টুইন টাওয়ারে হামলা, কী হয়েছিলো সেদিন!! Untold Stories of 9/11: UNSEEN FOOTAGE REVEALED!

Author
0

 


বিশ বছর আগে আমেরিকায় চারটি যাত্রীবাহী জেট বিমান ছিনতাই করে সেগুলো দিয়ে আঘাত হানা হয় নিউইয়র্কের দুটি আকাশচুম্বী ভবনে, যে ঘটনায় নিহত হয় কয়েক হাজার মানুষ এই হামলা ছিল শতাব্দীর অন্যতম সবচেয়ে ভয়াবহ একটি হামলা শুধু আমেরিকানদের জন্যই নয়, গোটা বিশ্ব চমকে গিয়েছিল ঘটনার ভয়াবহতায়

 

দিনটি ছিল ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার ছিনতাইকারীরা ছোট ছোট দলে পূর্ব আমেরিকার আকাশপথ দিয়ে ওড়া চারটি বিমান একইসাথে ছিনতাই করে তারপর বিমানগুলি তারা ব্যবহার করে নিউইয়র্ক আর ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ ভবনে আঘাত হানার জন্য বিশাল নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র হিসাবে দুটি বিমান বিধ্বস্ত করা হয় নিউইয়র্কে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ার ভবনে


পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন



প্রথম বিমানটি আঘাত হানে নর্থ টাওয়ারে আমেরিকার পূর্বাঞ্চলীয় সময় সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে দ্বিতীয় বিমানটি সাউথ টাওয়ারে বিধ্বস্ত করা হয় এর অল্পক্ষণ পর, সকাল ৯টা মিনিটে। দুটি ভবনেই আগুন ধরে যায় ভবন দুটির উপরতলায় মানুষজন আটকা পড়ে যায় শহরের আকাশে ছড়িয়ে পড়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দুটি ভবনই ছিল ১১০ তলা মাত্র দুই ঘন্টার মধ্যে দুটি ভবনই বিশাল ধুলার ঝড় তুলে মাটিতে ভেঙে গুঁড়িয়ে পড়ে

তৃতীয় বিমানটি পেন্টাগনের সদর দপ্তরের পশ্চিম অংশে আঘাত হানে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির উপকণ্ঠে ছিল আমেরিকান প্রতিরক্ষা বিভাগের বিশাল এই সদর দপ্তর পেন্টাগন ভবন। এরপর, সকাল ১০টা মিনিটে চতুর্থ বিমানটি আছড়ে পড়ে পেনসিলভেনিয়ার এক মাঠে ছিনতাই হওয়া চতুর্থ বিমানের যাত্রীরা ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর পর সেটি পেনসিলভেনিয়ায় বিধ্বস্ত হয়

ধারণা করা হয় ছিনতাইকারীরা চতুর্থ বিমানটি দিয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটল ভবনের ওপর আঘাত হানতে চেয়েছিল

 

এসব হামলায় সব মিলিয়ে মারা গিয়েছিল ,৯৭৭ জন নিহতদের বেশিরভাগই ছিল নিউইয়র্কের লোক। চারটি বিমানের ২৪৬ জন যাত্রী এবং ক্রুর প্রত্যেকে মারা যান, টুইন টাওয়ারের দুটি ভবনে মারা যান ,৬০৬ জন, পেন্টাগনের হামলায় প্রাণ হারান ১২৫ জন

সর্বকনিষ্ঠ নিহতের বয়স ছিল দু'বছর নামক্রিস্টিন লি হ্যানসন তার বাবা মায়ের সাথে সে একটি বিমানের যাত্রী ছিল। নিহতদের মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তির নামরবার্ট নর্টন তার বয়স ছিল ৮২ তিনি ছিলেন অন্য আরেকটি বিমানে এবং তার স্ত্রীজ্যাকুলিন সাথে তিনি একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন


প্রথম বিমানটি যখন ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে আঘাত করে, তখন ভেতরে আনুমানিক ১৭ হাজার ৪০০ জন লোক ছিল নর্থ টাওয়ারের যে অংশে বিমান আঘাত করে, তার উপরের কোন তলার মানুষই প্রাণে বাঁচেনি তবে সাউথ টাওয়ারে যেখানে বিমান আঘাত করে, তার উপরের অংশ থেকে ১৮ জন প্রাণ নিয়ে বেরুতে পেরেছিল হতাহতের মধ্যে ৭৭টি ভিন্ন ভিন্ন দেশের মানুষ ছিলেন নিউইয়র্ক শহরে যারা প্রথম ঘটনাস্থলে জরুরি অবস্থা মোকাবেলায় দৌড়ে যান, তাদের মধ্যে মারা যান ৪৪১ জন। হাজার হাজার মানুষ আহত হন, যারা পরে নানাধরনের অসুস্থতার শিকার হন যেমন দমকলকর্মীদের অনেকে বিষাক্ত বর্জ্যের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন

 

ধারনা করা হয়, উগ্র মতাদর্শের ইসলামপন্থী সংগঠন আল-কায়দা আফগানিস্তান থেকে এই হামলার পরিকল্পনা করেছিল ওসামা বিন লাদেনের নেতৃত্বাধীন এই গোষ্ঠী মুসলিম বিশ্বে সংঘাত সৃষ্টির জন্য দায়ী করেছিল আমেরিকা এবং তার মিত্র দেশগুলোকে। ছিনতাইকারীরা ছিল মোট ১৯ জন এদের মধ্যে তিনটি দলে ছিল পাঁচজন করে, যারা বিমান হামলা চালায় টুইন টাওয়ার পেন্টাগনে আর যে বিমানটি পেনসিলভেনিয়ায় ভেঙে পড়ে, তাতে ছিনতাইকারী দলে ছিল চারজন। প্রত্যেক দলে একজন ছিনতাইকারীর বিমানচালক হিসাবে প্রশিক্ষিত ছিল এই ছিনতাইকারীরা তাদের পাইলটের ট্রেনিং নেন আমেরিকার ফ্লাইং স্কুলে

 


১১ই সেপ্টেম্বরের ওই হামলার ঘটনার পর থেকে সারা বিশ্বে বিমান ভ্রমণের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে আমেরিকাতে বিমানবন্দর বিমানের ভেতর নিরাপত্তা আরও কঠোর করতেট্রান্সপোর্টেশান সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশাননামে পরিবহন নিরাপত্তা প্রশাসন গঠন করা হয়েছে। নিউইয়র্কে হামলার স্থান, যেখানে টুইন টাওয়ার বিধ্বস্ত হয়েছিল, সেইগ্রাউন্ড জিরো ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কার করতে সময় লেগেছিল আট মাসেরও বেশি

ওই স্থানে এখন তৈরি হয়েছে একটি যাদুঘর এবং একটি স্মৃতিসৌধ সেখানে মধ্যমণি হিসাবে নির্মিত হয়েছেওয়ান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারবা ফ্রিডম টাওয়ার যা উচ্চতায় আগের নর্থ টাওয়ারের চেয়েও বেশি নর্থ টাওয়ারের উচ্চতা ছিল ,৩৬৮ ফুট আর নতুন ফ্রিডম টাওয়ার ,৭৭৬ ফুট উঁচু। পেন্টাগন পুনর্নিমাণে সময় লেগেছিল এক বছরের কিছু কম ২০০২ সালের অগাস্টের মধ্যে পেন্টাগনের কর্মচারীরা আবার তাদের কর্মস্থলে ফিরে যান

 

যদিও এমন একটি হামলা হতে পারে সে ব্যাপারে একাধিকবার হুশিয়ারি পেয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এবং গোয়েন্দারা হামলার মাস আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ঝুঁকির উপর একটি তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে দেশটির সরকারি কমিশন উক্ত কমিশন দীর্ঘ আড়াই বছর যাবত ২০টি দেশের একশোজনের অধিক মানুষের সাক্ষী গ্রহণের পর জানিয়েছিল দেশের নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি কিন্তু সেটি একেবারেই আমলে নেয়নি বুশ প্রশাসন আর এমনটাই দাবি করেন ডেমোক্রেট সিনেটরগ্যারি হার্ট তিনি ছিলেন উক্ত সরকারি তদন্ত কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এমনকি সংবাদমাধ্যম এটিকে গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেনি বলেও অভিযোগ করেন তিনি

মতামত

0Comments

আপনার মতামত লিখুন (0)

#buttons=(ঠিক আছে!) #days=(20)

এই ওয়েবসাইটি ব্যবহারে আপনার অভিজ্ঞতাকে আরো উন্নত করার জন্য কুকিজ ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু আমরা কখনই আপনার সম্মতি ছাড়া আপনার কোনো ডাটা সংরক্ষণ করব না। আরো জানুন
Ok, Go it!