বর্তমান দুনিয়ায় হোমোসেক্সুয়ালিটি একটি বহুল আলোচিত টপিক। কোনো গে কিংবা লেসবিয়ান কাপলের ইউরোপের কোন দেশে থাকা ও পাকিস্তানে থাকার মধ্যে ডিফারেন্স আছে। সেই ডিফারেন্স নিয়েই কথা বলবো আজকে। চলুন পাপ এবং অপরাধের মধ্যে পার্থক্য জেনে নেওয়া যাক।
সেই গে কিংবা লেসবিয়ান কাপল যদি ইউরোপের কোথাও থাকে, তাহলে
সেক্ষেত্রে তারা খ্রিষ্টান ধর্ম অনুযায়ী পাপ করছে, কিন্তু সেই দেশের আইন অনুযায়ী
তারা কোন অপরাধ করে নি। তবে সেই একই কাপল যদি পাকিস্তানে আসে, তাহলে ইসলাম ধর্ম
অনুযায়ী তারা পাপও করছে, আবার পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী অপরাধও করছে।
মোট কথা, নিজ নিজ ধর্মে যেসব কাজ করতে নিষেধ করা হয়েছে,
সেগুলো হচ্ছে পাপ। যেমন ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী গান-বাজনা করা, নামাজ-কালাম না পড়া,
মিথ্যা কথা বলা, শুকরের মাংস খাওয়া হচ্ছে পাপ কাজ। কিন্তু এগুলোর কোনটাই আমাদের
দেশের পার্সপেক্টিভে অপরাধ না। আবার খ্রিষ্টান ধর্মে ছাগল খাওয়া নিষেধ। কিন্তু এটিও
ওয়েস্টার্ন দেশগুলোতে কোন অপরাধ না। হিন্দু ধর্মে গরু খাওয়া নিষেধ। বাংলাদেশ কিংবা
ভারতে এটিও কোন অপরাধ না। যদিও ভারতে মাঝে-মধ্যেই এ নিয়ে দাঙ্গা লাগিয়ে দেয়
এক্সট্রিমিস্ট হিন্দুরা।
অপরাধ হচ্ছে সেই সব কাজ যা একটি দেশের সংবিধান ও আইন ভঙ্গ
করে। যেমন, খুন, ছিনতাই, ডাকাতি, ট্রেসপাসিং। এগুলো যে কোনো দেশের পার্সপেক্টিভেই
শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আবার যে কোনো ধর্ম অনুযায়ী পাপ কাজও।
পাপ এবং অপরাধের মেইন ডিফারেন্স এর কন্সেপ্টেই লুকিয়ে আছে।
পাপ একটি ধর্মীয় কনসেপ্ট, অন্যদিকে অপরাধ একটি লিগাল কনসেপ্ট। অপরাধের শাস্তি
মানুষ পৃথিবীতেই ভোগ করে। সেজন্য রয়েছে আইন, আদালত ও জেল। অন্যদিকে, ধার্মিক
মানুষজন বিশ্বাস করে মানুষ পাপের শাস্তি পাবে মৃত্যুর পরে। সেটা নির্ভর করছে
সৃষ্টকর্তার উপরে। সেজন্য রয়েছে জাহান্নাম অথবা হেল।
পাপ এবং অপরাধের মধ্যে আরেকটি পার্থক্য আছে। সৃষ্টিকর্তা চাইলে বেশিরভাগ পাপ কাজ ক্ষমা করে দিতে পারে। কিন্তু লিগ্যাল সিস্টেমে অপরাধের কোন ক্ষমা নেই। প্যারোল, প্রোবেশন পিরিয়ড অথবা রিহ্যাবের মতো ব্যবস্থা আছে ঠিকই, কিন্তু আদালতে শাস্তি যা ঠিক করা হয় সেটা অপরাধীকে পেতেই হয়।