পোলার ভর্টেক্স কি? || Polar Vortex - How it's formed & When it is dangerous

Author
0


এবছরের ফেব্রুয়ারিতে অ্যামেরিকার ওশিয়ানিক অ্যান্ড অ্যাটমসফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন একটি ওয়ার্নিং দিয়েছিলো। নর্থ পোলের হাইয়েস্ট অ্যাটমসফিয়ারের তাপমাত্রা হঠাৎ বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছিল। যার কারণে এ বছরের শেষ দিকে নর্থ পোলের এক্সট্রিম ঠান্ডা কোল্ড ওয়েভের রুপ নিয়ে ইউএস-কানাডা হয়ে ইউরোপ পর্যন্ত চলে আসবে। ধারণা করা হচ্ছে, ইতিহাসের সবথেকে ভয়ানক কোল্ড ওয়েভ হবে এটি।

এর আগে ২০১৯ এর জানুয়ারিতে অ্যামেরিকা গত ২৭ বছরের মধ্যে সবথেকে ভয়ংকর কোল্ড ওয়েব দেখেছিল। যার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেবার ইউএসের ২৭ টা স্টেটস পুরোপুরি বরফে ঢেকে গিয়েছিলো। ইউএসের সবথেকে গরম স্টেট টেক্সাস, যেখানে সাধারণত তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি এর নিচে নামেই না। সেখানেও তখন তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল মাইনাস ১৮ ডিগ্রিতে! মাত্র দুইদিনের কোল্ড ওয়েভে মারা গিয়েছিলো প্রায় ২২ জন মানুষ! ইউএস সরকারের টোটাল লস হয়েছিলো প্রায় সাড়ে নয়শো মিলিয়ন ডলার। এবার ভেবে দেখেন, এই বছরের কোল্ড ওয়েভ তাহলে কতটা মারাত্মক হতে যাচ্ছে?

এবার কথা হচ্ছে, ভয়ানক এই প্রাকৃতিক দুর্যোগটা হচ্ছে কেন? একেবারে সহজ ভাষায় যদি বলি, পৃথিবীর সাউথ পোল এবং নর্থ পোল দুই এরিয়াতেই সব সময় ঠান্ডা বাতাসের টর্নেডো বইতে থাকে। যার গতি প্রতি ঘণ্টায় ৪০০ কিলোমিটার। এই টর্নেডোকেই বলা হয় পোলার ভর্টেক্স। যা সমগ্র পৃথিবীর আবহাওয়াকেই প্রভাবিত করে। যার কারণেই নর্থ আলাস্কা, কানাডার বিভিন্ন দ্বীপ, Yakutsk, সাইবেরিয়াসহ রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে ১২ মাসই এক্সট্রিম ঠান্ডা থাকে।

অন্যদিকে, যে বাতাসের মাধ্যমে পোলার ভর্টেক্স পৃথিবীর আবহাওয়াকে প্রভাবিত করে তার নাম পোলার জেট স্ট্রিমস। এই জেট স্ট্রিমস অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস। এটি শুধুই পোলার ভর্টেক্সের কোন এক্সটেনশন না। এটি মূলত ডেঞ্জারাস এই পোলার ভর্টেক্সের হাত থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করার জন্য অনেকটা গার্ডের মতো আচরণ করে। এই স্ট্রিম পোলার ভর্টেক্সকে পোলের মধ্যেই আটকে রাখে। কিন্তু মাঝেমধ্যে এটি এতটাই স্ট্রং হয়ে যায় অথবা জেট স্ট্রিম দুর্বল হয়ে যায় যে, পোলার ভর্টেক্স আর পোলের মধ্যে আটকে থাকে না। তখন আর্কটিক রিজিয়নের সেই ঠান্ডা বাতাস নিচের দিকে তেড়ে আসতে থাকে। যাকে বলা হয় কোল্ড ওয়েভ।

ভিডিওর শুরুতেই যে পোলার ভর্টেক্স লিক হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে বললাম, তা সাধারণত এক দশকে মাত্র ২-৩ বার হয়। কিন্তু রিসেন্ট রিসার্চে দেখা গেছে, গত ৩-৪ দশক ধরে এর পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে। এর জন্যে দায়ী মূলত গ্লোবাল ওয়ার্মিং। গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর কারণে আর্কটিক রিজিয়নের বরফ গলে তাপমাত্রা দিন দিন কমছে। এর ফলে আর্কটিক এরিয়া ও জেট স্ট্রিমের মধ্যে তাপমাত্রার পার্থক্য মাঝেমধ্যেই কমে যায়। এবং এর ফলে পোলার ভর্টেক্স লিক হয়ে ইউএস, কানাডা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের উপরে আঘাত করে। এই অবস্থা চলতে থাকলে হয়তো এক সময় গিয়ে ম্যাস ডেস্ট্রাকট্রিভ ইভেন্ট ঘটতে পারে পৃথিবীর প্রাণীকুলের উপরে। অনেকটা দ্য ডে আফটার টুমরো ও স্নোপিয়ার্চার সিনেমার মতো।

মতামত

0Comments

আপনার মতামত লিখুন (0)

#buttons=(ঠিক আছে!) #days=(20)

এই ওয়েবসাইটি ব্যবহারে আপনার অভিজ্ঞতাকে আরো উন্নত করার জন্য কুকিজ ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু আমরা কখনই আপনার সম্মতি ছাড়া আপনার কোনো ডাটা সংরক্ষণ করব না। আরো জানুন
Ok, Go it!