গায়ক থেকে নেশাখোর | Singer Nobel

Author
0

 


মাইনুল আহসান নোবেল। বাংলাদেশের গোপালগঞ্জে জন্ম তার। বাবা পেশাগতভাবে ব্যবসায়ী। ছোটবেলা থেকেই নোবেলকে ঢাকা, খুলনা, গোপালগঞ্জের বিভিন্ন স্কুলে ভর্তি করা হয়েছ। এক একটি ক্লাসে এক একটি নতুন স্কুল। শেষে একদিন মারামারি করে স্কুল থেকে টিসি নিয়ে বিদায় নিতে হয় তাঁকে! এরপর পদ্মা পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গ। দার্জিলিং এর কার্শিয়াংএ সেখানে হিমালি বোর্ডিং স্কুলে ক্লাস নাইনে ভর্তি হন নোবেল। ক্লাস নাইনে একাধিকবার পড়া আর পাহাড়ি স্কুল ভালো লাগেনি নোবেলের। শেষে কলকাতার হাজরার একটি স্কুলে তাঁকে ভর্তি করা হয়। আর সেই সময় তাকে গিটারও কিনে দেওয়া হয়। শুরু হয় গানের চর্চা। ২০১৪ সালে কলকাতায় পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে বাংলাদেশে ফিরেই নোবেল জানিয়ে দেন যে তিনি সঙ্গীত চর্চা নিয়েই এগোতে চান। বাধ সাধেন তাঁর বাবা-মা। এদিকে নোবেলেরও জেদ চেপে বসে তাঁর গুরু 'জেমস' হওয়ার লক্ষ্যে। বাড়িতে সাফ জানিয়ে দেন চাকরি তিনি করবেন না। বলেন, 'জেমস না হতে পারি , নোবেল হব।'


পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন



এরপরের খবর সবার জানা। ভারতের জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো ‘সা রে গা মা পা’তে জেমসের ‘বাবা’ গানটি গেয়েই তার এই পরিচিতি। দুই বাংলাতে তার জনপ্রিয়তা যেন আকাশচুম্বী। হঠাৎ নোবেল থেকে হয়ে যায় “নোবেলম্যান” একের পর এক দমকা হাওয়ার মতই দিচ্ছিলো জনপ্রিয় সব গান। কিন্তু দমকা হাওয়া একটা সময় ঠিকই থেমে যায়। জনপ্রিয়তা থেকে যেন চলে আসে সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। প্রচুর দাম্ভিকতা অহংকার নোবেলম্যানকে আছড়ে ফেলে মাটিতে। একের পর এক বিতর্ক তাকে নিয়ে।

 

সম্প্রতি, ২৮ এপ্রিল শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ ২০১৬-এর প্রথম পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার জন্য মাইনুল আহসান নোবেলের সঙ্গে তাদের ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় চুক্তি হয়। নোবেল চুক্তি অনুযায়ী অগ্রিম বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ও নগদ সর্বমোট ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা নিয়েছেন। তবে তিনি অনুষ্ঠানে যাননি। ওই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন বলেও অভিযোগ করা হয়। এই অভিযোগের পরে নোবেলকে গ্রেফতার করে ডিবি।

নোবেলকে গ্রেপ্তারের পর ডিবি কার্যালয় থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তার প্রাক্তন স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ। সেখানে নোবেলের মাদক সম্পৃক্ততা নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি জানান, একজন এয়ার হোস্টেস নোবেলকে মাদক সাপ্লাই দেয়। সালসাবিল বলেন, ‘আমি যখন তার সঙ্গে সংসার করেছি সে খুব ভালো একজন মানুষ ছিল। কোনো একটা কারণে কোনো একটা চক্রের মধ্যে পরে প্রচণ্ড পরিমানে মাদকাষক্ত হয়ে যায়। এরপরে তার ব্যবহারে পরিবর্তন আসে এবং সে অন্যরকম মানুষে পরিণত হয়। এরপর যে ঘটনাগুলো ঘটে, সেটা নেশার ফলশ্রুতিতেই ঘটেছে।’

সালসাবিল আরও বলেন, ‘আমাকে প্রচণ্ড পরিমানে মারধর করা হত, তখন আমি গুলশান থানায় একটা জিডি করেছিলাম। একদিন যখন প্রচণ্ড পরিমানে মারছে তখন আমি ৯৯৯ এ কল দেই। সেখানে ১০ মিনিটের মধ্যে পুলিশ চলে আসে, তখন তারা এসে নোবেলকে ঠেকিয়ে আমাকে বাঁচায়। তখন তারা নোবেলকে জিজ্ঞেস করে- কেন মারছেন। নোবেল তাদেরকে বলে- আমি আসলে অনেক ধরণের জিনিস খাই, আমার মাথা যখন ঠিক থাকেনা আমি তাকে মারি।’

 


‘এরপর ওখান থেকে আমাকে যখন উদ্ধার করা তখন আমি গুলশান থানায় একটা জিডি করি। এরপর আমি আর আইনগতভাবে এগোয়নি। কারণ আমি চাচ্ছিলাম কোনোভাবে সে নেশাটা থেকে বের হয়ে আসুক একটা সুস্থ জীবন যাপন করুক। আমার উদ্দেশ্য তাকে শাস্তি দেয়া ছিল না, আমার উদ্দেশ্য ছিল সে যেন ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারে।’ – সালসাবিলের বক্তব্য। নোবেলের সঙ্গে যুক্ত মাদক চক্র ও নারী সম্পৃক্ততা নিয়ে সালসাবিল বলেন, ‘মেয়ের সম্পৃক্ততা আমি কখনও দেখিনি তাকে। কিন্তু তাদের চক্রে একটা এয়ার হোস্টেজ চক্র কাজ করে, যেখান থেকে একজন তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে এবং তাকে যত ধরণের মাদক সে তাকে সাপ্লাই দেয়।’

এদিকে নোবেলের বিরুদ্ধে কোনো মামলা না করলেও ডিবিতে মৌখিক অভিযোগ করেছেন বলেও জানান সালসাবিল।

মতামত

0Comments

আপনার মতামত লিখুন (0)

#buttons=(ঠিক আছে!) #days=(20)

এই ওয়েবসাইটি ব্যবহারে আপনার অভিজ্ঞতাকে আরো উন্নত করার জন্য কুকিজ ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু আমরা কখনই আপনার সম্মতি ছাড়া আপনার কোনো ডাটা সংরক্ষণ করব না। আরো জানুন
Ok, Go it!