চিন বানিয়ে ফেলেছে কৃত্রিম চাঁদ! | China builds artificial moon on Earth | How it works? | Mini Moon

Author
0

 


মহাকাশে লুকিয়ে আছে সৃষ্টির রহস্য! সেই রহস্যের সন্ধানে বিজ্ঞানীরা দিন-রাত এক করে নতুন নতুন গবষণায় ব্যস্ত। যেমন, চীনের মহাকাশ বিজ্ঞানীরা কয়েক বছর আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন, তারা কৃত্রিম চাঁদ তৈরির প্রকল্পে হাত দিয়েছেন এবং সেই চাঁদ স্থাপন করা হবে মহাকাশে। যা অমাবস্যাতেও আলোকিত করে রাখবে পৃথিবীকে।

আমরা কম বেশি সবাই জানি যে, চীনারা কপি করায় ওস্তাদ। তারা এমন এমন সব জিনিস আবিষ্কার করে ফেলে, যা অন্যরা কল্পনাও করতে পারে না। এবার চাঁদ বানানোর শেষ প্রান্তে তারা। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিচুয়ান প্রদেশের রাজধানী 'চেংডু' শহরে মানবসৃষ্ট চাঁদটি স্থাপন করা হবে শিগগিরই।

২০১৮ সালের নিউজ মিডিয়াগুলো এমনই সব তথ্য প্রকাশ করতে থাকে। সেসময় এক সাক্ষাৎকারে চেংডুর 'তিয়ান ফু নিউ এরিয়া সায়েন্স সোসাইটি'র প্রধান 'চুনফেং' বলেন, "সিচুয়ান প্রদেশের রাজধানী চেংডুতে একটি কক্ষপথে চাঁদটি বসানো হবে। সিচুয়ানের জিচ্যাং স্যাটেলাইট লঞ্চ সেন্টার থেকে চাঁদটি কক্ষপথে বসানো হবে ২০২০ সালের মধ্যে।" সেখানে আরো জানা যায়, প্রথম কার্যক্রমটি সফলভাবে সম্পন্ন হলে আরো তিনটি কৃত্রিম চাঁদ বসাবে দেশটি।

 

পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন



চীনের বিজ্ঞানীদের এই কার্যক্রম বিশ্বে প্রথম। এর আগে কোথাও এমন গবেষণা হয়নি। চীনের তৈরি  কৃত্রিম ওই চাঁদ আসল চাঁদের মতোই সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে রাতের পৃথিবীকে আলোকিত করবে। ওই চাঁদটি মূলত একটি স্যাটেলাইট হিসেবে কাজ করবে। বিজ্ঞানীদের মতে সাধারণ মানুষের চোখে আসল চাঁদের চেয়ে নকল চাঁদ হবে আটগুণ বেশি উজ্জ্বল।

নকল চাঁদটি পৃথিবীর ৫০০ কিলোমিটার দূর থেকে পৃথিবীর চারপাশে ঘুরবে। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনও পৃথিবী থেকে প্রায় একই দূরত্বে অবস্থান করছে। তবে, পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদ আছে পৃথিবী থেকে তিন লাখ ৮০ হাজার কিলোমিটার ওপরে। কৃত্রিম চাঁদটি ১০ থেকে ৮০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সূর্যের আলোকে প্রতিফলিত করবে।

 

অবশেষে কৃত্রিম চাঁদ বানিয়ে যেন কল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিলো চীন। সেটি বানানো হয়েছে, জিয়াংশু প্রদেশের পূর্ব দিকে, "শুঝাউ" শহরে। বলা যায় এই কৃত্রিম চাঁদ পৃথিবীর মধ্যাকর্ষন শক্তিকে মুছে দেবে। তখন পৃথিবীতেই ভরশূন্য অবস্থায় ভেসে থাকতে পারবে সকলে। এদিকে ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’ জানিয়েছে, এই অসাধ্যসাধন সম্ভব হয়েছে এই প্রকল্পের কর্ণধার, ‘চায়না ইউনিভার্সিটি অব মাইনিং অ্যান্ড টেকনোলজি’-র অধ্যাপক "লি রুইলিন" এর জন্য। বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, কৃত্রিম এই চাঁদের পৃষ্ঠ হবে হুবহু আসল চাঁদের মতোই। চাঁদের মাটিতে যতটুকু অভিকর্ষ থাকে, ততটুকুই থাকবে সেখানে। অর্থাৎ, সেখানে পৌঁছলে মানুষ ভাবতে বাধ্য হবে, সে মহাকাশ যাত্রা করে দূর আকাশের চাঁদেই পৌঁছে গেছে।

এখন আপনি যদি ভেবে থাকেন, চট করে চাঁদে গিয়ে একটা ট্যুর দিয়ে আসবেন, তাহলে সেই ভাবনা মুছে ফেলুন। নকল এই চাঁদ মোটেও সাধারণের বিনোদনের জন্য তৈরি কোনো ট্যুরিস্ট স্পট নয়। এভাবে পৃথিবীর মাটিতে চাঁদের পরিবেশ তৈরি করার ভাবনা শুধুমাত্র মহাকাশ বিজ্ঞানীদের গবেষণাকে আরো এগিয়ে নেওয়ার জন্যে। জানা গেছে, এরপর থেকে চীনের চন্দ্র অভিযান প্রকল্পের মহাকাশচারীদের এই নকল চাঁদে নিয়ে গিয়েই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

অধ্যাপক "লি রুইলিন" জানান, এই কৃত্রিম চাঁদে গিয়ে সেখানে দীর্ঘ দিন থাকতে পারবেন মহাকাশচারীরা। গবেষণা ও অন্যান্য কাজে, তখন পৃথিবী থেকেই করা সম্ভব হবে। উপগ্রহ, ল্যান্ডার, রোভার এসব পাঠিয়ে আর আসল চাঁদের ‘মন’ বোঝার চেষ্টায় ঘাম ঝরাতে হবে না। সামান্য মাধ্যাকর্ষণের অভিজ্ঞতা বিমানেও হয়, হয় ড্রপ টাওয়ারেও। কিন্তু তা খুবই অল্প সময়ের জন্য। চীনের বানানো চাঁদে ভরশূন্য অবস্থায় থাকা যাবে যতক্ষণ ইচ্ছে। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, কৃত্রিম চাঁদেও খুব সামান্য হলেও মাধ্যাকর্ষণের টান আছে। সেটা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের ছয় ভাগের মাত্র এক ভাগ। যাকে প্রায় ভরশূন্য অবস্থাই বলা যায়।

 


চীনের বানানো কৃত্রিম চাঁদের ব্যাস অবশ্য আসল চাঁদের মতো নয়। অনেকটাই কম। তবে এর পিঠ ভরিয়ে দেওয়া থাকবে আসল চাঁদের পাথর আর ধুলোবালি দিয়ে। যার ভার খুবই হালকা।

আগামী দশক'এই চাঁদে মহাকাশচারী পাঠাবে চীন। চাঁদের কক্ষপথে পাঠানো হবে স্থায়ী মহাকাশ স্টেশন। যেখান থেকে প্রয়োজনে চাঁদে নামতে পারবেন নভোচারীরা। এ ছাড়াও পৃথিবীর কক্ষপথে আলাদাভাবে একটি মহাকাশ স্টেশন এরই মধ্যে বানিয়ে ফেলেছে‌ তারা।

মতামত

0Comments

আপনার মতামত লিখুন (0)

#buttons=(ঠিক আছে!) #days=(20)

এই ওয়েবসাইটি ব্যবহারে আপনার অভিজ্ঞতাকে আরো উন্নত করার জন্য কুকিজ ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু আমরা কখনই আপনার সম্মতি ছাড়া আপনার কোনো ডাটা সংরক্ষণ করব না। আরো জানুন
Ok, Go it!