তেলেগু অভিনেতা ‘আল্লু অর্জুন’কে বলা “স্টাইলিশ স্টার”। তার সিনেমা মানেই দূর্দান্ত একশন, ড্যান্স আর দৃষ্টি নন্দন নাচ। ১৯৮২ সালের ৮ই এপ্রিল মাদরাজের তামিল নাড়ুতে জন্ম তার। একজন ভারতীয় তেলেগু ভাষার চলচ্চিত্র অভিনেতা হলেও বিশ্বব্যাপি তিনি বেশ জনপ্রিয়। তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম সিনেমা ২০০৩ সালে সালের “গাঙ্গোত্রী”।
এই হিরোর বেশ অনেকগুলো হিট সিনেমা থাকলেও, উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সিনেমা নিয়ে কথা বলা যাকঃ
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
11
পারুগু ২০০৮ সালে নির্মিত এই তেলেগু ভাষার সিনেমাটি পরিচালনা করেন তেলেগু সিনেমা নির্মাতা “ভাষ্কর”।
একটি রোমান্টিক ধরনের ছবি এটি। এখানে বন্ধুকে তার প্রেমিকা নিয়ে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে আরেক বন্ধু। যে সাহায্য করেছিলো তাকে প্রেমিকার বাবা ধরে আনলে , সে আবার অই বাড়ির আরেক মেয়ের প্রেমে পড়ে। যদিও বহু ফাটাফাটির পরে নায়ক নায়িকা যে একসাথে মিলিত হবে, সেটা আমরা সবাই জানি। এই ছবিতে অভিনয় করে আল্লু বাবাজি সেরা তেলেগু অভিনেতার পুরষ্কার পান।
আল্লু অর্জুনের আরেকটি সেরা সিনেমা আরিয়া টু ২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একশন ঘরনার সিনেমা। সিনেমায় দেখানো হয় বাবা মা হারানো দুই এতিম শিশু ছোটবেলা থেকে একসাথে বড় হয়। বড় হবার পর তারা কর্মজীবনের তাগিদে দুজন দুদিকে মোড় নেয়। তবে ভাগ্য তাদের আবারো একসাথে দেখা করায় তবে সেটা বন্ধু হিসেবে নয়, দুজন দুজনের শত্রু হিসেবে। তারা দুজন একই মেয়ের প্রেমে পড়ে। তারপর আর কি! বহু টানাপোড়নের পর ভাই আল্লু’ই শেষমেষ তার নায়িকাকে পায়।
২০১০ সালে আল্লু অর্জুনের ভেদাম সিনেমাটিও বেশ জনপ্রিয়তা পায়। সিনেমায় রাজু, সরোজা, রামুলু, বিবেক এবং রহিমুদ্দিন কুরেশি নামের পাঁচজন ব্যক্তিকে দেখা যায়। যারা একটি হসপিটালের ভেতর সন্ত্রাসী হামলার কবলে পড়ে।
সিনেমাটির জন্য আল্লু একটি ফিল্মফেয়ার এওয়ার্ড পায়।
২০১৪ সালের আরো একটি একশন ঘরনার সিনেমা রেস গুররাম। একজন গ্রামের সাধারন মানুষ, আরেকজন পুলিশ অফিসার। দুই ভাই তাদের এক শত্রুকে শেষ করার পরিকল্পনা করে।
ছবিটি বক্স অফিসে ১০১ কোটি রুপি ইনকাম করে।
২০১৭ সালের আরেক হিট সিনেমা দুভভাডা জগন্নাধাম বা ডিজে। ডিজে পেশায় একজন বাবুর্চি। পরবর্তিতে সে আন্ডারকভার পুলিশ হিসেবে নিযুক্ত হন। একজন দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদের প্রতি তার লড়াই হয়। কিন্তু দেখা যায় সেই রাজনীতিবিদের মেয়ের প্রেমে মড়িয়া হয়ে পড়ে আমাদের বিদ্রোহী পুলিশ অফিসার ডিজে।
ছবিটি নির্মানে ব্যয় হয়েছিলো ৫০ কোটি রুপি। মুক্তির পরে আয় করে প্রায় ১১৫.১০ কোটি রুপি।
২০২১ সালে পুষ্পা: দ্যা রাইজ সিনেমার কথা সবাই জানে। একে নিয়ে আলাদা করে কিছু বলতে হবে না। গল্পের মূল বিষয়, লাল চন্দন কাঠ পাচার এবং এই পাচারের সাথে যুক্ত চোরাকারবারিদের সিণ্ডিকেটের গল্প। ‘পুষ্পারাজ’ এক সাধারণ শ্রমিক। যে পরে জড়িয়ে পড়ে চন্দন কাঠ পাচারে। পুষ্পা ধীরেধীরে সিণ্ডিকেটের মধ্যে নিজের প্রভাব বাড়াতে শুরু করে এবং এই ব্যবসার মাথা ‘মঙ্গলম শ্রীনুকে’ চ্যালেঞ্জ করে বসে। মূল গল্পের সাথে একটি সাইড স্টোরি রয়েছে যেখানে পুষ্পা তার জন্ম পরিচয় নিয়ে সন্দিহান। যে কারণে প্রেমিকার সাথে তার বিয়ে ভেঙে যায়। তবে পরে সে প্রেমিকার সাথেই পুষ্পার বিয়ে দিয়ে সিনেমার প্রথম পর্বের ইতি টানেন পরিচালক। তার মানে ‘ক্লাইমেক্স আভি বাকি হ্যা’।
২০১৮ সালে মুক্তি পায় না পেরু সুরিয়া,
না ইল্লু ইন্ডিয়া। মুভির কাহিনীই হলো একজন সৈনিকের রাগ বা ক্রোধ নিয়ে। ক্রোধ বা রাগ দিয়েই মুভি শুরু হয়। মুভির গল্পে দেখা যায় অতিরিক্ত রাগের কারনে সুরিয়ার(আল্লু অর্জুন) চাকরি চলে যায়,নিজের প্রেমিকার সাথে ব্রেকআপ হয়। পরবর্তীতে সুরিয়ার (আল্লু অর্জুন) বাবা ভারতের নাম্বার ওয়ান সাইকোলেজিষ্টের কাছে সুরিয়াকে পাঠিয়ে দেয়,যাতে সুরিয়া (আল্লু) তার রাগ কমাতে পারে। এরপর সেখান থেকে নতুন কাহিনী শুরু হয়।
এরপর সাইক্লোজিষ্টের কাছে যাওয়ার পর এবং সেখানে থেকে সুরিয়ার রাগ কমে যাবে কিনা সেটা জানতে হলে দেখতে হবে মুভিটা।
২০১৪ সালে মুক্তি পায় ইয়ে ভাদু। সেখানে দেখানো হয়, সত্য এবং দীপ্তি প্রেমিক প্রেমিকা। ওখানকার একজন ভয়ঙ্কর ডন, বীরু ভাই, যিনি দীপ্তির উপর ক্রাশ খায়। যখন দীপ্তির বাবা-মা বীরু ভাইয়ের হাতে নিহত হয়, তখন দীপ্তি এবং সত্য পালিয়ে যায় এবং হায়দ্রাবাদের একটি বাসে ওঠে, কিন্তু বাসটি অপ্রত্যাশিতভাবে থামানো হয় এবং তিনজন লোক বাসে উঠে পরে। তারা একজন সত্যের সামনে দীপ্তির গলা কেটে ফেলে এবং সে সত্যকেও ছুরি মারে। সত্য মারাত্মকভাবে আহত হয়। সেই তিনজন চলে যাবার সময় বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়, যার ফলে সত্য মারা যায়। তবে এখানে একটা টুইষ্ট থাকে। যেটা সিনেমায় পরে রিভিল হয়।
২০২০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা আলা বৈকুন্ঠপুরামলো। সিনেমায় দেখানো হয় ‘বান্টু’ নামের ছেলে ছোটবেলা থেকে তার বাবার কাছ থেকে অবহেলা এবং সমালোচনা সহ্য করে বেড়ে ওঠে। বান্টু বড় হয়ে জানতে পারে, সে একজন কোটিপতির ছেলে। জন্মের সময় তাকে পরিবর্তন করা হয়েছিলো অন্য কোনো বাচ্চার সাথে। তারপর সে খুজতে থাকে তার আসল বাবা মা কে।
সম্প্রতি পুষ্পা মুভির সিক্যুয়াল হিসেবে পুষ্পা: দ্যা রূল তৈরি হয়েছে। তবে এখনো সেটি মুক্তির আশায়। মুভি পোষ্টারে আল্লু অর্জুনকে দেখা যায় এক অদ্ভুদ রূপে। গায়ে ফলের মালা, ফুল, চন্দন- যেন রুদ্র রূপে এসেছেন পুষ্পা! দুর্ধর্ষ তাঁর এক্সপ্রেশন!
শোনা যাচ্ছে পুষ্পা; দ্য রুলের প্রত্যাশিত বাজেট আনুমানিক ৪০০ কোটি টাকা! শুধুমাত্র আল্লু অর্জুনকে পারিশ্রমিক হিসাবে দিতে হবে ১০০ কোটি টাকা! যদি তাই হয় তবে এটি হবে একটি চলচ্চিত্রের জন্য আল্লু অর্জুনের নেওয়া সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক।
ধারনা করা হচ্ছে সিনেমাটি এ বছরই রিলিজ করা হবে।