সেমিস্টার ফাইনাল চলছে। এই মাত্র আপনি ম্যাথ এক্সাম দিয়ে বের হয়েছেন। অ্যান্সার মেলানোর সময় জানতে পারলেন আপনার দুটো ভুল হয়েছে। ক্যালকুলেটরে ঝামেলা থাকায় ৮ কে মনে করেছেন ৬। অ্যান্সার শিটে তাই ৮৩৮ কে লিখে এসেছেন ৬৩৬। আরেক জায়গায় সঠিক উত্তর জানার পরেও তাড়াহুড়ায় ভুলটা লিখে এসেছেন। এখন কথা হচ্ছে, এর মধ্যে আসলে মিস্টেক কোনটা আর এরর কোনটা?
এরমধ্যে প্রথম অর্থাৎ ক্যালকুলেটরের ঝামেলাটি হচ্ছে এরর। অন্যদিকে সঠিক উত্তর জেনেও ভুল লিখে আসা হচ্ছে মিস্টেক। এরর ও মিসটেকের মধ্যে মূল পার্থক্য হচ্ছে নলেজ কিংবা জ্ঞান। কোনো ব্যাপারে প্রপার আইডিয়া থাকার পরেও মনোযোগের ঘাটতি অথবা অন্য কোন কারণে যদি ভুল করেন তাহলে সেটা হচ্ছে মিস্টেক। অন্যদিকে কোনো ব্যাপারে আইডিয়াই যদি না থাকে এবং সেই কাজে যদি ভুল হয়, তাহলে সেটা এরর। কোনো স্ট্রাকচারের মধ্যে ভুল করাই এরর। অর্থাৎ যে কোনো ধরণের সিস্টেম, কোড অথবা জ্ঞানের ডেভিয়েশনই হচ্ছে এরর।
ধরুন আপনি অ্যামেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনকে
নিয়ে একটি নন-ফিকশন বই লিখছেন। সেখানে টাইপিং মিস্টেকের কারণে একটি লাইনে ‘আনরিয়াল
বিল’ হয়ে গেছে ‘আরিয়াল বিল’। বিল ক্লিনটনের অবিশ্বাস্য কোনো দিক বর্ণনা করতে গিয়ে
সেটি হয়ে গেছে মুন্সিগঞ্জ জেলার আরিয়াল বিল! আপনি জানতেও পারলেন না। এটা এররের
একটি পারফেক্ট এক্সাম্পল।
আবার ধরুন আপনি একটি আর্টিকেল লিখছেন। বেশি স্মার্ট সাজতে
গিয়ে আপনি এমন একটি ইউনিক শব্দ লিখলেন, যার অর্থ আপনি ভুল জানেন! যেমন ধরুন
‘ইউবিকুইটাস’, যার আসল অর্থ হচ্ছে রেয়ার অথবা আনকমন। কিন্তু আপনি ভেবেছেন কোন
কিছুর ব্যাপকতা অথবা বিস্তৃতি বোঝানোর জন্য এই শব্দ ব্যবহার করা হয়। ইন দিস কেইস,
দিস ইজ আ মিসটেক। অর্থাৎ, মিসটেক এবং এররের মধ্যে পার্থক্যটা গড়ে দেয় আসলে আমাদের
জ্ঞান এবং বুঝতে পারার ক্ষমতা।
জগদ্বিখ্যাত দার্শনিক অ্যারিস্টটলসহ আরো বেশ কয়েকজন গ্রিক
ও চাইনিজ দার্শনিক সর্বপ্রথম ফিলোসফিকাল অ্যাঙ্গেল থেকে মিস্টেক সম্পর্কে ধারণা
দেন। তবে মিস্টেক এবং এররের মধ্যে ছোটখাটো এই পার্থক্য বের করার ক্ষেত্রে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বিএফ স্কিনার এবং জন পিয়াজের মতো সাইকোলজিস্টরা। উনাদের
উত্তরসূরী সাইকোলজিস্ট এবং রিসার্চাররা এই ব্যাপারে ধারণাগুলোকে আরো পাকাপোক্ত
করেন।