দেখা জিনিসের মধ্যেই লুকিয়ে আছে পৃথিবীর আসল রহস্য, অদেখা জিনিসে নয়। উক্তিটি করেছিলেন বিখ্যাত লেখক অস্কার ওয়াইল্ড। আসলেই কিন্তু তাই। আমাদের চোখের সামনেই যত রহস্য আছে, তাতেই আমাদের মাথা নষ্ট হবার যোগার।
নাম্বার টেন – ব্লু অ্যাঞ্জেল সি স্লাগ
সমুদ্র নিয়ে বিজ্ঞানীদের কৌতূহলের শেষ নেই। সমুদ্রের গোপন এত এত রহস্য আবিষ্কারের পরও অনেক অজানা রহস্য লুকিয়ে রয়েছে। সমুদ্রের এমনই এক রহস্যময় প্রাণী ব্লু এঞ্জেল সি স্লাগ। দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার উপকূলীয় এলাকায় পাওয়া এ স্লাগ অত্যন্ত বিষাক্ত একটি প্রাণী। এটি অন্যান্য ছোট বিষাক্ত জীবকেও খেয়ে ফেলে। শুধু তা-ই নয়, সি স্লাগ খেয়ে নেয়া এ বিষাক্ত প্রাণীর বিষ নিজের মধ্যে সংরক্ষণ করে রাখে। পরবর্তী সময়ে শিকারে এ বিষ ব্যবহার করে সে। প্রাণীটি খুবই অদ্ভুত দেখতে। প্রথম দেখায় অনেকে অ্যাভাটারের প্যান্ডোরা ওয়ার্ল্ডের কোন প্রাণীও মনে করতে পারে।
নাম্বার নাইন – হাতে ধরা মেঘ
পৃথিবীর আরেকটি রহস্যময় জিনিস
হলো অ্যারোজেল। জেল ও গ্যাসের তৈরি এ অ্যারোজেল একটি আলট্রালাইট পদার্থ। এ পদার্থ
দেখতে অনেকটা মেঘের মতো। এটি হাত দিয়েও ধরে রাখা যায়। অনেকে একে হিমায়িত
ধোঁয়াও বলে থাকে। অ্যারোজেলের ৯৯ শতাংশ অংশই বাতাস দিয়ে তৈরি।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
নাম্বার এইট – তেল রং দিয়ে আঁকা গাছ
ইউক্যালিপটাস ডিগ্লুপ্টা গাছ
পৃথিবীর অদ্ভুত গাছগুলোর একটি। ইন্দোনেশিয়া,
পাপুয়া নিউগিনি ও ফিলিপাইনে পাওয়া
যায় এই গাছ। হুট করে দেখলে মনে হয় কেউ অয়েল কালার বা তেল রং দিয়ে মেখে দিয়েছে।
রং-বেরঙের এই গাছটি দেখলে আপনি নিজেও অবাক হয়ে যাবেন। মনে হবে কোন সায়েন্স
এক্সপেরিমেন্ট থেকে তুলে আনা হয়েছে।
নাম্বার সেভেন –
লবণের তৈরি চার্চ
কলম্বিয়ায় অবস্থিত ‘সল্ট
ক্যাথেড্রাল অব জিপাকুইরা’ একটি রোমান ক্যাথলিক চার্চ। এটি মাটির ১৮০ মিটার নিচে
অবস্থিত। এ গির্জার সবথেকে ইউনিক বিশেষত্ব হলো,
এটি সম্পূর্ণ লবণ দিয়ে তৈরি।
লবণের তৈরি একটি ক্রুশও রয়েছে এ গির্জায়। অদ্ভুত এই গির্জায় একসঙ্গে প্রায় ১০ হাজার
মানুষ প্রবেশ করতে পারে। রাতের বেলা না জেনে কেউ এই চার্চে ঢুকতে গেলে স্যাটানিক
কোনো কাল্টের আড্ডাখানাও ভেবে বসতে পারে।
নাম্বার সিক্স – সবচেয়ে কুৎসিত হাঙ্গর
স্বাভাবিকভাবেই হাঙ্গর দেখতে
খুব ভয়ংকর হয়। তবে পৃথিবীতে এমন এক প্রজাতির হাঙ্গর রয়েছে যা দেখতে অত্যন্ত কুৎসিত
ও খুবই ভয়ংকর। এদের বলা হয় ‘গবলিন হাঙ্গর’। গবলিন হাঙ্গর দেখতে অনেকটা 'জীবন্ত ফসিল'-এর
মতো। আরেকভাবেও একে পরিচয় করানো যায়। দ্য থিং নামে কার্ট রাসেলের একটি বিখ্যাত
সাই-ফাই সিনেমা বের হয়েছিল আশির দশকে। সেখানে সিনেমার ভিলেইন হিসেবে দেখানো হয়
সায়েন্টিফিক ও প্যারানরমালের মিশেলে তৈরি হওয়া একটি প্রাণী। গবলিন শার্ক দেখতে
অনেকটা তেমনই।
নাম্বার ফাইভ – নীল লাভা
লাল বা হলুদ লাভার কথা সবাই
কমবেশি জানেন। কিন্তু কখনো কি নীল লাভার কথা শুনেছেন?
আপনি জানলে অবাক হবেন যে, ইন্দোনেশিয়ার
কাওয়াহ ইজেন আগ্নেয়গিরিটি খুবই অনন্য। কারণ,
এটি নীল লাভা উৎপন্ন করে। এ
আগ্নেয়গিরিতে সালফিউরিক গ্যাস নির্গত হওয়ায় নীল রঙের সৃষ্টি হয়। এ গ্যাস আগুনের
সংস্পর্শে এলে নীল রঙের শিখা বের হয়। যার কারণে লাভার রং নীল দেখায়।
নাম্বার ফোর – সবচেয়ে দুর্গম স্থান
অনেকে আমাজন জঙ্গলকে পৃথিবীর
সবচেয়ে দুর্গম স্থান মনে করেন। কিন্তু এ আমাজনের চেয়েও দুর্গম স্থান পৃথিবীতে
রয়েছে। পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্গম স্থানটি অ্যান্টার্কটিকার দুসি দ্বীপ, মোতু
নুই এবং মাহের দ্বীপের মধ্যে অবস্থিত। জায়গাটি ‘পয়েন্ট নিমো’ নামে বিখ্যাত।
দুর্গম এ জায়গা থেকে মানুষের বসতি ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
নাম্বার থ্রি – ভয়নিচ পাণ্ডুলিপি
পৃথিবীর অনেক পাণ্ডুলিপির ভাষাই
ভাষাবিদরা উদ্ধার করতে পেরেছেন। কিন্তু বর্তমান পৃথিবীতে এমন একটি পাণ্ডুলিপি
রয়েছে যার ভাষা এখনও কোনো বিজ্ঞানী আবিষ্কার করতে পারেননি। ১৪০৪ থেকে ১৪৩৮ সালের
মধ্যে লেখা ২৪০ পৃষ্ঠার এ পাণ্ডুলিপির নাম ভয়নিচ পাণ্ডুলিপি। যার ফলে এ
পাণ্ডুলিপিতে কী লেখা আছে তা আজও মানুষের অজানা রয়ে গেছে। এ পাণ্ডুলিপিতে গাছপালা
ও নারী সম্পর্কিত কিছু অদ্ভুত ছবিও আঁকা রয়েছে। ধারণা করা হয় এই ম্যানুস্ক্রিপ্টটি
লিখেছে স্বয়ং শয়তান।
নাম্বার টু – ভিনগ্রহের দেশ
পৃথিবীতে এমন একটি অদ্ভুত
জায়গা রয়েছে, যা দেখলে মনে হবে সেখানে এলিয়েনরা থাকে। এটি
ইথিওপিয়ার ডানাকিল ডিপ্রেশনে অবস্থিত। লাভাতে ভরা পুল ও আগুনে পরিবেশের জন্য এ
জায়গাটিকে দেখলে মাল্টিভার্সের অন্য কোন জগতের বলে মনে হয়। এ জায়গায় প্রচুর বিষাক্ত
গ্যাস এবং অ্যাসিড আছে। এর ধারেকাছেও তাই ঘেষতে ভয় পায় লোকজন।
নাম্বার ওয়ান – ভ্যানটাব্ল্যাক