৫৩ বছর ধরে একটি এলাকা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। হুট করেই একদিন গ্রামের আড়াই হাজার মানুষ চলে গেছে গ্রাম ছেড়ে। কারণ সেখানে নাকি চলে জ্বিনদের উপদ্রব! বলা হচ্ছে আরব আমিরাতের আল জাজিরা আল হামরা গ্রামের কথা। আমিরাতের রাস আল খাইমাহ স্টেটের এই দ্বীপটিকে স্থানীয় লোকজন ‘ভূতের গ্রাম’ হিসেবেই চেনে। অনেকে ‘লাল দ্বীপ’ নামেও ডাকে। এই গ্রামটিকে নিয়ে আছে রহস্যময় ও ভৌতিক সব গল্প।
চৌদ্দশ শতাব্দীতে গড়ে ওঠে গ্রামটি। ১৮৩১ সালে
একবার সংস্কারও করা হয়। সেই সময়ে মোট তিনশটি ঘরে সব মিলিয়ে প্রায় চার হাজার লোক বসবাস করত।
১৩টি মসজিদও ছিল গ্রামে। বণিকদের আনাগোনায় জীবন্ত হয়ে উঠতো গ্রামের চারপাশ।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
১৯৬০ সালে গ্রামটিতে ফার্সি ইমিগ্র্যান্টস, পর্তুগিজ ব্যবসায়ী ও ব্রিটিশ কর্মকর্তারা দাপিয়ে বেড়াত। ধুমছে চলতো মাছ ও মুক্তার ব্যবসা। কিন্তু হুট করেই ওলটপালট হয়ে যায় সব। কানাঘুষা শুরু হয়ে যায় গ্রামে নাকি জ্বিন-ভূতের বসবাস আছে। বাসিন্দারা ভয় পেয়ে যায়। এভাবে কয়েক বছর চলতে থাকলেও একসময় দ্বীপটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে প্রায় আড়াই হাজার বাসিন্দা আবুধাবি চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৬৮ সালের পরে ফাঁকা হয়ে যেতে থাকে দ্বীপটি। সেসময় যারা থেকে গিয়েছিল, তারাও খুব ভয়ে ভয়ে দিন কাটাত। সেই সময়ে নাকি ফাঁকা গ্রামে জ্বীনের আনাগোনা আরো বেড়ে যায়। নানা রকম ভৌতিক কর্মকাণ্ডে তাদের অভিজ্ঞতার ভাণ্ডারে প্রতিদিন জমা হতে থাকে নানান গল্প।
১৯৬৮ সালেই ফাইনালি গ্রামটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। দ্বীপের বাকি থাকা বাসিন্দারাও সবাই আবুধাবি পাড়ি জমায়। তবে এখনও তারা মাঝে মাঝে সেই গ্রামে গিয়ে নিজেদের বাপ-দাদার ভিটা দেখে আসে। সেই গ্রামে এখন প্রায়ই ট্রাভেলাররা ঘুরতে যায়। প্রাচীন দুর্গের ছবি তুলতে গেলে তাদের সঙ্গেও নাকি ঘটতে থাকে প্যারানরমাল সব ঘটনা। প্রায়ই দেখা যায় বিচিত্র রকমের সব হাতের ছাপ। গ্রামের প্রাক্তন বাসিন্দারা মনে করেন, এটি ট্রাভেলারদের জন্য সতর্ক সংকেত। যেন তারা সেখানে ঘুরতে গিয়ে জ্বিনদের ডিসটার্ব না করে।
এক কিলোমিটারেরও কম আয়তনের হন্টেড এই গ্রামটিকে বর্তমানে স্থানীয় প্রশাসন তারকাঁটার প্রাচীর দিয়ে ঘিরে রেখেছে। ভাঙা ভবনগুলোর পাশ দিয়ে হাটতে গা ছমছম করে ওঠে পর্যটকদের। গ্রামটিকে নিয়ে হরর সিনেমাও বানাতে চেয়েছিলেন কয়েকজন নির্মাতা। সেই উদ্দেশ্যেই একবার স্থানীয় ফিল্মমেকার ফয়সাল হাশমি তার বন্ধুদের নিয়ে গ্রামটিতে একটি রাত কাটাতে যান। তখন নাকি তারাও বেশকিছু ভৌতিক কর্মকাণ্ডের সাক্ষী হয়।
ফয়সাল হাশমি জানান, এ গ্রামে যারা ছিলেন কিংবা ঘুরতে এসেছেন, তাদের সবার সাথেই একবার হলেও
কোনো না কোনো প্যারানরমাল ঘটনা ঘটেছে।