বরাবরই তারাকারা
প্রেম-বিয়ের খবর গোপন রাখার চেষ্টা করেন। তবে কারণ কি?
ঢালিউডের সবচাইতে আলোচিত গোপন প্রেম-বিয়ের কথা উঠিলেই সামনে চলে আসে শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসের নাম। আট বছরের বেশি সময় ধরে গোপনে সংসার চালিয়ে যাওয়া এই দুই নায়ক-নায়িকা সন্তান জন্মের পরও নিজেদের সংসারের কথা গোপন রেখেছিলেন। এরপর হঠাৎ করে ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সন্তানসহ হাজির হন অপু বিশ্বাস। সরাসরি সম্প্রচারিত সেই অনুষ্ঠানে অপু বিশ্বাস জানান, ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল শাকিবের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয় আর ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ভারতের কলকাতার একটি হাসপাতালে তাঁদের ছেলে “জয়”-এর জন্ম হয়। যদিও এর আগে অপু বিশ্বাসকে যতবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, শাকিবের সঙ্গে তাঁর বিয়ের কথা ততবারই তিনি হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
শাকিব খানের বিয়ের খবর প্রকাশের আগে ঢালিউডের আরেকজন নায়ক ইমন। তিনিও তাঁর বিয়ের খবর গোপন রেখেছিলেন। শুধু তা-ই নয়, ইমন তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দিব্যি সংসার করলেও বিয়ের ব্যাপার নিয়ে মুখ খোলেননি। ইমন ভেবেছিলেন, তার বিয়ের খবর যদি প্রকাশ পায়, তাহলে ভক্তরা তাঁর ছবি দেখতে ততটা আগ্রহী হবে না। তবে একপর্যায়ে নিজের বিয়ে আর দুই সন্তানের কথা সংবাদমাধ্যমের কাছে স্বীকার করতে বাধ্য হন এই নায়ক।
দুই যুগের বেশি সময় বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগৎ দাপিয়ে বেড়ানো জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূরের প্রেম-বিয়ে নিয়েও অনেক লুকোচুরি হয়েছে। তাঁকে নিয়ে ছড়িয়েছে অনেক গুজবও। সালমান শাহর সঙ্গে এই নায়িকার প্রেমের কথা চলচ্চিত্রের সবাই জানলেও সংবাদমাধ্যমে শাবনূর বরাবরই বলেছেন, তাঁরা দুজন ভাইবোনের মতো। ছোট কোনো বোন না থাকার কারণে শাবনূরকে নিজের বোন মনে করে আদর করেই ‘পিচ্চি’ বলে ডাকতো সালমান। সালমান শাহর পর ছড়িয়েছিলো শাবনূর আর রিয়াজের প্রেমের খবর।
চলচ্চিত্রে কাজ
করার একপর্যায়ে শাবনূর অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ঘন ঘন যাওয়া-আসা শুরু করেন।
২০১৩ সালে হঠাৎ
শোনা যায় তিনি বিয়ে করে ফেলেছেন। ঢালিউডের দাপুটে এই নায়িকার বিয়ের তারিখ নিয়েও বিভ্রান্তি
শুরু হয় সকলের মাঝে। শাবনূর বলেন ৬ ডিসেম্বর, আর তাঁর বর অনীক মাহমুদ বলেন ২৮ ডিসেম্বর।
শাবনূর বলেন ২০১১, তাঁর বর বলছেন ২০১২।
এর আগে আরও দুজনের
সঙ্গে শাবনূরের বিয়ের খবর শোনা যায়, তবে এসব বিষয়ে শাবনূর আজ পর্যন্তও কিছু স্বীকার
করেননি।
আরেকটু পেছন ফিরে তাকালে দেখা যাবে, জনপ্রিয় জুটি ওমর সানী ও মৌসুমীর প্রেমও ছিলো গোপনে। চারিদিকে প্রেমের গুঞ্জন ছড়াতে ছড়াতে হঠাৎ ঢাকার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে নিজেদের বিয়ের কথা সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করেন তাঁরা।
জাকিয়া বারী মম।
নির্মাতা এজাজ মুন্নার সঙ্গে বিচ্ছেদের বেশ কিছুদিন পর আরেক নির্মাতা শিহাব শাহীনের
সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক জড়ান মম। এর কিছুদিন পর থেকে তাদের বিয়ের কথা নিয়ে কানাঘুষা
হতে শুরু করে। তবে সেটা তারা কেউই স্বীকার করেননি। সেই বিয়ের খবর সকলের সামনে আসে ৪
বছর পর।
৯০ দশকের পর চলচ্চিত্রের নায়ক-নায়িকারা ক্যারিয়ারের জন্য নিজেদের প্রেম বিয়ের কথা গোপন রাখতেন। অথচ ৬০এর দশকের তারকারা বিয়ে করার পরও পর্দায় তাদের জনপ্রিয়তা একদমই কমেনি। কিংবদন্তি নায়ক রাজ্জাক ও নায়িকা কবরী তাদের অভিনয় জীবন শুরু করেন বিবাহিত হয়েই। এছাড়াও বুলবুল আহমেদ, সোহেল রানা, ফারুক, জাফর ইকবাল, জসীম, ইলিয়াস কাঞ্চন এরাও বিয়ের পরও চলচ্চিত্র জগতে টিকে ছিলেন শুধু পর্দায় তাদের অভিনয় দিয়ে। চলচ্চিত্রের মানুষের কাছে তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন কোনোভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি।