বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম সফল জুটি সালমান শাহ ও শাবনূরের প্রায় সব কটি ছবি হিট হয়েছে। রোমান্টিক ছবিতে এ দুজনের রসায়ন বেশ জমে উঠত। তাদের প্রেমের অভিনয় দর্শক ভালোভাবেই নিয়েছে। তখন চলচ্চিত্র পাড়ায় গুঞ্জন ছিল যে, এ দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। সালমানের রহস্যময় মৃত্যুর পর বলা হয়, শাবনূরের সঙ্গে প্রেম গভীর হওয়ায় স্ত্রী সালমানকে খুন করিয়েছে। তবে তাদের প্রেমের বিষয়ে সালমান অধ্যায় সমাপ্তির দুই দশক পর মুখ খুলেছেন তার মেকআপ পারসন ও হত্যা মামলার আসামি রুবি। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত রুবি সুলতানা বলেন, সালমান ও শাবনূরের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। শাবনূর প্র্যাগনেন্টও হয়েছিলেন। সিঙ্গাপুরে গিয়ে বাচ্চা নষ্ট করে আসেন।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
১৯৯৪ সালে ‘তুমি আমার’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে সালমান শাহর সঙ্গে জুটি বাঁধেন শাবনূর। প্রথম ছবিতেই ব্যাপক সফলতা পায় এই জুটি। সালমান-শাবনূর জুটির সফলতার দিকে তাকিয়ে পরিচালক প্রযোজকরা একের পর এক ছবিতে নিতে থাকেন তাদের। সালমান অভিনীত ২৭টি ছবির ভেতরে ১৪টি ছবিতেই সালমানের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি।
এভাবেই বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে সবচেয়ে সফল জুটি হিসেবে পরিচিতি পান সালমান-শাবনূর। চারপাশে এ সময় তাদের প্রেমের গুজবও ছড়িয়ে পড়ে। তবে শাবনূর সবসময়ই এগুলোকে অপপ্রচার বলে দাবি করেছেন।
এক সাক্ষাৎকারে সালমান শাহ এর স্ত্রী সামিরা জানান, সালমান শাহ ও শাবনূর যে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন, সে কথা সালমান নিজেই তার কাছে স্বীকার করেছিলেন।
জানা যায় সামিরাকে সাথে নিয়েই শুটিংয়ে যেতেন সালমান। প্রতিটি সিনেমায় সালমানের ‘ড্রেস ডিজাইনার’ ছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সালে বাদল খন্দকারের একটি সিনেমার শুটিংয়ে কক্সবাজারে গিয়ে সম্পর্কে জড়ান সালমান ও শাবনূর। একই বছরে শাবনূরকে নিয়ে সিঙ্গাপুরে যান সালমান। সেখান থেকে ফিরে সালমান নিজেই সামিরাকে বলেন, তিনি একটা অন্যায় করে ফেলেছেন। শাবনূরের সঙ্গে এমন কিছু পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে তাকে ব্ল্যাকমেল করা হতে পারে। সামিরা তখনই বিবাহবিচ্ছেদ চেয়েছিলেন।
এরপর কিছু গণমাধ্যমে সালমান শাবনূরকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন বলে খবর ছড়ায়। এক পর্যায়ে সংবাদ সম্মেলন করে সালমানকে ঘোষণা দিতে হয় যে তার স্ত্রীর নাম সামিরা।
এই ঘটনা পর রাগ করে চট্টগ্রামে বাবার বাড়ি চলে যান সামিরা। পরে, সব ভুলে আবার নতুন করে শুরু করতে সালমানের কাছে ফেরেন। সামিরা সালমান শাহকে ‘ইমন’ নামে ডাকতেন। সামিরা জানায়, ইমন কতটা আবেগপ্রবণ ছিল, সেটা কেউ বুঝবে না। ভাববে সিনেমাটিক। আমি ফিরে দেখলাম, রাগ করে চট্টগ্রাম যাওয়ার আগে যেভাবে যা রেখে গেছি, সেভাবেই আছে। ইমন মাটিতে ঘুমোচ্ছে। সঙ্গে আমার একটা টপস।
এরপর, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানেও দু’জনে একসঙ্গে যান। ওই বছর সালমান সেরা চিত্রনায়ক ও শাবনূর সেরা নায়িকার পুরস্কার পেয়েছিলেন। তবে শাবনূর ওই অনুষ্ঠানে আসেননি। এর দু’দিন পর আত্মহত্যা করেন সালমান।
উল্লেখ্য, বাংলা সিনেমার তুমুল জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহর সঙ্গে সামিরা হকের বিয়ে হয় ১৯৯২ সালের ২০ ডিসেম্বর। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মাত্র ২৪ বছর বয়সে নিজ বাসা থেকে সালমানকে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর হাসাপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে। তার মৃত্যুরহস্য নিয়ে তখন থেকেই নানা গুঞ্জন চলে আসছে। ১৯৯৯ সালে দুই পরিবারের সম্মতিতে সালমান শাহর বন্ধু মোস্তাক ওয়ায়েজকে বিয়ে করে সালমানের স্ত্রী সামিরা হক।