কখনো কি খেয়াল করেছেন, ইলেকশনের পোস্টারগুলো যে সাদা-কালো হয়? এর কারণটাই বা কি?
নির্বাচনের পোস্টার আগে রঙিনও হতো। মোট কথা যার যেমন ইচ্ছা
তেমন করতে পারতো। দেশীয় পলিটিক্সে বিশৃঙ্খলা তৈরি হলে ২০০৭ সালের ১২ই জানুয়ারী
প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন আহমেদ দেশে জরুরি অবস্থা ডিক্লেয়ার করে। এরপর মিলিটারি
বেইজড একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার তৈরি হয়। সেই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে
দায়িত্বে আসেন ফখরুদ্দিন আহমেদ। তিনি দায়িত্ব এসেই এমন কিছু কাজ করেছিলেন, যা
তোলপাড় লাগিয়ে দিয়েছিল দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে।
যাই হোক, তার শাসনামলেই পোস্টার সাদা-কালো করার নিয়ম শুরু
হয়। রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর ৭ নম্বর নিয়মে বলা হয়, কোন
প্রার্থীর নির্বাচনি প্রচারণায় ব্যবহার হতে যাওয়া পোস্টার সাদা-কালো হতে হবে। এবং
এর আয়তন ৬০ সেন্টিমিটার ইন্টু ৪৫ সেন্টিমিটার হতে হবে। একইভাবে ব্যানারও সাদা-কালো
হতে হবে। ব্যানারের আয়তন ৩ মিটার ইন্টু ১ মিটারের বেশি হওয়া যাবে না।
হুট করে এই সাদা-কালো নিয়ম জারি করার কারণ কি? এর পেছনে
উদ্দেশ্য ছিল মূলত বৈষম্য দূর করা বা সমতা রক্ষা করা। সব ক্যান্ডিডেটের
ফিনান্সিয়াল কন্ডিশন সেইম থাকে না। প্রচারণার জন্য কারো কারো ফান্ড থাকে অনেক।
আবার কারো কারো থাকে কম। এজন্য নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে কোন ক্যান্ডিডেট যেন
বৈষম্যের স্বীকার না হয়, সেজন্যেই নির্বাচনী পোস্টার সাদা-কালো করার নিয়ম ঠিক করা
হয়। একই উদ্দেশ্যে নির্বাচনী প্রচারণার বাজেটও বেঁধে দেওয়া হয়। মোট কথা,
ক্যান্ডিডেটদের একটি ফেয়ার গেইম খেলার সুযোগ করে দেওয়া হয়।
আরো বেশ কিছু রুলস করা হয়। যেমন - পোস্টার অথবা ব্যানারে
ক্যান্ডিডেট তার নিজের ছবি এবং সিম্বল ছাড়া অন্য কারো ছবি অথবা সিম্বল দিতে পারবে
না। তবে তিনি যদি কোন রেজিস্টার্ড পলিটিকাল পার্টির নমিনেটেড ক্যান্ডিডেট হন,
তাহলে কেবল সেই দলের বর্তমান প্রধানের ছবি পোস্টার বা ব্যানারে ছাপাতে পারবেন।
এছাড়াও সেই ছবি অবশ্যই সাধারণ এবং ডিসেন্ট কোন ছবি হতে
হবে। কোন অনুষ্ঠান বা মিছিলে ভাষণ অথবা লিড দেওয়া অবস্থার কোন ক্যান্ডিড ছবি দেওয়া
যাবে না। এছাড়াও আরো বেশ কিছু রুলস আছে। কোন ক্যান্ডিডেট বা তার সহযোগী কেউ যদি এর
মধ্যে কোন নিয়ম ভঙ্গ করে তাহলে শাস্তি হিসেবে তার ৬ মাসের জেল এবং ৫০ হাজার টাকা
জরিমানাও হতে পারে!