিল হবে।
আমেরিকার দুই প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ওবামা এবং ট্রাম্প দুইজনই এলিয়েন নিয়ে গবেষণার বিষয়টি সচেতন ভাবে এড়িয়ে গেলেও তাদের কথাবার্তা থেকে স্পষ্ট প্রমান পাওয়া যায় এইরকম একটা গবেষণার ব্যপারে।
এই কথিত ভিনগ্রহের প্রাণীদের নভোযানে চড়ে পৃথিবীতে আসার তত্ত্ব নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে নানা যুক্তি দিয়ে আসছেন একদল লোক - যাদের বলা হয় ইউএফওলজিস্ট। এরা বলেন, এই ইউএফও-র অস্তিত্বের অনেক প্রমাণ আছে, কিন্তু সরকার এগুলো দীর্ঘদিন ধরে ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে। এ কারণে সরকারের ওপর চাপ বাড়ছিল -যেন তারা কথিত ভিনগ্রহের প্রাণীদের সম্পর্কে কী জানে - তা প্রকাশ করে। আকাশপথে আসা সম্ভাব্য হুমকি চিহ্নিত করার লক্ষ্যে মার্কিন সামরিক বাহিনীর একটি কর্মসূচি আছে - যার সম্পর্কে লোকে খুব বেশি জানে না। এর নাম এ্যাডভান্সড এ্যারোস্পেস থ্রেট আইডেন্টিফিকেশন প্রোগ্রাম।
এরই আওতায় পেন্টাগন ২০০৭ সাল থেকেই ইউএফও সম্পর্কে উপাত্ত সংগ্রহ করে আসছে। নেভাদা অঙ্গরাজ্যের সেনেটর হ্যারি রীড এই প্রকল্পের জন্য অর্থের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। তিনি একজন ডেমোক্র্যাট এবং তার নির্বাচনী এলাকার ভেতরেই পড়ে একটি আলোচিত জায়গা - যার নাম এরিয়া ফিফটি ওয়ান। এরিয়া-৫১ হচ্ছে একটি সামরিক বাহিনীর জায়গা। ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিকরা বিশ্বাস করেন, রসওয়েল নামে এটি শহরে একবার একটি ইউএফও বিধ্বস্ত হয়েছিল। সেটা থেকে পাওয়া নমুনাগুলো ১৯৪৭ সাল থেকেই পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে এই এরিয়া-৫১এ।