আপনি কী এরিয়া ফিফটি ওয়ান এর নাম শুনেছেন কখনো? শুনে থাকলেও সেখানে আসলে কী হয় তা সম্পর্কে কীছু জানেন? সম্ভবত না। আসলে এরিয়া ফিফটি ওয়ানের সাথে কানেক্টেড মানুষজন ছাড়া আর কেউই জানেনা কী হচ্ছে ওখানে। চলুন জেনে নেওয়া যায় ঠিক কেনো এরিয়া ফিফটি ওয়ান এতোটা সিক্রেট প্লেস।
পুরো লেখাটি পড়তে না চাইলে ভিডিওটি দেখুন
আমেরিকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন এবং সরক্ষিত গোপন জায়গাগুলো হলো পেন্টাগন, হোয়াইট হাউস, নাসার সদর দপ্তর। দেশের বিভিন্ন লঞ্চ প্যাডও একরকম সংরক্ষিত গোপন জায়গা বলা যায়। কিন্তু এই সবগুলো জায়গাতেই অনুমতি সাপেক্ষে মানুষ ঢুকে ঘুড়ে আসতে পারে। এবং এই এলাকাগুলোতে আসলে কী হচ্ছে বা কি কারনে সংরক্ষিত সেটা কমবেশি প্রায় সবাই জানে।
আমেরিকার নেভাডা স্টেটের দক্ষিনে, লাস ভেগাস থেকে ১৫০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে পাহাড়ঘেড়া মরুভুমির মধ্যে আছে নেভাদা টেস্ট এন্ড ট্রেইনিং রেঞ্জ। আধুনিক মারণাস্ত্রের সবচেয়ে বড় পরীক্ষাগার। ২৯ লাখ একর জুড়ে থাকা এই রেঞ্জে আমেরিকা নাকি ৫০০টিরও বেশি পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেভ বলে জানা যায়।
নেভাদার এই পাহাড় ঘেরা টেস্ট এন্ড ট্রেইনিং রেঞ্জের ভেতরেই আছে পৃথিবীর সবচে গোপন এবং সবচে রহস্যময় এলাকা এরিয়া ফিফটি ওয়ান। বহু যুগ ধরে আমেরিকা বলে আসছে যে এরিয়া ফিফটি ওয়ান হলো আমেরিকার সবচে সিক্রেট ও প্রটেক্টেড বিমান ঘাঁটি। কিন্তু একটা বিমান ঘাটির জন্য এতো সিকিউরিটি কেনো? পৃথিবির আরো অনেক দেশেই সুসজ্জিত মারকুটে বিমান ঘাঁটি আছে, কই তাদেরতো এতো সিকিউরিটির আদিখ্যেতা নেই। সিকিউরিটি আছে কিন্তু সেখানে আসলে কী হচ্ছে সেই নিয়ে এতো লুকোচুড়ি নেই।
তবে কি সত্যিই এরিয়া ফিফটি ওয়ান কেবলই একটা বিমান ঘাঁটি নাকি এর
পেছনে লুকিয়ে আছে অন্য কোন রহস্য। আসলে এই জায়গা ঘিরে কেনো মার্কিন সেনাদের এতো অস্বাভাবিক মাত্রার
সুরক্ষা ব্যবস্থা?
এই সবগুলো প্রশ্নই সবার মনে ঘুরপাক খায় বহু বছর ধরে।
তাহলে এবার জেনে নেই এরিয়া ফিফটি ওয়ানের সিকিউরিটি কেমন। এরিয়া ফিফটি ওয়ানের চারপাশে কোন বাউন্ডারি দেওয়া না
থাকলেও পুরো এলাকায় ক্যামোফ্লেজে ঘুড়ছে হাজার হাজার সৈনিক। গিরগিটির মতো নিজেকে পরিবেশের সাথে একদম মিশিয়ে বসে আছে শিকারির মতো। খালি চোখে তাদের খুঁজে বের করা অসম্ভব। নিষেরধ
অমান্য করে কেউ যদি ভুল করেও এই এলাকায় ঢুকে পরে তাহলে তাদের একদমই ধমকে বের করে দিবে না। চোখের পলকে সৈন্যদের গুলি খেয়ে স্পট ডেড হয়ে যেতে হবে। কারন এই
এরিয়া ফিফটি ওয়ানের প্রতিটা সৈন্যকে দেওয়া আছে শ্যুট এট ফার্স্ট সাইটের
অর্ডার।
এরিয়া ৫১ এর চারপাশে
একটি নোটিশ লাগানো আছে, যেখানে লেখা- ‘ইউজ অব ডেডলি ফোর্স
অথোরাইজড’। সেনারা ছাড়াও সবার অলক্ষ্যে সেখানে হাজার
হাজার মোবাইল সিসি ক্যামেরা, মোশন ডিটেকটর, লেসার ডিটেকটর, সাউন্ড ডিটেকটর, গন্ধ শোঁকার ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোনও স্থানটির সুরক্ষায় আছে।
আরো অবাক করা বিষয় হলো এরিয়া ফিফটি ওয়ানের ওপর দিয়ে বিমান ওড়ারও অনুমতি নেই। বিমান চললে সেই বিমানও বোমা মেরে ফেলে দেওয়ার অনুমতি তাদের আছে। এই স্থানের উপরের আকাশেও কড়া নজরদারি চালানো হয়, এজন্য ১৫৫ মাইল উত্তরে ৯ হাজার ৪০০ ফুট উঁচু বেলডে পাহাড়ের চূড়ায় বসানো আছে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী এয়ার রুট সার্ভেল্যান্স রাডার।
এতো সুরক্ষায় কী হচ্ছে তাহলে ওখানে? অনেক রিসার্চার ও বিজ্ঞানিদের মতে সেখানে দুটি ব্যপারে গবেষণার সম্ভবনা আছে। একটা হয়তো সেখানে রোবটিক্সের খুব এডভান্স লেভেলের রিসার্চ চলছে। নইলে সেখানে একদম কনফার্ম এলিয়েনদের সাথে যোগাযোগ এর কোন ব্যবস্থার কাজ চলছে। অনেকেই আবার আরো একটু এগিয়ে বলছে এরিয়া ফিফটি ওয়ানে এলিয়েনশিপের অবাধ যাতায়াত আছে যার কারনে এখানের আকাশ পথও একরকম সিল করাই বলা যায়, যেখানে কোন সাধারণ যাত্রী বাহী বিমানেরও কোন এক্সেস নেই।
এলিয়েন থিউরির পক্ষে আবার আরেক প্রমান মেলে, এরিয়া ফিফটি ওয়ানের পাশেই আছে এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল হাইওয়ে। সেখান থেকে নাকি অনেকেই বিভিন্ন ধরনের অদ্ভুত আকাশযানের উঠা নামা দেখতে পেয়েছে। যেই আকাশযানের কোন মিল পৃথিবির কোন বিমানের নেই।
অনেকের মতে আবার এখানে ভীন গ্রহের এলিয়েনদের আটকে রেখে বিভিন্ন পরীক্ষা নীরিক্ষা চালানো হয়।