সর্বকালের সেরা ফুটবল একাদশে জায়গা পেলেন যারা || The greatest football XI of all time

Author
0

 


ফুটবলের ইতিহাসে অগণিত গ্রেট ফুটবলারের আগমণ ঘটেছে। তার মধ্য থেকে সেরা একাদশ বেঁছে নেওয়া খুবই কঠিন ব্যাপার। তবুও আমরা চেষ্টা করেছি সর্বকালের সেরা ফুটবল একাদশ তৈরি করতে। ৪-৩-৩ ফর্মেশনে সাজানো হয়েছে দলটি।


গোলকিপার - লেভ ইয়াসিন

লেভ ইয়াসিনকে মনে করা হয় ফুটবল ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ গোলরক্ষক। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের হয়ে চারবার বিশ্বকাপে অংশ নেন। পুরো ক্যারিয়ারে ১৫১টি পেনাল্টি বাঁচিয়েছেন তিনি। ২৭০ এর বেশি ক্লিনশিট তার ক্যারিয়ারে।

জিতেছেন ফিফার গোলকিপার অফ দ্য সেঞ্চুরি এওয়ার্ড। ইতিহাসের একমাত্র ব্যালন ডি অর জয়ী গোলকিপার তিনি। জিয়ানলুইজি বুফন, ইকার ক্যাসিয়াস কিংবা অলিভার কান শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও খানিকটা এগিয়ে প্রথম পছন্দে থাকছেন ইয়াসিন। লেভ ইয়াসিন ফুটবল ক্যারিয়ার শুরুর আগে ছিলেন তালা-চাবির কারিগর। গোলকিপার পজিশনে অনারেবল মেনশন হিসেবে থাকছেন জিয়ানলুইজি বুফন, ইকার ক্যাসিয়াস, ম্যানুয়েল নয়্যার এবং অলিভার কান।


পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন



রাইট ব্যাক – কাফু

কাফু সন্দেহাতীতভাবে ইতিহাসের সেরা রাইট ব্যাক। ব্রাজিলের হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৪২টি ম্যাচও খেলেছেন তিনি। জিতেছেন ১৯৯৪ ও ২০০২ বিশ্বকাপ। ছিলেন ২০০২ বিশ্বকাপের ক্যাপ্টেনও। ওভার ল্যাপ করে যখন তখন দলের আক্রমণে সহয়তা করতে পারতেন। তবে এই পজিশনে আরো দুই ব্রাজিলিয়ান রাইট ব্যাক জালমা সান্তোস এবং কার্লোস আলবার্তো বেশ শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী।


রাইট সেন্টারব্যাক – ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার

জার্মানির সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় বলা হয় তাকে। ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার ১৯৪৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার সময়ের শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় ছিলেন।

তিনি পশ্চিম জার্মানির হয়ে ১০৩টি ম্যাচ ও ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপের ৩টি আসরে অংশ নেন। তার নেতৃত্বে ১৯৭৪ সালে পশ্চিম জার্মানি বিশ্বকাপ জয় করে এবং ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপে জার্মানি দলের ম্যানেজার হয়ে পুনরায় তিনি জার্মানিকে শিরোপা জিততে সাহায্য করেন। ১৯৭২ এবং ১৯৭৬ সালে দুইবার ব্যালন ডি’অর জেতেন তিনি। এই পজিশনে অনারেবল মেনশন হিসেবে থাকছেন ফ্র্যাঙ্কো বারেসি।


লেফট সেন্টারব্যাক – সার্জিও র‍্যামোস

বর্তমান প্রজন্মের সেরা এবং সর্বকালের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার মানা হয় রিয়াল মাদ্রিদের স্প্যানিশ লেজেন্ড সার্জিও রামোসকে। স্পেনের হয়ে ১৮০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন রামোস। যা দেশটির ফুটবল ইতিহাসে অন্য খেলোয়াড়দের চেয়ে অনেক বেশী। ২০১০ বিশ্বকাপ এবং ২০০৮ ও ২০১২ সালের ইউরোজয়ী স্পেন দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। ক্লাব ক্যারিয়ারে লস ব্ল্যাঙ্কোসদের হয়ে জিতেছেন চারটি করে ইউসিএল এবং লা লিগা শিরোপা। এই পজিশনে অনারেবল মেনশন হিসেবে থাকছেন ফ্যাবিও ক্যানাভারো ও ববি মুর।


লেফটব্যাক – পাওলো মালদিনি

সর্বকালের সেরা ডিফেন্ডারই মানা হয় তাকে। তিনি ১৯৬৮ সালের ২৬ জুন ইতালিতে জন্মগ্রহণ করেন। মালদিনি লেফট ব্যাকে ছিলেন অদম্য। দলের আক্রমণে যেমন সহয়তা করতেন তেমনি ডিফেন্সও আগলাতেন প্রাচীর হয়ে। তার ২৫ বছরের দীর্ঘ ফুটবল ক্যারিয়ারের সম্পূর্ণ সময়টাই ইতালীয় ক্লাব এসি মিলানের হয়ে খেলেছেন এবং ক্লাবের হয়ে ৩টি ক্লাব বিশ্বকাপ, ৫টি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ, ১টি ইতালীয় ক্লাব শিরোপা এবং ৭টি সিরিজ এ জিতেছেন। তবে চারটি বিশ্বকাপ খেললেও শিরোপাটা অধরাই থেকে যায় তার।

এই পজিশনে অনারেবল মেনশন হিসেবে থাকছেন ব্রাজিল ও রিয়াল মাদ্রিদ লেজেন্ড রবার্তো কার্লোস


ডিফেন্সিভ মিড – লোথার ম্যাথিউজ

সর্বকালের সেরা ডিফেন্সিভ মিড খুঁজতে গেলে বরাবরই একটা নাম অগ্রাধিকার পায়। তিনি লোথার ম্যাথিউস ১৯৬১ সালের ২১ মার্চ পশ্চিম জার্মানির ব্যাভারিয়ার ছোট শহর এরলানজেনে জন্মগ্রহণ করেন লোথার। ক্লাব ক্যারিয়ারে খেলেছেন মুনশেনগ্ল্যাডবাখ, বায়ার্ন মিউনিখ ও ইন্টার মিলানের হয়ে। লিগ শিরোপা জিতেছেন ৭ টি। ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপজয়ী জার্মানির অধিনায়কও ছিলেন লোথার ম্যাথিউস সেই বছর জেতেন ব্যালন ডি'অরও। এই পজিশনে অনারেবল মেনশন হিসেবে থাকছেন দিদি, দুঙ্গা এবং ফ্র্যাঙ্ক রাইকার্ড


লেফট সেন্টার মিড – জিনেদিন জিদান

গত শতাব্দীর সবচেয়ে সৃষ্টিশীল মিডফিল্ডার এই ফরাসী। ফ্রান্সকে ১৯৯৮ সালে বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন করিয়েছেন। প্রায় একক নৈপুণ্যে ২০০৬ সালে ফাইনালে নিয়ে গিয়েছিলেন। মাঝমাঠে কারিকুরি তো ছিলই, জিদান কাঁধ আর মাথা ঝাঁকিয়েও খেলতেন অনিন্দ্য সুন্দর ফুটবল। এই পজিশনে অনারেবল মেনশন হিসেবে থাকছেন আলফ্রেডো ডি স্টেফানো এবং মিশেল প্লাতিনি


রাইট সেন্টার মিড – ম্যারাডোনা

বিশ্ব ফুটবলে আর্জেন্টিনা যাদু ছড়িয়ে দিয়েছিলেন যিনি তিনিই ‘দ্য ম্যাজিকাল ম্যারাডোনা।’ সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার তিনি। তাঁর একক নৈপুণ্যে আর্জেন্টিনা জিতেছিল ১৯৮৬ এর বিশ্বকাপ। তাঁর ড্রিবলিং যেন কোন এক কবিতার মত নান্দনিক, ছন্দময়। তিনি খেলা সাজানোর কারিগর। অনায়াসে জায়গা করে নেবেন যেকোন সেরা একাদশে নিঃসন্দেহে। এই পজিশনে অনারেবল মেনশন হিসেবে থাকছেন ইয়োহান ক্রুইফ এবং ববি চার্লটন


রাইট উইং – লিওনেল মেসি

রেকর্ড সাতবার ব্যালন ডি অর জেতা লিওনেল মেসিকে ভাষায় সংজ্ঞায়িত করতে গেলে শব্দের ভাণ্ডারে অভাব দেখা দেবে। ফুটবল ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা ফুটবলার তিনি। বার্সেলোনার হয়ে ক্লাব ফুটবলের সব ট্রফি জিতেছেন। গোলের বন্যায় ভাসিয়েছেন স্প্যানিশ ফুটবলকে। আর্জেন্টিনার হয়েও পূর্ণতা পেয়েছে তার ক্যারিয়ার কোপা আমেরিকা ও বিশ্বকাপ জিতে। এই পজিশনে অনারেবল মেনশন হিসেবে থাকছেন তিন ব্রাজিলিয়ান লেজেন্ড গারিঞ্চা, রিভালদো এবং জ্যারজিনহো


স্ট্রাইকার - পেলে

ফুটবলের রাজা বলা হয় তাকে। ফুটবল বিশেষজ্ঞরা এক বাক্যে স্বীকার করে নেন যে সর্বকালের সেরা ফুটবলার তিনিই। একমাত্র ফুটবলার হিসেবে পেলে জিতেছেন তিনটি বিশ্বকাপ। স্ট্রাইকার পজিশনে অটো চয়েজ তিনি। ব্রাজিলের সর্বোচ্চ গোলস্কোরার পেলে অফিসিয়ালি গোল করেছেন ৭৬০টি। সব মিলিয়ে ১৩৬৩ ম্যাচে ১২৮১ গোল। এই পজিশনে অনারেবল মেনশন হিসেবে থাকছেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি স্ট্রাইকার রোনালদো নাজারিও, রোমারিও এবং হাঙ্গেরিয়ান ফেরেঙ্ক পুসকাস


লেফট উইং – ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো

পাঁচবার ব্যালন ডি অর জেতা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ফুটবল ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা ফুটবলার। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ক্লাব ফুটবলের সব ট্রফি জিতেছেন। গোলের বন্যায় ভাসিয়েছেন গোটা ইউরোপকে রিয়াল মাদ্রিদ এবং ইউসিএল কম্পিটিশনেরই সর্বকালের সেরা ফুটবলার ধরা হয় তাকে। পর্তুগালের হয়েও জিতেছেন ইউরো ও ন্যাশন্স লিগ ট্রফি আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ ম্যাচ এবং সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডও তার দখলে। এই পজিশনে অনারেবল মেনশন হিসেবে থাকছেন জর্জ বেস্ট, রিভেলিনো এবং রোনালদিনহো

 

সর্বকালের সেরা একাদশটি একসাথে সাজালে তাহলে এরকম দাঁড়ায় –

গোলপোস্টে লেভ ইয়াসিন

ডিফেন্সে কাফু, বেকেনবাওয়ার, র‍্যামোস ও মালদিনি

মিডফিল্ডে লোথার ম্যাথিউস, জিনেদিন জিদান ও ম্যারাডোনা

অ্যাটাকিং থার্ডে মেসি, পেলে ও রোনালদো

মতামত

0Comments

আপনার মতামত লিখুন (0)

#buttons=(ঠিক আছে!) #days=(20)

এই ওয়েবসাইটি ব্যবহারে আপনার অভিজ্ঞতাকে আরো উন্নত করার জন্য কুকিজ ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু আমরা কখনই আপনার সম্মতি ছাড়া আপনার কোনো ডাটা সংরক্ষণ করব না। আরো জানুন
Ok, Go it!